একটি দুর্গের আত্মকথা
Answers
Answer:
বড় ভালো যাইত। গভীর রাত্রের নির্জনে অনেক দিন ঈশ্বর চিন্তাতে যাপন করিতাম । রজনী প্ৰভাত হইবার পূর্বেই আমাকে উঠিতে হইত। উষাকালের সেই ব্ৰাহ্মমুহুৰ্ত আমার পক্ষে বড়ই সম্পূহণীয় ছিল। আমি জানিতাম, আমি যে গোলদীঘির ধারে টেবিলের উপরে রাত্রি যাপন করি, তাহা কেহ জানেন না। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে প্ৰসন্নময়ী ও বিরাজমোহিনী উভয়েত সে কথা জানিতে পারিলেন । শুইবার স্থানাভাবে কলেজের বাৱাণ্ডায় পড়িয়া থাকি শুনিয়া প্ৰসন্নময়ী কঁদিতে লাগিলেন। বিরাজমোহিনী মনে করিলেন, তিনিই এহ সমুদয় কষ্টের কারণ, ইহা ভাবিয়া ঘোর বিবাদে পতিত হইলেন, তাহারও চক্ষে জলধারা বহিতে লাগিল । স্ত্রী-স্বাধীনতার আন্দোলন । এই সময় আবার আমার শ্ৰদ্ধেয় বন্ধু নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় মহাশয় কৃষ্ণনগর হইতে কর্ম ছাড়িয়া প্ৰচারক দলে যোগ দিবেন বলিয়া আসিলেন । তঁহার আসিবার কথা যেদিন স্থির হয়, সেদিন কান্তিচন্দ্ৰ মিত্ৰ মহাশয়ের সহিত কেশববাবুর যে কথোপকথন হয়, তাহাতে আমি উপস্থিত ছিলাম। সেদিনের কথা কখনই ভুলিব না। কান্তিবাবু আসিয়া বলিলেন, “নিগেন্দ্ৰ আসিতে চাহিতেছেন, কি করা যাবে ?” কেশববাবু। সে তো ভালই, তিনি আসুন । করা যাবে কি, কেন ভাবিছ ? আবার করা যাবে কি ? কান্তিবাবু। কিরূপে চলবে ? কেশববাবু। তা ভাববার তোমার অধিকার কি ? যিনি আনছেন তিনিই তার উপায় করবেন। তাহার এরূপ বিশ্বাস ও নিৰ্ভযেব ভাব অনেক স্থলে দেখিয়াছি। নগেন্দ্ৰবাবু কৃষ্ণনগরে তঁাতার জননীকে রাখিয়া একটি পুত্র ও পত্নীসহ আশ্রমে আসিলন । কিন্তু তঁহার আসিবার অচিরকালের মধ্যে কেশববাবুর অনুগত প্রচারক দলের সহিত আমার ও নগেন্দ্ৰবাবুর অপ্ৰীতি জন্মিতে লাগিল । আমার প্রতি অপ্রীতি জন্মিবার দুই কারণ ৷ প্ৰথম কারণ, এই সময়ে স্ত্রীস্বাধীনতার আন্দোলন উপস্থিত হইল। ১৮৭২ সালে আমার বন্ধু দ্বারকানাথ গাঙ্গুলী, দুর্গ মোহন দাস, রজনীনাথ রায়, অন্নদাচরণ খাস্তগির প্রভৃতি কতকগুলি ব্ৰাহ্ম কেশববাবুকে বললেন যে, তাহারা তাহদের পরিবারস্থ মহিলাদিগকে লইয়া! মন্দিরে পারদার বাহিরে বসিতে চান। কেবল এ কথা যে বলিলেন তাহা নহে I