সমাস নির্ণয় করো : স্বাধীনতা দিবস
Answers
Answer:
Explanation:
দুই বা তার বেশী অর্থ-সম্বন্ধযুক্ত পদ যখন একপদে পরিণত হয় তখন তাকে সমাস বলা হয়।
উদাহরণ:- ভাল যে মানুষ = ভালোমানুষ। কুয়াশায় আচ্ছন্ন = কুয়াশাচ্ছন্ন। দিন ও রাত = দিনরাত।
সমাস ও সন্ধির পার্থক্য:-
পরস্পর সন্নিহিত দুই বর্ণের মিলনকেই সন্ধি বলা হয়। যেমন:- দূত+আবাস = দূতাবাস।
সমাস:-
দূত ও আবাস = দূত-আবাস (অথবা দূতের আবাস = দূতাবাস; লিখা যায় )।
সমস্যমান প-দঃ
যে যে পদ্গুলি নিয়ে সমাস গঠিত হয় তাদের সমস্যমান পদ বলে।
ব্যাসবাক্য:-
যে বাক্য অথবা বাক্যাংশ সমস্যমান পদগুলির পারস্পারিক সম্পর্ক দেখানো হয় তাকে সমাসবাক্য বা বিগ্রহবাক্য বা ব্যাসবাক্য বলা হয়।
সমাসের প্রকারভেদ:
সমাস প্রধানত, ছয় প্রকার – (১) তৎপুরুষ সমাস,(২) দিগু সমাস, (৩) দ্বন্দ্ব সমাস (৪) কর্মধারায় সমাস (৫) বহুব্রীহি সমাস (৬) অব্যয়ীভাব বা নিত্য সমাস। তাছাড়াও (৭) অলুক বা আলোপ সমাস দেখা যায়।
■তৎপুরুষ সমাস
যে সমাসে পরপদের অর্থই প্রাধান্য পায় এবং পূর্ব পদের কারক বিভক্তি লোপ পায় তকে তৎপুরুষ সমাস বলে। আবার তৎপুরুষ সমাস ছয় প্রকার:-
কর্ম তৎপুরুষ; করণ তৎপুরুষ; নিমিত্ত তৎপুরুষ; অপাদান তৎপুরুষ; সম্বন্ধ তৎপুরুষ; অধিকরণ তৎপুরুষ
*কর্ম তৎপুরুষ:-
কর্মকারকের বিভক্তি চিহ্ন -কে, রে, ইত্যাদি লোপ পায়। যেমন-
বিপদকে আপন্ন= বিপদাপন্ন(কে, অ);
শরণকে আপন্ন= শরণাপন্ন(কে,অ);
কল্পনাকে অতীত = কল্পনাতীত(কে,অ);
পরলোককে গত= পরলোকগত(কে);
শয্যাকে গত= শয্যাগত(কে);
বংশকে গত = বংশগত (কে);
সংখ্যাতীত=সংখ্যাকে অতীত;
বয়ঃপ্রাপ্ত= বয়ঃকে প্রাপ্ত;
অণুবীক্ষণ= অণুকে বীক্ষণ;
রথদেখা= রথকে দেখা;
কাপড়কাচা = কাপড়কে কাচা;
কলাবেচা= কলাকে বেচা;
ভাত রাঁধা= ভাতকে রাঁধা;
লোকাতীত =লোককে অতীত।
*করণ তৎপুরুষ:-
করণ কারকের দ্বারা, দিয়া, কর্তৃক ইত্যাদি বিভক্তি গুলি লোপ পায়। যেমন-
মেঘ দ্বারা আচ্ছন্ন=মেঘাচ্ছন্ন;
আশার দ্বারা হত = আশাহত;
মোহ দ্বারা অন্ধ= মোহান্ধ;
মন দ্বারা গড়া =মনগড়া;
স্নেহান্ধ= স্নেহ দ্বারা অন্ধ;
দাকাটা= দা দিয়ে কাটা;
কালিমাখা= কালি দিয়ে মাখা;
শোকার্ত= শোকের দ্বারা আর্ত।
ক্ষুধার্ত= ক্ষুধার দ্বারা আর্ত।
*নিমিত্ত তৎপুরুষ:-
পূর্ব পদের কে, রে,জন্য, নিমিত্ত, উদ্দেশ্য ইত্যাদি বিভক্তি লোপ পায়। যেমন-
রান্নার জন্য ঘর=রান্নাঘর;
যজ্ঞের নিমিত্ত ঘোড়া= যজ্ঞঘোড়া;
খেয়ার নিমিত্ত ঘাট= খেয়াঘাট;
রঙ্গের জন্য মঞ্চ = রঙ্গমঞ্চ;
রাজাকে দেয় = রাজদেয়;
লোকের জন্য হিত = লোকহিত;
তপোবন= তপের জন্য বন;
বিয়েপাগলা= বিয়ের জন্য পাগলা;
শয়নকক্ষ= শয়নের নিমিত্ত কক্ষ।
*অপাদান তৎপুরুষ:-
হইতে, থেকে, হতে, চেয়ে, অপেক্ষা ইত্যাদি বিভক্তি লোপ পায়।
পথ থেকে ভ্রষ্ট=পথভ্রষ্ট;
স্থান থেকে চ্যুত= স্থানচ্যুত;
আদি থেকে অন্ত= আদ্যন্ত;
মৃত্যুভয়= মৃত্যু হতে ভয়;
বন্যাত্রাণ= বন্যা হতে ত্রাণ;
ঋণমুক্ত= ঋণ হতে মুক্ত।
*সম্বন্ধ তৎপুরুষ:-
পূর্বপদের- র, এর,ইত্যাদি বিভক্তি লোপ পায়। যেমন-
সূর্যের উদয় = সূর্যোদয়;
দেবগনের রাজা = দেবরাজ;
দেশের বন্ধু= দেশবন্ধু;
রাজপথ = পথের রাজা;
ভুবনেশ্বর = ভুবনের ঈশ্বর;
পিতৃতুল্য = পিতার তুল্য;
শ্মশান =শবের শয়ান;
রত্নাকর = রত্নের আকর;
পিত্রালয়= পিতার আলয়;
(কালীর দাস= কালিদাস; হংসীর ডিম্ব = হংস ডিম্ব )
*অধিকরণ তৎপুরুষ:-
পূর্বপদের - তে, এ, তে,য় ইত্যাদি বিভক্তি লোপ পায়।
পাঠে রত= পাঠরত;
সংখ্যায় লঘু= সংখ্যালঘু;
গৃহে আগত = গৃহাগত;
দিবানিদ্রা= দিবায় নিদ্রা;
মর্মাহত = মর্মে আহত;
কন্ঠাগত= কন্ঠে আগত;
নরোত্তম = নরের মধ্যে উত্তম।
*উপপদ তৎপুরুষ:-
জলে চরে যে = জলচর;
অগ্রে জন্মে যে= অগ্রজ;
অনুতে জন্মে যে = অনুজ;
শত্রুকে বধ করে যে = শত্রুঘ্ন;
মুখে থাকে যে = মুখস্থ;
গুপ্তভাবে চরে যে = গুপ্তচর;
প্রিয়ংবদা= প্রিয় কথা বলে যে;
মৃত্যুঞ্জয়= মৃত্যুকে জয় করেছে যিনি;
শাস্ত্রজ্ঞ= শাস্ত্র জানেন যিনি।
*ব্যাপ্তি তৎপুরুষ:-
সমাসবদ্ধ পদের পূর্বপদ ও পরপদের মধ্যে ব্যাপিয়া/ব্যাপী বসিয়ে ব্যাসবাক্য করতে হয়।
চিরকাল ব্যাপী সুখী= চিরসুখী,
চিরকাল ব্যাপিয়া শত্রু = চিরশত্রু,
চিরকাল ধরে ঋণী = চির-ঋণী
দিন ব্যাপিয়া = চিরদিন,
চিরকাল ব্যাপিয়া স্থায়ী= চিরস্থায়ী,
জীবন ব্যাপিয়া আনন্দ = জীবনান্ত,
নিত্যানন্দ = নিত্য ব্যাপিয়া আনন্দ,
চিরকৃতজ্ঞ= চিরকাল ব্যাপিয়া কৃতজ্ঞ।
*না তৎপুরুষ:-
নয় মিল = গরমিল,
নয় জানা = অজানা,
নয় ইষ্ট = অনিষ্ট,
নয় সন্তোষ= অসন্তোষ।
অন্যান্য:-
ফলের বিপরীত = প্রতিফল;
কূলের বিপরীত = প্রতিকূল,
ঘাতের বিপরীত = প্রতিঘাত,
দানের বিপরীত = প্রতিদান,
ভিক্ষার অভাব = দুর্ভিক্ষ,
কণ্ঠ পর্যন্ত = আকণ্ঠ,
সম্মুখ =মুখের অভিমুখে,
প্রত্যক্ষ = অক্ষির সম্মুখে।
*অলোপ তৎপুরুষ:-
ঘিয়ের দ্বারা ভাজা = ঘিয়েভাজা;
খেলার নিমিত্ত মাঠ = খেলার মাঠ,
সোনার বাংলা = সোনার-বাংলা।
■ দ্বিগু সমাস
যে সমাসের পূর্বপদ সংখ্যাবাচক বিশেষণ, পরপদ বিশেষ্য এবং সমস্তপদের দ্বারা সমাহার বা সমষ্টি বোঝায় তাকে দ্বিগু সমাস বলে।
দ্বিগু সমাস দুই প্রকার:- (১) সমাহার দ্বিগু; (২) তদ্ধিতার্থক দ্বিগু।
*সমাহার দ্বিগু সমাস:-
পাঁচ মাথার সমাহার = পাঁচমাথা;
সপ্ত ঋষির সমাহার = সপ্তর্ষি;
দশদিকের সমাহার = দশদিক;
Answer:
স্বাধীনতা দিবস: স্বাধীনতা উদযাপনের দিবস (নিত্য সমাস)