মডেল অ্যাক্টিভিটি টাঙ্গ
পরিবেশ ও ভূগোল
অষ্ঠম শ্রেণি
নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর লেখাে :
১. পৃথিবীর অভ্যন্তরে বিযুক্তিরেখা থাকার কারণ কী?
অপসারী পাতসীমানাকে গঠনকারী পাতসীমানা বলা হয় কেন?
৩. মৃত্তিকা সৃষ্টিতে খনিজের ভূমিকা ব্যাখ্যা করাে।
৪.
ভারতকে কেন উপমহাদেশ বলা হয় ?
Answers
● পৃথিবীর অভ্যন্তরে বিযুক্তিরেখা থাকার কারণ কী?
আজ থেকে প্রায় 460 কোটি বছর আগে পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছিল। তখন পৃথিবী ছিল প্রচন্ড উত্তপ্ত একটি গ্যাসীয় পিণ্ড। পরবর্তীতে পৃথিবী যতই শীতল হতে থাকে অপেক্ষাকৃত ভারী পদার্থ গুলি (লোহার, নিকেল) পৃথিবীর কেন্দ্রের দিকে থিতিয়ে পরে এবং অপেক্ষাকৃত হালকা পদার্থ (এ্যালুমিনিয়াম, সিলিকন) উপরে ভেসে ওঠে।
ভূপৃষ্ঠ থেকে পৃথিবীর অভ্যন্তরে যতই গভীরে যাওয়া যায় পদার্থের ঘনত্ব, চাপ এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে থাকে। ফলে তাপমাত্রা, চাপ, ঘনত্ব, কাঠিন্য প্রকৃতির উপর নির্ভর করে ভূপৃষ্ঠ থেকে পৃথিবীর কেন্দ্র পর্যন্ত সমান বৈশিষ্ট্যযুক্ত কতকগুলি স্তরের সৃষ্টি হয়েছে।
বর্তমানকালে ভূমিকম্প তরঙ্গের গতিবিধি পর্যালোচনা করে পৃথিবীর অভ্যন্তরের স্তর সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। তরঙ্গ গুলি দুটি স্তরের সংযোগস্থলে ভিন্ন আচরণ করে। যা দুটি স্তরের মধ্যে বিযুক্তি রেখা বা বিযুক্তি তল এর উপস্থিতিকে নির্দেশ করে।
সুতরাং, বলা যায় বিভিন্ন স্তরের ঘনত্ব, তাপমাত্রা, চাপ, পদার্থের কাঠিন্যতা এবং তরলতা প্রভৃতি স্তর গুলির মধ্যবর্তীস্থানে বিযুক্তি রেখা সৃষ্টির জন্য দায়ী।
° কনরাড বিযুক্তিরেখা-- সিয়াল ও সীমার মধ্যে অবস্থিত।
• মোহ বিযুক্তিরেখা (30 কিলোমিটার) --ভূত্বক গুরুমন্ডল এর মাঝে অবস্থিত।
• রিপিত্তি বিযুক্তিরেখা (700 কিলোমিটার)-- ক্রফেসিমা এবং নিফেসীমার মাঝে অবস্থিত।
• গুটেনবার্গ বিযুক্তিরেখা (2900 কিলোমিটার)-- গুরুমন্ডল ও কেন্দ্রমন্ডলের মাঝে অবস্থিত।
• লেহমেন বিযুক্তিরেখা (5100 কিলোমিটার)-- অন্তকেন্দ্র মন্ডল এবং বহি কেন্দ্রমন্ডল এর মাঝে অবস্থিত।
(চিত্র attachment)
● অপসারী পাত সীমানাকে গঠনকারী পাত সীমানা বলা হয় কেন?
ভূত্বক কয়েকটি খন্ডে বিভক্ত। প্রত্যেকটি খন্ড কে পাত বলে। পাত গুলি অ্যাস্থেনোস্ফিয়ার এর উপর ভাসমান অবস্থায় রয়েছে ফলে পাত গুলি সচল দুটি পাতের সংযোগস্থল পাত সীমানা নামে পরিচিত । পাত সীমানা তিন পকার যথা অভিসারী ও অপসারী এবং নিরপেক্ষ যখন একটি পাহাড় উপর পাপ থেকে দূরে সরে যায় তখন তাকে অপসারী পাত সীমানা বলে তার দুটি পরস্পর দূরে সরে গেলে মধ্যবর্তী ফাঁকা স্থান থেকে ভূ-অভ্যন্তরে মেঘনা বেরিয়ে আসে এবং জমাট বেঁধে মধ্যবর্তী ফাঁকা স্থান পূরণঃ করে ফলে নতুন সামুদ্রিক ভূত্বক গঠন করে এই কারণে একে গঠনকারী পাঠ সীমানা বলে।
আটলান্টিক মহাসাগরে এর মধ্যভাগে S আকৃতির গঠনকারী পাত সীমানা দেখা যায়।
● মৃত্তিকা সৃষ্টিতে খনিজ সম্পদের ভূমিকা ব্যাখ্যা করো।
শিলা মধ্যস্থ কেলাসিত নির্দিষ্ট রাসায়নিক শক্তি বিশিষ্ট নির্দিষ্ট পারমাণবিক গঠন যুক্ত মৌলিক বা যৌগিক পদার্থ হল খনিজ। এর নির্দিষ্ট আকার ,বর্ণ,কাঠিন্য গঠন দেখা যায় ।
বিভিন্ন খনিজের উপস্থিতি বিভিন্ন প্রকার মৃত্তিকার বৈশিষ্ট্য সৃষ্টি করে। যেমন -
মৃত্তিকার উপরিভাগ বেশ শক্ত এবং লাল রঙের হয় আবার জিপসাম যুক্ত খনিজের প্রভাবে মৃত্তিকার নরম এবং হালকা হলুদ রঙের হয়। নরম ক্যালসাইট থাকলে চুনাপাথরের সৃষ্টি করে এবং মৃত্তিকা যথেষ্ট ক্ষয় প্রবণ হয়।
মাটি অতিরিক্ত খনির যুক্ত হলে মাটির উর্বরতা কম হয় ফলে চাষবাস ভালো হয় না যেমন ছোটনাগপুর (ভারতের খনিজ ভান্ডার) মালভূমির মানুষের প্রধান জীবিকা চাষবাস নয় বরং খনিজ সম্পদ উত্তোলন সুতরাং বলা যায় মৃত্তিকা সৃষ্টিতে খনিজের প্রভাব খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
● ভারতকে কেন উপমহাদেশ বলা হয় ?
হিমালয় পর্বতের দক্ষিনে ভারত ও তার প্রতিবেশী দেশ যেমন নেপাল ভুটান বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা পাকিস্তান মায়ানমার আফগানিস্তান প্রকৃতির সামাজিক মিল খুব বেশি। এদের মধ্যে ভারতের অবস্থান একেবারে মাঝখানে আর আয়তন ও জনসংখ্যার বিচারে ভারতের বৃহত্তম এক কথায় এই অঞ্চলের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু ভারত তাই এই অঞ্চলকে ভারতীয় উপমহাদেশ বলে।