মরু সম্প্রসারণ রােধের তিনটি উপায় উল্লেখ করাে।
ভারতের পূর্ব ও পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমির মধ্যে পাণ
অতিরিক্ত ভৌমজল উত্তোলনের প্রভাবগুলি বর্ণনা করে
Answers
Explanation:
ভূ-অভ্যন্তরের যাবতীয় জলকে সাধারণভাবে ভৌমজল বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে ভৌমজল হল সেই উপপৃষ্ঠীয় জলরাশি, যা শিলার রন্ধ্রে প্রবেশ করে তাকে সম্পূর্ণরূপে সম্পৃক্ত করে এবং অভিকর্ষ প্রভাবের দ্বারা প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। ভূপৃষ্ঠে বৃষ্টিপাত হলে অথবা ভূপৃষ্ঠস্থ তুষার গলে গেলে ওই বৃষ্টিপাত ও তুষার গলা জলের অধিকাংশ অংশই ভূ-পৃষ্ঠের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে নদীতে মিশ্রিত হয়। এই জলের কিছু অংশ বাষ্পীভূত হয় এবং বাকি অংশ (প্রায় 30%) মৃত্তিকা ও শিলার রন্ধ্র দিয়ে ভূ অভ্যন্তরে প্রবেশ করে ভৌমজল রূপে সঞ্চিত হয়। এই ভৌম জলের সঞ্চয় কতকগুলি ভূ প্রাকৃতিক ও জলবায়ুগত অবস্থার উপর নির্ভর করে, যেগুলিকে ভৌমজলের নিয়ন্ত্রক বলা হয়। নিম্নে ভৌমজলের নিয়ন্ত্রকগুলি আলোচনা করা হল-
১)অধঃক্ষেপনের প্রকৃতি☞অধঃক্ষেপনের প্রকৃতির ওপর ভৌমজলের সঞ্চয় নির্ভর করে। শিলাবৃষ্টি, তুষারপাত ইত্যাদি অধঃক্ষেপনের থেকে বৃষ্টিপাত ভৌমজল সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে অধিক কার্যকর হয়। কারণ বৃষ্টির জল যত সহজে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে মৃত্তিকার মধ্যে প্রবেশ করতে পারে, অন্যান্য অধঃক্ষেপন অত সহজে মৃত্তিকার মধ্যে প্রবেশ করতে পারে না। তাই নিরক্ষীয় ও ক্রান্তীয় অঞ্চলের তুলনায় মেরু অঞ্চলে ভৌমজল সঞ্চয়ের পরিমাণ অনেক কম।
২)অধঃক্ষেপনের পরিমাণ☞ভৌমজলের প্রধান উৎস হল অধঃক্ষেপন তথা বৃষ্টিপাত ও তুষারগলা জল। যে অঞ্চলে বৃষ্টিপাত ও তুষারপাতের পরিমাণ বেশি, এই অঞ্চলে ভৌমজল অধিক সঞ্চিত হয়। অপরদিকে যে অঞ্চলে বৃষ্টিপাত ও তুষারপাতের পরিমাণ একেবারে কম, সেই অঞ্চলে ভৌমজলের সঞ্চয় গড়ে উঠতে পারে না।
৩)বৃষ্টিপাতের স্থায়িত্ব☞বৃষ্টিপাতের স্থায়িত্বের ওপর ভৌমজলের সঞ্চয় নির্ভর করে। যে অঞ্চলে অনেকক্ষণ ধরে বৃষ্টিপাত হয়, সেই অঞ্চলে ভৌমজলের সঞ্চয় ভালো হয়। অপরদিকে যে অঞ্চলে অল্প সময় ধরে বৃষ্টিপাত হয়, সেখানে ভৌমজলের সঞ্চয় কম হয়।
৪)বৃষ্টিপাতের তীব্রতা☞বৃষ্টিপাতের তীব্রতার ওপর ভৌমজলের সঞ্চয় নির্ভর করে থাকে। কোন অঞ্চলে যদি হঠাৎ অল্প সময়ের মধ্যে প্রবল বৃষ্টিপাত হয়, তাহলে সেই অঞ্চলে ভৌমজলের সঞ্চয় কম হয়।কারণ এক্ষেত্রে বৃষ্টিপাতের অধিকাংশ জল গড়িয়ে চলে যায়।অপরপক্ষে কোন অঞ্চলে যদি অনেকক্ষণ ধরে অল্প বৃষ্টিপাতও সংঘটিত হয়, তাহলে সেই অঞ্চলে ভৌমজলের সঞ্চয় বেশি হয়। কারণ এক্ষেত্রে বৃষ্টির জল অনেকক্ষণ ভূপৃষ্ঠে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে।
৫)স্বাভাবিক উদ্ভিদের অবস্থান☞স্বাভাবিক উদ্ভিদের অবস্থান পরোক্ষভাবে ভৌমজলের সঞ্চয়ে সাহায্য করে। বনভূমি অঞ্চলে বড় বড় গাছপালা বাষ্পমোচন প্রক্রিয়ায় দেহের অতিরিক্ত জলীয় অংশ বায়ুমন্ডলে ত্যাগ করে। ওই জলীয় অংশ ঘনীভূত হয়ে বৃষ্টিপাত ঘটায়, যা পরোক্ষভাবে ভৌমজল সঞ্চয়ে সাহায্য করে। এছাড়া অতিরিক্ত উদ্ভিদের অবস্থানের ফলে বৃষ্টিপাতের জলপ্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফলে বৃষ্টির জল অধিক্ষণ ভূপৃষ্ঠের উপর দাঁড়িয়ে থাকে। এর ফলে ভৌমজলের সঞ্চয় ভালো হয়। এছাড়া উদ্ভিদের শেকড়ের মধ্য দিয়ে জল ভূ-অভ্যন্তরে প্রবেশ করেও ভৌমজল সঞ্চয়ে সাহায্য করে।
এর পরে আর পারব না গো.......