সভ্যতার ইতিহাসের পারসীয়দের দুইটি বড় আবদান বর্ণনা কর বাংলা উত্তর চাই
Answers
ষষ্ঠ শ্রেণি । বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়
উয়ারী-বটেশ্বর
Shareঅ+অ-
[গতকালের পর]
পাল রাজবংশ
পাল রাজবংশ বাংলাদেশের প্রথম দীর্ঘস্থায়ী রাজবংশ। এই বংশের প্রতিষ্ঠাতা গোপাল শতবর্ষব্যাপী কলহ, নৈরাজ্য ও হানাহানির অবসান ঘটিয়ে বরেন্দ্র (গৌড়)-এর সিংহাসনে বসেন। গোপাল যোগ্য শাসকের পরিচয় দেন। ধর্মপাল, দেবপালও এই বংশের বিখ্যাত শাসক ছিলেন।
সেন রাজবংশ
সেনরা দাক্ষিণাত্যের কর্ণাটক থেকে পালদের অধীনে সেনাবাহিনীতে চাকরি করার জন্য এ দেশে এসেছিল। ধীরে ধীরে তারা নিজেদের শক্তি বাড়াতে থাকে। শেষ দুর্বল পাল রাজা মদনপালের রাজত্বকালে বিজয় সেন ক্ষমতায় আসেন। বিজয় সেনের পরে রাজ্য শাসন করেন বল্লাল সেন ও লক্ষ্মণ সেন।
বাংলাদেশ ও বিশ্বসভ্যতা
বাংলাদেশের প্রাচীন সভ্যতাকে জানতে হলে আমাদের ভারত উপমহাদেশের প্রাচীন সভ্যতাকে জানতে হবে। ভারত উপমহাদেশের সিন্ধু সভ্যতাকে বলা হয় প্রথম নগর সভ্যতা। সিন্ধু সভ্যতা মিসরীয় ও মেসোপটেমীয় সভ্যতার সমসাময়িক। অন্যপক্ষে খ্রিস্টপূর্ব সপ্তম শতকে শুরু হওয়া গঙ্গা অববাহিকার দ্বিতীয় নগর সভ্যতা ইউরোপের গ্রিক ও রোমান সভ্যতার সমসাময়িক।
উয়ারী-বটেশ্বর
উয়ারী-বটেশ্বর নরসিংদী জেলার বেলাব উপজেলার দুটি গ্রামের বর্তমান নাম। প্রাচীন ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে অবস্থিত উয়ারী-বটেশ্বর গ্রামে আড়াই হাজার বছর আগে গড়ে উঠেছিল নগর সভ্যতা। ২০০০ সাল থেকে উয়ারী-বটেশ্বর অঞ্চলে প্রত্নতাত্ত্বিক খনন ও গবেষণা শুরু হয়।
উয়ারী-বটেশ্বরে প্রাপ্ত ধাতব অলংকার, স্বল্প মূল্যবান পাথর ও কাচের পুঁতি, চুন-সুরকির রাস্তা, ইট নির্মিত স্থাপত্য, দুর্গ প্রভৃতি একটি সমৃদ্ধ সভ্যতার পরিচয় বহন করে। ছাপাঙ্কিত রৌপ্য মুদ্রা এবং নয়নাভিরাম বাটখারা বাণিজ্যের পরিচায়ক। এখানে ছিল একটি নদীবন্দর। অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কেন্দ্র ছিল উয়ারী-বটেশ্বর।
মহাস্থানগড় (পুণ্ড্রনগর)
প্রায় ২৪০০ বছর আগে বগুড়া শহর থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার উত্তরে করতোয়া নদীর তীরে গড়ে ওঠে মহাস্থানগড়। নগরটি ছিল ধন-সম্পদে পরিপূর্ণ। তাই দুর্গপ্রাচীর ও পরিখা দ্বারা সেটি ছিল সুরক্ষিত। কালের পরিক্রমায় পুণ্ড্রনগর ধ্বংস হয়ে মাটির নিচে চাপা পড়ে ঢিবি ও জঙ্গলে পরিণত হয়। প্রত্নতাত্ত্বিক আলেক্সান্ডার কানিংহাম ১৮৭৯ সালে মহাস্থানগড়ে জরিপ করে অনুমান করেন, এখানকার মাটির নিচে লুকিয়ে আছে বিখ্যাত পুণ্ড্রনগরের ধ্বংসাবশেষ। শুরু হয় খননকাজ। আবিষ্কৃত হতে থাকে নগরের রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, অলংকার, মুদ্রা, পোড়ামাটির শিল্পকর্ম, লিপি ইত্যাদি। এটি ছিল একটি সমৃদ্ধ নগর এবং পুণ্ড্রবর্ধনের রাজধানী। পুণ্ড্রনগরের সঙ্গে বাণিজ্যের কারণে ভারত উপমহাদেশের অনেক নগর-বন্দরের যোগাযোগও ছিল। ফলে বহু বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক লেনদেনও ঘটেছিল।
সভ্যতার ইতিহাসে পারসীয়দের দুটি বড় অবদান
আজকের ইরান দেশটিকে প্রাচীন কালে পারস্য বলা হতো। খ্রিস্টপূর্ব ৬০০ অব্দে পারসীয়রা একটি সভ্যতা গড়ে তোলে। এই সভ্যতা বিকাশে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছিলেন সম্রাট প্রথম দারিয়ুস। তিনি বিভিন্ন দেশ জয় করে পারসীয় রাজ্যকে সাম্রাজ্যে পরিণত করেছিলেন।
সভ্যতার ইতিহাসে পারসীয়দের দুইটি বড় অবদান—
সািম্র্রাজ্য পরিচালনায় দক্ষ প্রশাসনিক কাঠামো
বিশেষ ধর্মীয় কাঠামো
বিশাল সাম্র্রাজ্য ঠিকমতো পরিচালনার জন্য দারিয়ুস গোটা সাম্র্রাজ্যকে ২১টি প্রদেশে ভাগ করেছিলেন। প্রতি প্রদেশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখাার জন্য তিনি তৈরি করেছিলেন সড়ক। তিনি ডাকব্যবস্থা চালু করেছিলেন। এতে দ্রুত ঘোড়া ছুটিয়ে ডাক বিভাগের লোক সব প্রদেশের খবর রাজধানীতে পৌঁছাতে পারত।
পারস্য সভ্যতার অন্য অবদান ছিল বিশেষ ধর্মীয় কাঠামোতে। সর্বপ্রথম ব্যাপকভাবে একেশ্বরবাদী ধর্ম প্রচার করেছিলেন পারস্যের ধর্ম প্রচারক জরাস্ট্রার। পারসীয়দের প্রশাসন পরিচালনার ধারণা পরবর্তী সময়ে বিশ্বের অনেক দেশই গ্রহণ করে। তাদের ধর্ম প্রভাব ফেলে বিশ্বের অনেক ধর্মের ওপর।