History, asked by mohanamaiti, 7 months ago

অষ্টাদশ শতকের মুঘল শাসন কাঠামো বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছিল এ বিপর্যয়ের কারণ গুলি তুমি কিভাবে ব্যাখ্যা করবে?​

Answers

Answered by iamsuk1986
107

পানিপথের প্রথম যুদ্ধে ইবরাহিম লোদির বিরুদ্ধে বাবরের জয়ের মাধ্যমে মুঘল সাম্রাজ্যের সূচনা হয়।[১৩] মুঘল সম্রাটরা ছিলেন মধ্য এশিয়ার তুর্কো-মঙ্গোল বংশোদ্ভূত। তারা চাগতাই খান ও তৈমুরের মাধ্যমে চেঙ্গিস খানের বংশধর। ১৫৫৬ সালে আকবরের ক্ষমতারোহণের মাধ্যমে মুঘল সাম্রাজ্যের ধ্রূপদী যুগ শুরু হয়।[১৪] আকবর ও তার ছেলে জাহাঙ্গীরের শাসনামলে ভারতে অর্থনৈতিক প্রগতি বহুদূর অগ্রসর হয়। আকবর অনেক হিন্দু রাজপুত রাজ্যের সাথে মিত্রতা করেন। কিছু রাজপুত রাজ্য উত্তর পশ্চিম ভারতে মুঘলদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ জারি রাখে কিন্তু আকবর তাদের বশীভূত করতে সক্ষম হন। মুঘল সম্রাটরা মুসলিম ছিলেন তবে জীবনের শেষের দিকে শুধুমাত্র সম্রাট আকবর ও তার পুত্র সম্রাট জাহাঙ্গীর নতুন ধর্ম দীন-ই-ইলাহির অনুসরণ করতেন।[১৫]

মুঘল সাম্রাজ্য স্থানীয় সমাজে হস্তক্ষেপ করত না তবে প্রশাসনিকভাবে এসববের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা হত।[১৬][১৭] অনেক বেশি কাঠামোগত, কেন্দ্রীভূত শাসন প্রতিষ্ঠা করা হয়। মুঘল শাসনামলে উত্তর ও পশ্চিম ভারতের বিভিন্ন গোষ্ঠী যেমন মারাঠা, রাজপুত ও শিখরা সামরিক শক্তি অর্জন করে।

শাহজাহানের যুগে মুঘল স্থাপত্য এর স্বর্ণযুগে প্রবেশ করে। তিনি অনেক স্মৃতিসৌধ, মাসজিদ, দুর্গ নির্মাণ করেন যার মধ্যে রয়েছে আগ্রার তাজমহল, মোতি মসজিদ, লালকেল্লা, দিল্লি জামে মসজিদ। আওরঙ্গজেবের শাসনামলে মুঘল সাম্রাজ্যের সীমানা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌছায়। শিবাজী ভোসলের অধীনে মারাঠাদের আক্রমণের ফলে সাম্রাজ্যের অবনতি শুরু হয়। আওরঙ্গজেবের সময় দক্ষিণ ভারত জয়ের মাধ্যমে ৩.২ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটারের বেশি অঞ্চল মুঘল সাম্রাজ্যের অন্তর্গত হয়। এসময় সাম্রাজ্যের জনসংখ্যা ছিল ১৫০ মিলিয়নের বেশি যা তৎকালীন পৃথিবীর জনসংখ্যার প্রায় এক চতুর্থাংশ এবং জিডিপি ছিল ৯০ বিলিয়ন ডলারের বেশি।[১৮][১৯]

১৮শ শতাব্দীর মধ্যভাগ নাগাদ মারাঠারা মুঘল সেনাবাহিনীর বিপক্ষে সফলতা লাভ করে এবং দক্ষিণাত্য থেকে বাংলা পর্যন্ত বেশ কিছু মুঘল প্রদেশে বিজয়ী হয়। সাম্রাজ্যের প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক প্রক্রিয়ার দুর্বলতার কারণে অভ্যন্তরীণ অসন্তোষ সৃষ্টি হয় যার ফলে বিভিন্ন প্রদেশ কার্যত স্বাধীন হয়ে পড়ে। ১৭৩৯ সালে কারণালের যুদ্ধে নাদির শাহের বাহিনীর কাছে মুঘলরা পরাজিত হয়। এসময় দিল্লি লুন্ঠিত হয়। পরের শতাব্দীতে মুঘল শক্তি ক্রমান্বয়ে সীমিত হয়ে পড়ে এবং শেষ মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহের কর্তৃত্ব শুধু শাহজাহানাবাদ শহরে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। সিপাহী বিদ্রোহের সমর্থনে তিনি একটি ফরমান জারি করেছিলেন। সিপাহী বিদ্রোহ ব্যর্থ হলে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তার বিরুদ্ধে রাজদ্রোহীতার অভিযোগ এনে কারাবন্দী করে। শেষে তিনি রেঙ্গুনে নির্বাসিত হন এবং সেখানেই মারা যান।

Answered by amikkr
1

অষ্টাদশ শতকে প্রথম ও দ্বিতীয় অর্ধে মুঘল শাসকদের অযোগ্যতা ও দুর্বলতার কারণে মুঘল শাসন কাঠামো গত ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। এর পিছনের মূল কারন গুলি হল-

  • জায়গিরদারী সংকট ও মনসবদারী সংকট - মোগল শাসন ব্যবস্থার অন্যতম প্রধান ভিত্তি ছিল জায়গিরদারী ব্যবস্থা। ভালো জায়গা পাওয়ার জন্য দলের ওপর নির্ভরশীলতা মুঘল দরবারে দ্বন্দ্ব তৈরি করেছিল  অভিজাতদের মধ্যে। জায়গিরদারী এবং মনসবদারী অর্থনীতির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল ।এর ফলে মুঘল সাম্রাজ্য আর্থিক কাঠামোগত বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়।
  • কৃষক বিদ্রোহ - জায়গিরদারী ও মানসবদারি সংকট এর প্রভাব পড়ে কৃষি ব্যবস্থার উপর। বিলাসবহুল জীবন যাপন করতে গিয়ে আয়ব্যয়ের গরমিল চাপ তৈরি করে। কৃষি ব্যবস্থার উপর সেই চাপ রাজস্ব হিসেবে পড়ায় কৃষকরা বিদ্রোহী হয়ে ওঠে । অযোগ্য মোগল সম্রাটরা কৃষক বিদ্রোহের কারণ জানার চেষ্টা না করায় বিদ্রোহ আরও চরম আকার ধারণ করে।
  • ঐক্য বিচ্ছেদ - ঔরঙ্গজেবের মৃত্যুর পর মোগল শাসকরা সিংহাসনের উত্তরাধিকার নিয়ে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়ে মোঘল ঐক্যকে ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়।
  • সামরিক ব্যবস্থার অবনতি  - মুমোঘল সাম্রাজ্যের ভিত সামরিক শক্তির ভিত্তিতে গড়ে উঠলেও অষ্টাদশ শতকের সময় মোগল সম্রাটরা কোনোরকম উন্নতি সাধন করেননি । সাথে সাথে সেনারা আমোদ প্রমদে মত্ত থাকায় তাদের দক্ষতা হ্রাস পায়।ফলে একদা পরম শক্তিশালী সেনাদল রাজ্যের ভিতরে বিদ্রোহ আর বাইরের আক্রমনের মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয় । সাথে সাথে শিবাজী-মারাঠাদের আক্রমণ, আহমদ শাহ আদালির আফগানি আক্রমণে (1756-57 খ্রিস্টাব্দ)  অন্যদিকে নাদির শাহের নেতৃত্বে পারসিক আক্রমণ (1738-39 খ্রিস্টাব্দ) মুঘল দের কাহিল করে ফেলেছিল।
  • আঞ্চলিক শক্তির উত্থান - এইসকল সংকটের সুযোগে বিভিন্ন আঞ্চলিক  স্বশাসিত শক্তি যারা পূর্বে মোগল রাষ্ট্রের অধীন ছিল তারা নিজেদের স্বাধীন বলে ঘোষণা করে।

#SPJ3

Similar questions