মনে কর তুমি শিক্ষা সফরে বিশেষ কোন স্তানে গিয়েছো। সেখানে গিয়ে তোমার কোন ধরনের অভিজ্ঞতা হয়েছে তা লিপিবদ্ধ কর
Answers
Answered by
0
HI DEAR SHRESTA HERE PLS FOLLOW ME FRNDS AND THANK MY ANSWER TOO....
কুরআন ও আধুনিক বিজ্ঞান
ভূমিকাঃ
কুরআন ও বিজ্ঞানের সম্পর্ক, কারন থেকে ফলের যুক্তির ধারায় বিস্ময়কর; বিশেষত যখন দেখা যায় যে, ঐ সম্পর্ক হচ্ছে মিলের, অমিলের নয়। আজক্লা অনেকেই মনে করেন যে, ধর্মীয় গ্রন্থের সঙ্গে বিজ্ঞানের ধর্মনিরপেক্ষ ধ্যান-ধারণার মুকাবিলা একটি গোলকধাধা বিশেষ। অল্প কিছু ব্যাতিক্রম ছাড়া, বর্তমান যুগে অধিকাংশ বিজ্ঞানীই বস্তুতন্ত্রের বেড়াজালে আটক হয়ে আছেন। ধর্মকে তারা কিংবদন্তি ছাড়া আর কিছুই মনে করেন না এবং ধর্মীয় ব্যাপারে তারা হয় উদাসীন থাকেন, আর না হয় সরাসরি ঘৃণা পোষণ করেন। তাছাড়া পাশ্চাত্যে যখন ধর্ম ও বিজ্ঞান সম্পর্কে আলোচনা হয়, তখন লোকে ইহুদী ও খৃষ্টান ধর্মের কথাই উল্লেখ করে থাকে, ইসলামের কথা কেউ কখনও চিন্তাও করে না। আসলে ভুল তথ্যের ভিত্তিতে ইসলাম সম্পর্কে এমন ব্যাপক ভুল ধারণা প্রচারিত হয়েছে যে, প্রকৃত ইসলাম সম্পর্কে কোন সঠিক ধারণা পাওয়া সেখানে সত্যিই কঠিন।
ইসলাম ও বিজ্ঞান সম্পর্কে কোন তুলনামুলক আলোচনায় যাবার আগে ইসলামের একটি সংক্ষিপ্ত পরিচয় তুলে ধরা বিশেষভাবে প্রয়োজন। কারণ, পাশ্চাত্যে এ ধর্মটি অতি অল্পই পরিচিত।
কখনও অজ্ঞানতার কারণে এবং কখনও হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে পাশ্চাত্যে ইসলাম সম্পর্কে নানাবিধ ভুল উক্তি ও মন্তব্য করা হয়ে থাকে। এ জাতীয় উক্তির মধ্যে তথ্য বিষয়ক উক্তিগুলিই সবচেয়ে মারাত্মক; কারণ, ধারণার ভ্রান্তি হয়ত ক্ষমা করা যেতে পারে, কিন্তু প্রকৃত তথ্যের স্থলে কোন বানোয়াট তথ্য পেশ করা হলে তা ক্ষমার অযোগ্য হয়ে পড়ে। পাশ্চাত্যের অনেক জ্ঞানী-গুনী ব্যক্তি তাদের রচনায় এমন সরাসরি মিথ্যাও স্থান দিয়েছেন যে, তা পড়ে রীতিমত বিক্ষুব্ধ হতে হয়। এরূপ একটি উদাহরণ 'ইউনিভার্সালিস এনসাইক্লোপিডিয়া' ষষ্ঠ খন্ড থেকে উধৃত করছি। 'গসপেল' শিরোনামের আলোচনায় লেখক বাইবেলের সঙ্গে কুরআনের তুলনা করতে গিয়ে বলেছেন-”কুরআনের ক্ষেত্রে যেমন করা হয়েছে, বাইবেলের ক্ষেত্রে ইভানজেলিস্টগণ তেমন কোন দাবী করেন নি যে, ইশ্বর অলৌকিকভাবে নবীর কাছে যে আত্মজীবনী বর্ণনা করেছেন, তাই তারা পৌছে দিচ্ছেন মাত্র।” কিন্তু কুরআন তো কোন আত্মজীবনী নয়। লেখক যদি কুরআনের কোন নিকৃষ্টতম তরজমাও নেড়েচেড়ে দেখতেন, তাহলে বুঝতে পারতেন যে, কুরআন আসলে শিক্ষাদানের গ্রন্থ; পথ প্রদর্শনের গ্রন্থ। কিন্তু তিনি তা করেননি এবং না জেনে না শুনেই তিনি ঐ মিথ্যা উক্তি করেছেন। অথচ তিনি লিয়নের জেসুইট ফ্যাকালটি অব থিউলজির একজন জ্ঞানবান অধ্যাপক। এ ধরনের মিথ্যা উক্তির ফলেই কুরআন ও ইসলাম সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণার সৃষ্টি হয়েছে।
ইতিমধ্যে অবশ্য নতুন আশার সৃষ্টি হয়েছে। কারণ, বিভিন্ন ধর্ম এখন আর আগের মত অন্তর্মুখী নেই। তারা পরষ্পরের মধ্যে স্মঝোতা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। রোমান ক্যাথলিকরা যে তাদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ পর্যায়ে মুসলমানদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করছেন, এ খবর শুনে সকলেই আশা করি আনন্দিত হবেন। তারা নিজ সম্প্রদায়ের মধ্যেও ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞানতা দূর করা এবং ভ্রান্ত ধারণা নিরসনের জন্য চেষ্টা করছেন।
বিগত কয়েক বছরে যে বিরাট পরিবর্তন এসেছে, এ গ্রন্থের ভূমিকায় আমি তা উল্লেখ করেছি, এবং ভ্যাটিক্যানের অফিস ফর নন-ক্রিশ্চিয়ান এফেয়ার্স প্রকাশিত 'ওরিয়েন্টেশনস ফর এ ডায়ালগ বিটুইন ক্রিশ্চিয়ানস এন্ড মুসলিমস' নামক একখানি পুস্তিকার কথাও বলেছি। ইসলাম সম্পর্কে গৃহীত নতুন দৃষ্টিভঙ্গির বিবরণ আছে বিধায় এ পুস্তিকা একখানি অতিশয় গুরুত্বপূর্ণ দলীল। ১৯৭০ সালে প্রকাশিত উক্ত পুস্তিকার তৃতীয় সংস্করণে”ইসলাম সম্পর্কে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি সংশোধন এবং আমাদের বিদ্বেষ বস্তুনিষ্ঠভাবে পরীক্ষা করে দেখার” আহবান জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে-”যে নজরে আমাদের খৃষ্টান ভাইয়েরা দেখে থাকেন, প্রথম পদক্ষেপে তা ক্রমান্বয়ে পরিবর্তনের জন্য আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এ প্রথম পদক্ষেপই হচ্ছে সবচেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ। বিদ্বেষ ও নিন্দাবাদে বিকৃত যে প্রাচীন ছবি আমরা অতীতকাল থেকে মিরাসী সুত্রে পেয়েছি, তা অপসারন করতে হবে; এবং মুসলমানদের প্রতি অতীতে আমরা যে অবিচার করেছি, তা স্বীকার করে নিতে হবে। আরও স্বীকার করে নিতে হবে যে, খৃষ্টান শিক্ষায় শিক্ষিত পাশ্চাত্যই এ অবিচারের জন্য দায়ী।"
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, অতীতে এমন এক সময় ছিল, যখন যে কোন আকারে বা প্রকারে ইসলামের বিরোধীতা বা শত্রুতা করা হলে এবং এমন কি তা চার্চের ঘোষিত ও পরিচিত শত্রুদের দ্বারা করা হলেও ক্যাথলিক চার্চের উচ্চতম পর্যায়ের নেতারা তাঁর প্রতি সানন্দে সমর্থন জানাতেন। উদাহরণ স্বরূপ, অষ্টাদশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠতম ধর্মযাজক (পনাটিক) হিসাবে পরিচিত পোপ চতুর্দশ বেনেডিক্টের কথা বলা যেতে পারে। ভলটেয়ার তাঁর রচিত”মুহাম্মদ বা ধর্মান্ধতা" (মুহাম্মদ অর ফ্যানাটিসিজম, ফরাসী ভাষায় ম্যাহোমেট আওলে ফ্যানাটিসমে, ১৯৪১) নামক একখানি গ্রন্থ পোপের নামে উৎসর্গ করলে তিনি সেজন্য বিনা দ্বিধায় তাকে আশির্বাদ পাঠান অথচ গ্রন্থখানি ছিল অতিশয় নিকৃষ্টোমানের, ব্যঙ্গ-বিদ্রুপে পরিপূর্ণ একখানি বিয়োগান্ত নাটক এবং কলম ধরতে সক্ষম ও দুরভিসন্ধি দ্বারা প্রণোদিত যে কোন চতুর ব্যক্তিই যে কোন বিষয়ে এরূপ একখানি গ্রন্থ রচনা করতে সক্ষম। মঞ্চে নাটকটি তেমন সফল হয়নি, কিন্তু তথাপি খৃষ্টান দর্শকরা সানন্দে সমর্থন জানিয়েছে এবং একমাত্র সে কারণে শেষ পর্যন্ত ফরাসী বিয়োগান্ত নাটকের সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়।
ভ্যাটিক্যানের ঐ পুস্তকটিতে মোট ১৫০ পৃষ্ঠার বিবরণ আছে এবন ইসলাম সম্পর্কে খৃষ্টানদের প্রাচীন মতবাদ মিথ্যা প্রতিপন্ন করে প্রকৃত সত্য তুলে ধরা হয়েছে।
Similar questions