মনে করন তুমি শিক্কা সফরে কোন বিশেষ স্তানে ভূমন করতে গিয়েছ সেখানে গিয়ে তুমি কোন কোন ধরনে অবিগতা অজন করলে তার এজটি বিবরন লিপিবদ্ধ কর পয়ছ উত্র কি
Answers
দেশের অনেক বিদ্যালয়েই হয় না শিক্ষা সফর। আবার যেসব স্কুলে শিক্ষা সফরের আয়োজন করা হয়, তার অনেকটাই রূপ নেয় পিকনিকে। সফরের শিক্ষাটা পাওয়া হয়ে ওঠে না বেশির ভাগ ছাত্র-ছাত্রীরই। লিখেছেন আরাফাত শাহরিয়ার
ছেলে-মেয়েরা খেলতে খেলতে পরিচিত হয় গাছপালা, ফুল-ফল, পাখি আর চারদিকের প্রকৃতির সঙ্গে। জেনে নেয় ইতিহাস ও বিজ্ঞানের তথ্যগুলো। আর তাই বয়স অনুযায়ী ছেলে-মেয়েদের বিভিন্ন সময় আহসান মঞ্জিল, সোনারগাঁ, মহাস্থানগড় বলধা গার্ডেন, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, ভাসানী নভোথিয়েটার, বোটানিক্যাল গার্ডেন প্রভৃতি স্থানে শিক্ষা সফরে নিয়ে যায় ‘নালন্দা’। ভ্রমণ শিক্ষার অনুষঙ্গ নয়, আবশ্যকীয় বিষয়—এমনটিই মনে করে ব্যতিক্রমধর্মী বিদ্যালয়টি।
আরেক ব্যতিক্রমী বিদ্যাপীঠ অরণি বিদ্যালয়েও শিক্ষা সফর শিক্ষারই একটি অংশ। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক নিনা ভুঁইয়া জানান—পাঠ্য বইয়ের নানা বিষয়—যেমন গাছপালা, পাখি, ফুলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয় বাচ্চাদের; তেমনি পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয় দর্শনীয় স্থানগুলোর সঙ্গেও। স্টাডি ট্যুরের স্থান নির্ধারণ করা হয় বয়সের সঙ্গে মিল রেখে। একেক শ্রেণিকে নিয়ে যাওয়া হয় একেক জায়গায়। এ রকম কিছু বিদ্যালয়ে নিয়মিত শিক্ষা সফর হলেও অনেক বিদ্যালয়েই তা হয় না। হলেও অনেক স্কুল-কলেজে সেটা পিকনিকে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে।
কোনো কিছু চোখে দেখে শেখা আর সে বিষয় মুখস্থ করে শেখার মধ্যে পার্থক্য আছে। পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার, প্রবালদ্বীপ সেন্ট মার্টিনস, দুটি পাতা একটি কুঁড়ির দেশ সিলেট, প্রাচীন বৌদ্ধসভ্যতার ধ্বংসাবশেষ পাহাড়পুর প্রভৃতি সম্পর্কে ছাত্র-ছাত্রীরা বইয়ে পড়ে ও শিক্ষকদের কাছ থেকে শোনে। কিন্তু তারা যদি জায়গাগুলোতে যেতে পারে, তাহলে সে ছবি সারা জীবন মনে থাকবে। শিক্ষা সফরের বিষয়গুলো সহজে আত্মস্থ হয়ে যায় এবং তা কখনোই স্মৃতি থেকে মুছে যায় না। শিক্ষা সফরের অন্যতম আকর্ষণ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে থাকে নাচ, গান, অভিনয়, আবৃত্তি, কৌতুক ইত্যাদি। ফলে একদিকে যেমন বিনোদন হয়, অন্যদিকে তেমনি শিক্ষার্থীদের সুপ্ত প্রতিভা ও সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটে। একটি শিক্ষা সফর সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে স্থান নির্বাচন, যাতায়াতের ব্যবস্থা, খাবার সরবরাহ করাসহ ছাত্র-ছাত্রীদের আনুষঙ্গিক অনেক কাজ করতে হয় মিলেমিশে। এতে তাদের মধ্যে সহযোগিতা ও সম্প্রীতির মনোভাব গড়ে ওঠে। তা ছাড়া এসব কাজ করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দায়িত্ব সচেতনতাও বাড়ে। শিক্ষা সফরে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ করে ছাত্র-ছাত্রীরা নিজ দেশের কৃষ্টি ও সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হতে পারে।
মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ হাফিজুল ইসলাম বলেন, “ঢাকা শহরের যে পরিবেশ, তাতে শিক্ষার্থীরা যন্ত্রের মতো বেড়ে উঠছে। তাদের মানসিক বিকাশে অবশ্যই বছরে অন্তত একবার ঢাকার বাইরে প্রকৃতির কাছাকাছি যাওয়া উচিত। এ ছাড়া শিক্ষার্থীরা ‘দেখা থেকে শেখা’য় বেশি উপকৃত হয়।”