' অগত্যা রাধারানী কাঁদিতে কাঁদিতে ফিরিল ' — রাধারানীর কাঁদার কারণ কি ?
Answers
রাধারাণী (বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়)
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত রাধারাণী গল্প থেকে "অগত্যা রাধারাণী কাঁদিতে কাঁদিতে ফিরিল" কথাটি নেওয়া হয়েছে।
রাধারাণীর মায়ের শরীর খুব অসুস্থ হলে ওষুধের প্রয়োজন হল। সে রথের মেলায় বনফুলের মালা বিক্রি করতে গেল। প্রকৃতি বিমুখ; বৃষ্টি শুরু হল। মেলার ভিড় উধাও হল।
রাধারাণী ভেবেছিল যে বৃষ্টি থামবে ও আবার লোক জুটবে। কিন্তু বৃষ্টি আর থামল না। ক্রমশ সন্ধ্যা অতিক্রম হয়ে রাত হল।
একাদশ বর্ষীয়া বালিকা রাধারাণী অন্ধকারে একা দাঁড়িয়ে থাকল। তার মায়ের জন্য ওষুধ কেনার পয়সা সে জোগাড় করতে পারল না। একদিকে একাকীত্ব, আরেক দিকে মায়ের শরীর খুব খারাপ --- তাই সে কাঁদতে লাগল।
উত্তর :-
উদ্ধৃত অংশটি ' বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ' লেখা ' রাধারানী ' গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে । রথের দিন অসুস্থ রাধারানীর মায়ের অবস্থা আরও বাজে হয়ে ওঠে । অর্থের প্রয়োজন মেটাতে অভুক্ত রাধারানী কিছু বনফুল সংগ্রহ করে তা দিয়ে মালাগেঁথে রথের মেলায় বিক্রি করতে চাইল । কিন্তু রথের মেলা অর্ধেক বসতে না বসতেই প্রবল বৃষ্টিতে মেলা ভেঙে যায় । তখন রাধারানী কাঁদতে কাঁদতে বাড়ির পথ খুঁজতে থাকে ।
_____________________
অতিরিক্ত তথ্য :-
পাঠ্য রাধারানী রচনাংশটি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত রাধারানী উপন্যাসের প্রথম পরিচ্ছদ ।
★ বিষয়সংক্ষেপ :-
রাধারানী এক গরীব বিধবা মেয়ে । একসময় অবস্থাপন্ন হলেও কিছু বাজে মানুষের সঙ্গে মামলা-মুকাদ্দামায়ে হেরে যাওয়ায় তার মা নিঃস্ব হয়ে যান । তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ায় তার মেয়ে রাধারানী তার সমস্ত দায়িত্ব নিতে থাকে । কিন্তু রথের মেলা পন্ড হয়ে যাওয়ায় রাধারানী তার বানানো বনফুলের মালা মেলায় বিক্রি করতে পারল না । যখন রাধারানী কাঁদতে-কাঁদতে বাড়ি ফিরছিল । সেই সময় এক পথিকের সঙ্গে তার দেখা হয় এবং সেই পথেই তার কাছ থেকে কিছু মালা কিনে নিয়ে যায় । পরে সেই পথিক রাধারানী দের অবস্থা দেখে । তাদের জন্য শাড়ি ইত্যাদি আরও জিনিস দিয়ে যায় । তুমি রাধারাণীর বাড়িতে একটি নোট দিয়ে যায় । রাধারানী নোটটি না ভাঙ্গে তুলে রাখলো কারণ তারা গরীব হলেও লোভী নয় ।
_____________________
_____________________
লেখক পরিচিতি :-
★ ভূমিকা :- উপন্যাস, প্রবন্ধ, রসরচনা — সবক্ষেত্রে বঙ্কিমচন্দ্রের অসাধারণ প্রতিভার প্রকাশ ঘটেছে । বাংলা ভাষার পত্রিকা সম্পাদনার ক্ষেত্রেও তিনি অসামান্য দক্ষতা দেখিয়েছিলেন । উনিশ শতকের অন্যতম চিন্তাবিদ হিসেবেও বঙ্কিমচন্দ্র স্বীকৃত ।
★ জন্ম ও শৈশব :- বঙ্কিমচন্দ্র জন্মগ্রহণ করেন ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দের ২২ শে জুন । উত্তর ২৪ পরগনার কাঠালপাড়া গ্রামে ।
★ সাহিত্য জীবন :- তাঁর লেখা কয়েকটি উল্লেখযোগ্য উপন্যাস গুলি হল — কপালকুণ্ডলা, ইন্দিরা, রাধারানী ইত্যাদি ।