দেওয়ানির অধিকার, দ্বৈতশাসন ব্যবস্থা ও ছিয়াত্তরের মহত্তর কীভাবে একে অপরের সাথে সম্পরক হল?
(১০০ থেকে ১২০ শব্দে লেখাে)
Answers
Answer:
Explanation:
১৭৫৭ সালে ইস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানি পলাশীর যুদ্ধে জয়লাভের পর বাংলায় চরম শোষণ শুরু হয়।১৭৬৫ সালে লর্ড ক্লাইভ বাংলার নবাব থেকে দেওয়ানি সনদ প্রাপ্ত হলে যে শাসন প্রণালীর উদ্ভব হয়, তা ইতিহাসে দ্বৈত শাসন নামে পরিচিত। মীর জাফরের মৃত্যুর পর লর্ড ক্লাইভ ১৭৬৫ সালে মোগল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের কাছ থেকে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানি লাভ করে। নবাবের হাতে ছিল ক্ষমতাহীন শাসনব্যবস্থা। এই সময় নবাব ইংরেজদের বৃত্তিভোগী কর্মচারী তে পরিণত হন। এই সময় ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতীয়দের উপর এত শোষণ চালাই যে, ঐতিহাসিক পার্সিভাল স্ফিয়ার এই যুগকে "প্রকাশ্য ও নির্লজ্জ লুন্ঠনের যুগ" নামে আখ্যয়িত করেন। বাংলা বিহার উড়িষ্যার দেওয়ানি লাভের পর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আর্থিক শোষন চরমে পৌঁছায় আগে অর্থাৎ ১৭৬৪ থেকে ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে কোম্পানির রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ যেখানে ছিল ১কোটি টাকার অধিক আর তার পরের বছর অর্থাৎ ১৭৬৫ থেকে ১৭৬৬ তে কোম্পানির দ্বিগুণ পরিমাণ রাজস্ব আদায় করে যা ছিল এক কোটি ১০ লক্ষ টাকা। দেওয়ানি লাভের আগে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বাণিজ্যের জন্য মূলধন হিসাবে ইংল্যান্ড থেকে কিন্তু দেওয়ানি লাভের পর ইংল্যান্ড থেকে ভারতে ব্যবসায় মূলধনের অর্থ পাঠানো বন্ধ করা হয় ।বাংলায় রাজস্ব থেকে প্রাপ্ত অর্থেই পণ্য কেনার ব্যবস্থা করা হয় ।সেই ব্যবসার লাভের অর্থ ভারতের বদলে ইংল্যান্ডে জমা পড়তে থাকে। রাজস্ব আদায়ের জন্য জমিদার সাধারণ মানুষের উপরে এত পরিমাণ অত্যাচার ও চাপ প্রয়োগ করে তাতে মানুষের জীবন আরও দুর্বিষহ হয়ে ওঠে।কোম্পানি নিযুক্ত রাজস্ব বিভাগের দুই সহকারী রেজা খাঁ ও সিতাব রায়ের শোষণ ও অত্যাচারে প্রজাদের দুর্দশার অন্ত ছিল না । তাদের এই ব্যবহারের জন্য তারা "রক্তলোলুপ নেকড়ে" নামে আখ্যায়িত হন। ফলস্বরূপ এই সময় ১৭৭০ খ্রিস্টাব্দে বাংলায় ছিয়াত্তরের মন্বন্তর দেখা যায়।এর ফলে বাংলায় প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষের মৃত্যু হয় ।অনাবৃষ্টির জন্য শস্যহানিতে এই দুর্ভিক্ষের সূচনা হলেও কোম্পানির দুর্নীতির শাসন নীতি এই দুর্ভিক্ষকে সর্বগ্রাসী ,ব্যাপক, বিভীষিকাময় ও লোকক্ষয়কারী তুলেছিল।