মাহেশের রথে আমার অভিজ্ঞতা
Answers
Answer:
মাহেশের রথযাত্রা ভারতের দ্বিতীয় প্রাচীনতম এবং বাংলার প্রাচীনতম রথযাত্রা উৎসব। এই উৎসব ১৩৯৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে পশ্চিমবঙ্গের শ্রীরামপুর শহরের মাহেশে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। রথযাত্রার সময় মাহেশের স্নানপিড়ি ময়দানে এক মাস ধরে মেলা চলে। শ্রীরামপুরের মাহেশ জগন্নাথ দেবের মূল মন্দির থেকে মাহেশ গুন্ডিচা মন্দির (মাসীরবাড়ী) অবধি জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার ৫০ ফুট উচ্চতাসম্পন্ন রথটি টেনে নিয়ে যাওয়া হয়। উল্টোরথের দিন আবার রথটিকে জগন্নাথ মন্দিরে ফিরিয়ে আনা হয়।
সেদিন আকাশ এতটাও রোদ ঝলমল ছিল না। আষাঢ়ের দুপুরে মেঘ ঝুলে এসেছে এক কোণে। পাশের বাড়ি থেকে ভেসে আসছে প্রবল হট্টগোল। সকাল থেকেই আমপাতা দিয়ে সাজানো হয়েছে বাড়ি। দরজার বাইরে কলাগাছ। বেল আর জুঁইয়ের মন মাতানো সুবাসে গোটা ঘর মম করছে। রান্নাঘরে চলছে লুচি, হালুয়ার প্রস্তুতি। রায়বাড়ির বাচ্চাদের আজ খুব মজা। সকাল থেকেই প্রবল উৎসাহে রথ সাজাতে ব্যস্ত তারা। বাগানের বাহারি ফুল, পাতা, রঙিন কাগজ আর বেলুনে সাজছে তাদের রথ। ওদের বাড়ির দুই বোন গাছের টগর ফুল নিয়ে বসে পড়েছে মালা গাঁথতে।
এবার সকাল সকাল রথে চেপে বলরাম, সুভদ্রা আর জগন্নাথ হাজির টাপুরের বাড়ি। সবাই মিলে রান্নাঘরে লুচি, খিচুড়ি, পায়েস সে এক হইহই কান্ড। পাড়ার ফুলের দোকান থেকে ঝগড়া করে সব বেল-জুঁইয়ের মালা তুলে এনেছে বাচ্চাপার্টি। সবাই মিলে মনের মতো করে রথ সাজিয়েছে। বিকেলের পুজো, আরতি নিজেরাই সারল। তারপর কাঁসর-ঘন্টা বাজিয়ে রথ নামল রাস্তায়। রথের দড়ি টেনে কেউ পয়সা দিতে চাইলে তারা সবাই মাথা নেড়ে নাকচ করে দেয়। সবার হাতে তুলে দিল নিজেদের বানানো গ্রিটিংস কার্ড। সেখানে লেখা- 'ধর্ম যেখানে রাস্তা মানে না'।