এই জীবন কবিতার সারমর্ম
Answers
কবিতা: এই জীবন
কবি: সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
কাব্যগ্রন্থ / প্রকাশিত: দেখা হলো ভালোবাসা বেদনায়
বাঁচতে হবে বাঁচার মতন, বাঁচতে-বাঁচতে
এই জীবনটা গোটা একটা জীবন হয়ে
জীবন্ত হোক
আমি কিছুই ছাড়বো না, এই রোদ ও বৃষ্টি
আমাকে দাও ক্ষুধার অন্ন
শুধু যা নয় নিছক অন্ন
আমার চাই সব লাবণ্য
নইলে গোটা দুনিয়া খাবো!
আমাকে কেউ গ্রামে গঞ্জে ভিখারী করে
পালিয়ে যাবে?
আমায় কেউ নিলাম করবে সুতো কলে
কামারশালায়?
আমি কিছুই ছাড়বো না আর, এখন আমার
অন্য খেলা
পদ্মপাতায় ফড়িং যেমন আপনমনে খেলায় মাতে
গোটা জীবন
মানুষ সেজে আসা হলো,
মানুষ হয়েই ফিরে যাবো
বাঁচতে হবে বাঁচার মতন,বাঁচতে-বাঁচতে
এই জীবনটা গোটা একটা জীবন হয়ে
জীবন্ত হোক!
■ সারমর্ম ছবিতে দেয়া হলো।
এই জীবন কবিতাটি কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় এর লেখা কাব্যগ্রন্থ দেখা হলো ভালোবাসা বেদনায় এর অংশ বিশেষ, এখানে তিনি জীবন সম্পর্কে এক নতুন ধারনার উল্লেখ করেছেন। জীবন বলতে আমরা কোনো ক্রমে বেঁচে থাকার কথা বুঝি, কিন্তু বাঁচা আর অস্তিত্ব এই দুয়ের মধ্যেকার পার্থক্য আমরা ভুলে যাই, আমাদের ভাবনা হয়
" এই বেশ ভালো আছি "
সত্যি কি ভাল আছি আমরা? এই প্রশ্ন আমাদের মনে আসে বার বার ,
কবি জীবনানন্দের ভাষায় :-
" আনন্দের অন্তর্গত রক্তের মধ্যেও জন্ম নেয় না কোনও বোধ। "
আর এখানেই কবি তার ভাবনার সক্রিয়তা দেখিয়েছেন, বোধহীন বাঁচার বিরুধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন, তার লেখনীর মাধ্যমে তিনি বলতে চেয়েছেন যে অস্তিত্বহিন বেঁচে থাকা অর্থহীন, বাঁচার মত বাঁচতে হবে, আর এই ভাবেই নিজের অস্তিত্ব কে জীবন্ত করে তুলতে হবে, কীট পতঙ্গের মত বাচার নাম জীবন নয়। বেঁচে থাকার জন্য প্রতিবাদ খুব জরুরি। তাই তহ কবি তার ভাষা তে প্রতিবাদ জানিয়ে লিখেছেন :
" আমাকে কেউ গ্রামে গঞ্জে ভিখারী করে
পালিয়ে যাবে?
আমায় কেউ নিলাম করবে সুতো কলে
কামারশালায়?
আমি কিছুই ছাড়বো না আর, এখন আমার
অন্য খেলা "
বাঁচার মতো বাঁচতে চান কবি, তাঁর কথায় আমাদের জীবনে অস্তিত্তের মধ্যে প্রতিবাদ খুব জরুরি শুধু মাত্র প্রতিবাদের মাধ্যমেই আমরা যে জীবিত তার প্রমান দেওয়া যায়, এই কবিতার মাধ্যমে কবি আমাদের প্রকৃত মানুষের মত বাঁচতে বলেছেন, আর এই ভাবেই জীবন কে জীবন্ত করে তোলার কথা বলেছেন, আর এতাই হল কবির মতে বাঁচার মত বাঁচা।