সারা বছর পবল উষ্ণতা জনিত কারণে যে চাপবলয়টি গঠিত হয়েছে সেটি হল
Answers
আবহাওয়া ও জলবায়ুর উপাদান হিসেবে উষ্ণতার গুরুত্ব:-
আবহাওয়া ও জলবায়ুর উপাদান হিসেবে উষ্ণতার গুরুত্ব অপরিসীম । উষ্ণতার ওপরেই আবহাওয়া ও জলবায়ুর অন্যান্য উপাদান যেমন:- বায়ুচাপ, বায়ুপ্রবাহ, আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাত প্রভৃতি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্ভর করে । উষ্ণতার তারতম্যে আবহাওয়া ও জলবায়ুর বিভিন্ন উপাদানগুলোর যথেষ্ট তারতম্য লক্ষ করা যায়, যেমন:-
:- বায়ুর উষ্ণতা কমে গেলে বায়ু সংকুচিত হয় এবং বায়ুর চাপ বেড়ে যায় । আবার উষ্ণতা বেড়ে গেলে বায়ু আয়তনে প্রসারিত হয় এবং বায়ুচাপ কমে যায় । কাজেই, উষ্ণতার সঙ্গে বায়ুচাপ বিপরীত অনুপাতে পরিবর্তিত হয়, অর্থাৎ উষ্ণতা কমলে বায়ুচাপ বাড়ে এবং উষ্ণতা বাড়লে বায়ু চাপ কমে ।
:- বায়ুর উষ্ণতার সঙ্গে বায়ুচাপের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে । ভুপৃষ্ঠের বিভিন্ন অংশে বায়ুচাপের তারতম্যের ফলেই বায়ুপ্রবাহের সৃষ্টি হয় । যেখানে বায়ুর চাপ বেশি সেখান থেকে যেখানে বায়ুর চাপ কম, বায়ু সেদিকেই প্রবাহিত প্রবাহিত হয় । এইভাবে উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে বায়ু ধাবিত হলে বায়ুপ্রবাহের সৃষ্টি হয় । বায়ুচাপ উষ্ণতার ওপর নির্ভর করে, তাই বায়ুপ্রবাহও উষ্ণতার ওপর নির্ভরশীল ।
:- উষ্ণতা বেড়ে গেলে বায়ুর জলীয়বাষ্প ধারণ ক্ষমতা বা আর্দ্রতা বাড়ে, আবার, উষ্ণতা কমে গেলে বায়ুর জলীয়বাষ্প ধারণের ক্ষমতা কমে যায় । অতএব বায়ুর জলীয় বাষ্প ধারণের ক্ষমতা বা আর্দ্রতা, বায়ুর উষ্ণতার ওপর নির্ভরশীল ।:- উচ্চচাপ অঞ্চল (শীতল অঞ্চল) থেকে নিম্নচাপ অঞ্চলের (উষ্ণ অঞ্চল) দিকে প্রবাহিত হওয়ার সময় বায়ুপ্রবাহের গতিপথে সাগর বা মহাসাগর থাকলে ওই বায়ু প্রচুর পরিমাণে জলীয়বাষ্প গ্রহণ করে । বায়ু যতই উষ্ণ অঞ্চলের দিকে যেতে শুরু করে ততই তার জলীয়বাষ্প ধারণ ক্ষমতা বেড়ে যেতে থাকে । জলীয়বাষ্প বিশুদ্ধ বায়ুর তুলনায় হালকা হওয়ায় জলীয় বাষ্পপূর্ণ সম্পৃক্ত বা পরিপৃক্ত বায়ু ও হালকা হয়ে উপরে উঠে যেতে থাকে এবং উপরের শীতল বায়ুস্তরের প্রভাবে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে বৃষ্টিপাত ঘটায় । এজন্য বায়ুর উষ্ণতার সঙ্গে বৃষ্টিপাত অঙ্গাঙ্গীভাবে সম্পর্কযুক্ত ।
ভূপৃষ্ঠের বায়ুচাপ বলয়গুলির সঙ্গে নিয়ত বায়ুপ্রবাহের সম্পর্ক
বায়ুচাপের পার্থক্যই নিয়ত বায়ুপ্রাহের প্রধান কারণ । যেখানে বায়ুর চাপ বেশি, সেখান থেকে যে দিকে বায়ুর চাপ কম, সেদিকেই বায়ু প্রবাহিত হয় । এই নিয়ম মেনে পৃথিবীর চারটি স্থায়ী উচ্চচাপ বলয় থেকে ৩টি স্থায়ী নিম্নচাপ বলয়ের দিকে সারা বছর ধরে নিয়মিতভাবে ও নির্দিষ্ট গতিতে প্রবাহিত বায়ুই হল নিয়ত বায়ুপ্রবাহ । নিয়ত বায়ুপ্রবাহ তিন রকমের, যথা:- আয়ন বায়ু, পশ্চিমাবায়ু ও মেরুবায়ু ।
আয়ন বায়ুর সঙ্গে বায়ুচাপ বলয়ের সম্পর্ক:-
ক) উত্তর গোলার্ধে কর্কটীয় উচ্চচাপ বলয় এবং দক্ষিণ গোলার্ধে মকরীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে সারা বছর ধরে আয়ন বায়ু প্রবাহিত হতে থাকে ।
খ) মোটামুটিভাবে ৩০০ থেকে ৫০ উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষরেখার মধ্যে আয়নবায়ু প্রবাহিত হয় । ফেরেল সূত্র অনুসারে উত্তর গোলার্ধে এই বায়ুপ্রবাহ ডান দিকে কিছুটা বেঁকে উত্তর-পূর্ব দিক থেকে ছুটে আসে ।গ) উত্তর-পূর্ব দিক থেকে আসে বলে উত্তর গোলার্ধে এই বায়ুপ্রবাহের নাম
ঘ) দক্ষিন গোলার্ধে আয়নবায়ু ফেরেল সূত্র অনুসারে খানিকটা বাঁ দিকে বেঁকে দক্ষিন-পূর্ব দিক থেকে ছুটে আসে । দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে আসে বলে দক্ষিণ গোলার্ধে এই বায়ুপ্রবাহের নাম
ঙ) নিরক্ষরেখা নিকটবর্তী নিরক্ষীয় ক্রান্তীবলয় অঞ্চলে ৫০ উত্তর অক্ষাংহ থেকে ৫০ দক্ষিণ অক্ষাংশ পর্যন্ত স্থানে উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিন-পূর্ব আয়ণ বায়ু মিলিত হয় বলে ওই অঞ্চলে কোনো বায়ুপ্রবাহ থাকে না ।
মেরুবায়ু সাধারণত উভয় গোলার্ধে মোটা মুটি ৭০০ থেকে ৮০০ অক্ষরেখার মধ্যে মেরুদেশীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে মেরুবৃত্তপ্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে সারা বছর ধরে প্রবাহিত হয় । এই বায়ু উত্তর গোলার্ধে উত্তর-পূর্ব মেরুবায়ু এবং দক্ষিণ গোলার্ধে দক্ষিণ-পূর্ব মেরুবায়ু নামে প্রবাহিত হয় ।
পশ্চিমাবায়ুর সঙ্গে বায়ুচাপ বলয়ের সম্পর্ক:-
পশ্চিমাবায়ু উভয় গোলার্ধে সাধারণত ৩০০ থেকে ৬০০ অক্ষরেখার মধ্যে ক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে মেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে সারা বছর ধরে প্রবাহিত হয় । এই বায়ু ফেরেল সূত্র মেনে উত্তর গোলার্ধে ডান দিকে বেঁকে
হিসেবে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বাঁ দিকে বেঁকে
rate my answer and don't forget to follow me