গ্রীশ্মের দুপুর এর ওপর রচনা লেখ।
Answers
ভূমিকা:
ঋতু পরিবর্তনের ধারায় বসন্তের মাধূর্যকে দূরে সরিয়ে গ্রীষ্মকাল এক আপন ভাবমূর্তির সাথে এসে হাজির হয়।আর এই গ্রীষ্মের যথার্থ স্বরূপ ফুটে ওঠে গ্রীষ্মের দুপুর বেলায়।গ্রীষ্মের দুপুরের চিত্রটা আমাদের সকলেরই খুব পরিচিত।ভর দুপুরে সূর্য যেন অগ্নিরূপ ধারণ করে।চারিদিকে সূর্যের প্রখর রোদ,তপ্ত বাতাস,শুকনো পুকুর খাল বিল, নিঝুম প্রকৃতি।কবির ভাষায় –
“ঘাম ঝরে দরদর গ্রীষ্মের দুপুরে
খাল বিল চৌচির জল নেই পুকুরে।
মাঠে ঘাটে লোক নেই খাঁ খাঁ রোদ্দুর
পিপাসায় পথিকের ছাতি কাঁপে দুদ্দুর।”
গ্রীষ্মের দুপুরের প্রাকৃতিক রূপ:
গ্রীষ্মের দুপুরে প্রখর রোদে প্রকৃতি যেন নির্জীব হয়ে পড়ে। চৈত্র থেকেই শুরু হয়ে যায় সূর্যের প্রখর রোদের এই তাণ্ডব।বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ মাসে এর তীব্রতা বাড়তে থাকে।প্রচন্ড রোদে গ্রামের পুকুর,খাল,বিল শুকিয়ে পড়ে।
দুপুরের সময় গরম বাতাসের ঝড় উঠে।রাস্তা ঘাট একপ্রকার জনমানব শূন্য বললেই চলে। ফসলহীন মাঠ,স্রোত হীন নদী,জনমানব শূন্য রাস্তা ঘাট,গাছের আড়ালে ঘুঘু পাখির মন উদাস করা ডাক গ্রীষ্মের দুপুরের পরিচিত চিত্র।
গ্রীষ্মের দুপুরের জনজীবন:
গ্রীষ্মের দুপুর শহরের ব্যাস্ততায় সেভাবে প্রভাব না ফেললেও গ্রামের পরিবেশ একদম ঝিমিয়ে পড়ে।প্রচন্ড রোদে কৃষকেরা মাঠে কাজ করতে পারেনা।ঘরের ভেতরে অসহ্য গরম আর বাইরে প্রচন্ড তাপদাহ।
গাছের ছায়ায় বসে হাতপাখা নিয়ে গরম ঘোচাবার চেষ্টা করে গ্রামের মানুষ জন। অসহ্য গরমকে পরোয়া না করে গ্রামের বাচ্চারা আমের বাগানে আম কুড়ানোর নেশায় মগ্ন হয়ে ওঠে।
শহরে মানুষ এ.সি ,বৈদ্যুতিক পাখা ব্যাবহার করে ঘরকে ঠান্ডা করে দুপুরে বিশ্রাম নেয়।স্কুলে,কলেজে গরমের ছুটি পড়ে। পিচ গলা গরমে ব্যাস্ত রাস্তায় যানবাহন সংখ্যা কমে যায়।শহরের ব্যাংক,অফিস,স্টেশন হঠাৎ যেন ঝিমিয়ে পড়ে।গরমে ক্লান্ত হয়ে পড়ে রাস্তার পশু ও পাখিরা।
গ্রীষ্মের দুপুর ও কর্মজীবন:
গ্রামের গৃহ বধূরা সংসারের কাজ তাড়াতাড়ি করে দুপুরে একটু বিশ্রাম খোঁজে।মাঠের কাজ ফেলে রেখে গাছের নীচে আশ্রয় নেয় চাষী ভাইয়েরা।ক্লান্ত ফেরিওয়ালারা গাছের ছায়া খোঁজে। গলির ধরে ঝাঁপখোলা দোকানপাটে ঝিমধরা ভাব।
কিছু অর্থ উপার্জনের তাগিদে আইসক্রিম বিক্রেতারা ঘুরে বেড়ায় গ্রামের রাস্তায় রাস্তায়। বাইরের সমস্ত কর্ম জগৎ হঠাৎ করে ঝিমিয়ে পড়ে।অফিস পাড়ার কর্মব্যস্ততা এই সময় শান্ত হয়ে যায়।শিক্ষকরা গরমের ছুটি কাটায়।
উপসংহার:
গ্রীষ্মের দুপুর প্রকৃতির এক বিচিত্র রূপ।
গ্রীষ্মের দুপুর জনজীবনে গভীর প্রভাব বিস্তার করে।গ্রীষ্মের দুপুরের ঝিমধরা প্রাকৃতিক রূপ আর নিশ্চল স্থবির জনজীবন,ফসল হীন মাঠ,নদীর ঘাটে বাঁকা তরি,রোদ ঝলসানো তপ্ত বাতাসের এই পরিচিত দৃশ্যেকে মানুষ ভুলে যায় যখন তপ্ত আকাশ ফেটে নেমে আসে স্বস্তির বৃষ্টি।
hope it will be helpful for you