৫। ভূগোল ব্যাখ্যামূলক উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন: [ প্রশ্নের মান-৫]
৫.১ নদীর ক্ষয়কার্যে সৃষ্ট তিনটি ভূমিরূপের সচিত্র বিবরণ দাও।
Answers
Answer:
I can't understand this question please ask in English
নদীর উৎস থেকে মোহনা পর্যন্ত অংশে ক্ষয়কার্য ও সঞ্চয় কার্যের ফলে নানা রকম ভূমিরূপ সৃষ্টি হতে দেখা যায়। নদীর ক্ষয়জাত ভূমিরূপ গুলি সাধারণত নদীর পার্বত্য প্রবাহে বা উচ্চগতিতে দেখা যায়, কারণ সেখানে নদীর জলপ্রবাহের গতি বেশি থাকে বলে ক্ষয়কার্য বেশি হয়। নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট বিভিন্ন ভূমিরূপ গুলি হল –
১. I ও V আকৃতির নদী উপত্যকা – পার্বত্য অঞ্চলে প্রবল জলস্রোত ও বাহিত শিলাখন্ডের সঙ্গে নদীখাতের ঘর্ষনের ফলে পাশ্বক্ষয় অপেক্ষা নিম্নক্ষয় বেশি হয়। এর ফলে নদী উপত্যকা সংকীর্ন ও গভীর হয়ে ইংরেজি ‘I’ অক্ষরের আকার ধারন করে।
অনেক সময় নিম্নক্ষয়ের সঙ্গে সঙ্গে সামান্য পাশ্বক্ষয়ও ঘটে। তখন নদী উপত্যকা গভীর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সামান্য চওড়া হয়ে ইংরেজি ‘V’ আকৃতির আকার ধারন করে।
২. গিরিখাত ও ক্যানিয়ন – পার্বত্য অঞ্চলে ব্যাপক নিম্নক্ষয়ের ফলে যে সংকীর্ন ও গভীর নদী উপত্যকার সৃষ্টি হয়। তাকে গিরিখাত বলে। সিন্ধু, গঙ্গা ও শতদ্রু প্রভৃতি নদী তাদের পার্বত্য প্রবাহে বহু গিরিখাতের সৃষ্টি করেছে।শুষ্ক অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের অভাবে নদীর পাড় বিশেষ ক্ষয়প্রাপ্ত হয় না ফলে গিরিখাতের আকৃতি ইংরেজি ‘I’ অক্ষরের মতো হয়। শুষ্ক অঞ্চলের এই গিরিখাত গুলি ক্যানিয়ন নামে পরিচিত।
উদাহরণ – ক্যালিফোর্নিয়ার কলোরাডো নদীর গ্রান্ড ক্যানিয়ন।
৩. জলপ্রপাত – নদীর দৈর্ঘ্য বরাবর ঢালের হঠাৎ পরিবর্তনের জন্য নদীর খাড়া ঢাল বরাবর উপর থেকে নিচে প্রবল বেগে প্রতিত হয়। একে জলপ্রপাত বলে। এই জলপ্রপাত গুলি নানা ভাবে সৃষ্টি হতে পারে। যেমন –
ক) নদীর গতিপথে চ্যুতির সৃষ্টি হলে। যেমন – জাম্বেসি জলপ্রপাত
খ) মালভূমির প্রান্তভাগে নদী খাড়া ভাবে নীচে নামতে বাধ্য হয়। যেমন – সূবর্নরেখা নদীর ওপর হুড্রু জলপ্রপাত।
গ) নদীর গতিপথে আড়াআড়ি ভাবে কঠিন শিলা অবস্থান করলে পাশ্ববর্তী কোমল শিলাস্তরে গিয়ে জলপ্রপাত সৃষ্টি হয়। যেমন – নায়াগ্রা জলপ্রপাত।
ঘ) হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ঝুলন্ত উপত্যকার খাড়া ঢালে জলপ্রপাত সৃষ্টি হয়। যেমন – ওসেমিতি জলপ্রপাত।
৪. খরস্রোত – অনেক সময় নদীর গতিপথে কঠিন ও কোমল শিলা লম্বভাবে অবস্থান করে। ফলে কোমল শিলা পাশ্ববর্তী কঠিন শিলা অপেক্ষা নিচু হয়ে অবস্থান করে এবং নদী ধাপে ধাপে নিচে নামতে থাকে এবং ছোট ছোট জলপ্রপাতের সৃষ্টি হয়। এরুপ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জলপ্রপাত খরস্রোত নামে পরিচিত।
উদাহরন – খার্তুম থেকে আসোয়ান পর্যন্ত নীলনদের গতিপথে ৬ টি বিখ্যাত খরস্রোত লক্ষ করা যায়।
৫. আবদ্ধ অভিক্ষিপ্তাংশ – পার্বত্য অঞ্চলে নদীর গতিপথে শৈলশিরার অভিক্ষিপ্তাংশ অবস্থান করলে নদী সামান্য বাঁক নিয়ে প্রবাহিত হয়। এরুপ অবস্থায় দূর থেকে দেখলে শৈলশিরার অভিক্ষিপ্তাংশ গুলিকে আবদ্ধ অবস্থায় দেখা যায় এবং নদীর গতিপথ আড়াল হয়ে যায়। এরূপ অবস্থাকে আবদ্ধ অভিক্ষিপ্তাংশ বলে।
৬. কর্তিত অভিক্ষিপ্তাংশ – পার্বত্য অঞ্চলে নদীপথের ঢাল হঠাৎ বৃদ্ধি পেলে তীব্র জলস্রোতের প্রভাবে পাশ্ববর্তী শৈলশিরার প্রসারিত অংশ ব্যাপকভাবে ক্ষয় প্রাপ্ত হয় এবং নদী সোজা পথে বয়ে চলে । শৈলশিরার প্রসারিত অংশ ক্ষয় পেয়ে কর্তিত অভিক্ষিপ্তাংশের সৃষ্টি হয়।
৭. মন্থকূপ – উচ্চগতিতে নদীর প্রবল স্রোতের টানে বাহিত শিলাখন্ডগুলি অবঘর্ষ প্রক্রিয়ায় নদীর তলদেশ ও পাড়ের শিলাখন্ডে ছোট ছোট গোলাকার উল্লম্ব গর্তের সৃষ্টি করে। এরুপ উল্লম্ব গর্তকে মন্থকূপ বলে।
৮. প্রপাতকূপ – নদীর গতিপথের যে অংশে জলপ্রপাতের জলধারা সবে এসে পড়ে সেই অংশে প্রবল জলস্রোতের আঘাতে এবং জলঘূর্নি সৃষ্টির ফলে বুদবুদ ক্ষয়ের মাধ্যমে মন্থকূপের থেকে বড়ো গর্তের সৃষ্টি হয়, এদের প্রপাতকূপ বলে।
(আরো ছবি দেখার জন্য ছবিগুলি ডান দিকে সরান
*5 টির বেশি ছবি attach করা যায় না , তাই দুঃখিত।)




