ধান জমিতে অ্যাজোলা চাষের কারণ ব্যাখ্যা করো
Answers
Answer:
চাষি-বন্ধুরা বর্ষার ধান চাষের আগে সাধারণত ধইঞ্চা, শন প্রভৃতি বুনতে অভ্যস্ত ছিলেন। ওই সব সবুজ সারের বয়স দেড়-দু’মাসের মাথায় মাটির সঙ্গে মাড়িয়ে দিতে হয়। পচানোর জন্য এই সময়ে প্রচুর জলের দরকার। অনিয়মিত বর্ষায় সব সময়ে ধইঞ্চা মাড়ানো ও পচানো সম্ভব না হওয়ায় চাষিরা উৎসাহ হারাচ্ছেন। অন্য দিকে ধান চাষের মাস খানেক আগে জলকাদা জমিতে বিঘা প্রতি ৪-৫ কেজি অ্যাজোলা ছড়িয়ে দিলে ১৫-২০ দিনের মধ্যে গোটা জমি সবুজে ঢেকে যাবে। এর পরে এক বার চাষ দিলে ৫-৬ দিনের মধ্যে তা পচে গিয়ে বিঘা প্রতি ১০০-১২৫ টন সবুজ সার ও ৪-৫ কেজি নাইট্রোজেন সরাসরি মাটিতে যোগ করবে। গোবর সারের বিকল্প হিসাবে এটি সুস্থায়ী কৃষির উল্লেখযোগ্য স্তম্ভ। ধান পোঁতার দিন দশক পরে জমিতে অ্যাজোলা ছেড়ে দিলে ধানের বৃদ্ধি ভাল হয়। তা বেশ কিছু উদ্ভিদ হরমোন ও ভিটামিন জমিতে যোগ করে ও নানা অনুখাদ্য গাছের গ্রহণযোগ্য করে তোলে, অন্য আগাছার বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে। অন্য ফসলে এ সার প্রয়োগে সুফল মেলে।
গোখাদ্য অ্যাজোলার গুরুত্ব
সবুজ গোখাদ্য হিসাবে অ্যাজোলা ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এর কারণ অন্য সবুজ গোখাদ্যের তুলনায় এটিতে ফুড প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, আয়রন ও ফসফরাস বেশি। নানা সময়ে নানা পরীক্ষার পরে দেখা গিয়েছে, অ্যাজোলা খাওয়ানোয় মাস খানেকের মধ্যেই গরু-ছাগলের দুধের পরিমাণ বেড়েছে। গবাদিদের স্বাস্থ্যেরও উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। এমনকী এর ব্যবহারে গবাদিদের বন্ধ্যাত্ব দূর করাও সম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে।
ধান জমিতে অ্যাজোলা চাষের প্রধান কারণ হল নিম্নলিখিত-
- অ্যাজোলা হল একটি ক্ষুদ্র জলীয় ফার্ন জাতীয় এলডো ফাইটার যা ভেজা মাটিতে জন্মাতে পারে। এদের শরীরে এক ধরনের আদি-এক কোষী নীলাভ-সবুজ অ্যানাবিনা অ্যাজোলি নামক একটি সায়ানোব্যাকটেরিয়া বসবাস করে। যা বাতাসের মুক্ত নাইট্রোজেন মাটিতে আবদ্ধকরণ করতে সক্ষম হয়।
- ধান জমি তে থাকা জলের মাধ্যমে সায়ানোব্যাকটেরিয়া টি ছড়িয়ে পরে।সাথে সাথে অ্যাজোলার ও বংশবৃদ্ধি ঘটে। জমিতে নাইট্রোজেন বাড়তে থাকে।নাইট্রোজেন আবদ্ধকরনের মাধ্যমে ধান জমির উর্বরতা বৃদ্ধি হতে থাকে। যা ধান চাষের পক্ষে সহায়ক। তাই ধান জমিতে অ্যাজোলা চাষ করা হয়।
#SPJ3