নক্ষত্র পতন কাকে বলে ? সৌরজগতের গ্রহগুলোর চিত্রসহ বর্ণনা কর।
Answers
Explanation:
রাতের মেঘমুক্ত আকাশে অনেকসময় মনে হয় নক্ষত্র ছুটে যাচ্ছে বা কোনো নক্ষত্র বুঝি এই মাত্র খসে পড়লো। এই ঘটনাকে নক্ষত্র পতন বলা হয়।
সৌরজগতের ৮ টি প্রকৃত গ্রহ সম্পর্কে কিছু তথ্য নিচে দেয়া হলো: (চিত্র বই দেখে অংকন করবে)
বুধ গ্রহ (Mercury)
সূর্য থেকে সবচেয়ে কাছের গ্রহ হচ্ছে বুধ। পৃথিবীর চাঁদ থেকে আকারে অল্প একটু বড় বুধ গ্রহ। বুধগ্রহের নিজস্ব কোন বায়ুমণ্ডল নেই যার ফলে এখানে প্রায়ই উল্কাপাত হয়ে থাকে। তাই পৃথিবীর চাঁদের মতো বুধ গ্রহের বুকেও অনেক বিশাল বিশাল গর্ত আছে, যা কিনা মহাকাশ থেকেও অবলোকন করা সম্ভব।
শুক্র (Venus)
সূর্যের দ্বিতীয় গ্রহের নাম শুক্র গ্রহ। শুক্র গ্রহ খুবই উত্তপ্ত অবস্থায় থাকে, এমনকি বুধ গ্রহের চেয়ে এর তাপমাত্রা বেশি। শুক্র গ্রহের নিজস্ব বায়ুমণ্ডল আছে তবে এটি বিষাক্ত। এই গ্রহের পৃষ্ঠতলে অত্যন্ত চাপ থাকার দরুন যে কোন মানুষ এখানে অবতরণ করলে নিমেষের মধ্যে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়তে পারেন। বিজ্ঞানীরা শুক্র গ্রহের বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘গ্রিন হাউস প্রক্রিয়া’র অংশ হিসেবে ব্যাখ্যা করেন। আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি যে, সৌরজগতের অন্যান্য গ্রহগুলি নিজের অক্ষের উপর যেই দিকে অনবরত ঘুরে, শুক্র গ্রহ ঘুরে ঠিক তার উল্টো দিকে।
পৃথিবী (Earth)
সূর্যের তৃতীয় গ্রহের নাম পৃথিবী। পৃথিবীকে প্রায়ই পানির জগত নামেও অবহিত করা হয়, কারণ এর উপরিভাগের দুই-তৃতীয়াংশই হচ্ছে পানি। এটিই সৌরজগতের একমাত্র গ্রহ যেটিতে প্রাণের সঞ্চালন হতে পারে। প্রাণের সঞ্চালনের জন্য পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে রয়েছে প্রচুর নাইট্রোজেন এবং অক্সিজেন।
মঙ্গল গ্রহ (Mars)
সূর্যের চতুর্থ গ্রহের নাম মঙ্গল গ্রহ, একটি শুষ্ক ধূলিময় বিস্তীর্ণ এলাকা। আয়রন অক্সাইড ধূলিকণার দরুন এই গ্রহটিকে লালচে বর্ণের দেখায়। পৃথিবীর সাথে মঙ্গল গ্রহের অনেক ধরণের মিল দেখা যায়। এটির রয়েছে পাহাড়-পর্বত, শিলাময় অঞ্চল। পৃথিবীর মতো মঙ্গল গ্রহেও টর্নেডোর আবির্ভাব পরিলক্ষিত হয়। তবে এই টর্নেডোর সাথে থাকে প্রচুর পরিমাণ ধূলিকণা। মঙ্গল গ্রহে তুষারপাতও হয়ে থাকে, পানির অস্তিত্ব পাওয়া গেলেও এটি রয়েছে পুরো জমাটবদ্ধ অবস্থায়। যদিও আজ এই গ্রহটি ঠাণ্ডা এবং মরুভূমির ন্যায়, কিন্তু বিজ্ঞানীদের ধারণা, পূর্বে কোন এক সময়ে এটিতে পানি তরল অবস্থায় ছিল এবং উষ্ণ আবহাওয়া ছিল।
বৃহস্পতি গ্রহ (Jupiter)
বৃহস্পতি হচ্ছে সূর্যের পঞ্চম গ্রহ। বৃহস্পতি একটি দানবাকার গ্রহ। সৌরজগতে এটির আকারই সবচেয়ে বড়। এই গ্রহের প্রায় পুরোটুকুই বিভিন্ন রকমের গ্যাস দ্বারা পরিপূর্ণ। এসব গ্যাসগুলোর মধ্যে হাইড্রোজেন এবং হিলিয়াম উল্লেখযোগ্য। এই গ্রহের ঘূর্ণাবর্তে পাক খেতে থাকা মেঘগুলো নানা গ্যাসীয় মিশ্রণের ফলে বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে। এই গ্রহের মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এর লালচে রঙের বৃহৎ দাগ, যেটি কিনা মূলত একটি দৈত্যাকার ঘূর্ণিঝড়। বিশাল এই গ্রহের উপগ্রহের সংখ্যাও কম না, প্রায় ১২ টি।
শনি গ্রহ (Saturn)
সৌরজগতের ষষ্ঠ গ্রহটি হল শনি গ্রহ। শনি গ্রহ তার বলয়ের জন্য সুপরিচিত। শনি গ্রহের বলয়টি মূলত বরফ এবং শিলা দ্বারা গঠিত। বর্তমান কালের বিজ্ঞানীরা এখনও নিশ্চিত নন যে, ঠিক কিভাবে এই বলয়টির উদ্ভব হয়েছে। এই গ্যাসীয় গ্রহটির প্রায় পুরোটা জুড়েই রয়েছে হাইড্রোজেন আর হিলিয়াম। শনি গ্রহের অগণিত উপগ্রহ রয়েছে। তাদের মধ্যে টাইটান উপগ্রহটি সবচেয়ে বড়।
ইউরেনাস গ্রহ (Uranus)
সূর্যের সপ্তম গ্রহ হচ্ছে ইউরেনাস যেটি কিনা একটি চ্যাপ্টা বলের মতো দেখতে। এটিই একমাত্র দানব গ্রহ যার নিরক্ষরেখা কক্ষপথের ৯০ ডিগ্রী কোণে অবস্থিত অর্থাৎ এটি আড়াআড়ি ভাবে সূর্যের চারিদিকে ঘুরে। নিরক্ষরেখার দরুন ইউরেনাস একটি চরম মৌসুমের শিকার হয়, যেটি প্রায় টানা ২০ বছরের বেশি স্থায়ী হয়। এছাড়া গ্রহটির একটি মেরু টানা ৮৪ পার্থিব বছর সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে। ইউরেনাসের আকার অনেকটা নেপচুনের মতই। ইউরেনাসের আবহাওয়ায় মিথেনের উপস্থিতির দরুন এটির নীল-সবুজ আভা পরিলক্ষিত হয়। এটির অসংখ্য উপগ্রহ আছে। গ্রহের চারদিকে একটি অস্পষ্ট বলয় দেখা যায়।
নেপচুন গ্রহ (Neptune)
সৌরজগতের ৮ম গ্রহের নাম নেপচুন। নেপচুন গ্রহ শক্তিশালী বায়ুপ্রবাহের জন্য খ্যাত। মাঝে মাঝে নেপচুনের এই বায়ুপ্রবাহ শব্দের গতিকেও ছাড়িয়ে যায়। নেপচুন সূর্য থেকে অনেক দূরে, ফলে এটি অনেক ঠাণ্ডা একটি গ্রহ। সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্বের প্রায় ৩০ গুণ দূরে রয়েছে নেপচুন। এটির রয়েছে শিলা দ্বারা গঠিত কেন্দ্র। নেপচুনই প্রথম গ্রহ যেটির অস্তিত্ব গণিতের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা অনুমান করেছিলেন এটি শনাক্ত হওয়ার আগেই। নেপচুন পৃথিবী থেকে প্রায় ১৭ গুণ বড়।
অন্যান্য গ্রহ
‘প্লুটো’ ২০০৬ সালে পূর্ণগ্রহের মর্যাদা হারিয়েছে। এটিকে বামুন গ্রহ হিসেবে অভিহিত করা হয়। প্লুটোর আকার পৃথিবীর চাঁদের চেয়েও ছোট। এই গ্রহটি মাঝে মাঝে নেপচুনের কক্ষপথে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে থাকে। ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৯৯ পর্যন্ত প্লুটোকে একটি গ্রহ হিসেবে অভিহিত করা হত।
‘প্ল্যানেট নাইন’ নামের আরেকটি নতুন গ্রহের সন্ধানও পেয়েছে বিজ্ঞানীরা যেটির কক্ষপথ পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে আরও ৬০০ গুণ লম্বা। সূর্য থেকে এই কক্ষপথ নেপচুনের কক্ষপথেরও ২০ গুণ বেশি দূরত্বে অবস্থিত। তবে এই গ্রহটি এখনও বিজ্ঞানীরা সরাসরি দেখেননি। সৌরজগতের একেবারে শেষ প্রান্তে অবস্থিত বরফীয় বস্তুগুলোর উপর মহাকর্ষীয় প্রভাবের উপর ভিত্তি করে এই গ্রহের উপস্থিতি অনুমিত হয়েছে।
জ্বলন্ত উল্কা থেকে আলোর স্বল্পস্থায়ী পথচলাকে উল্কা বলা হয়। উল্কাকে সাধারণত পতনশীল তারা বা শুটিং স্টার বলা হয়। উল্কাপিণ্ডের কোনো অংশ যদি জ্বলে পুড়ে বেঁচে থাকে এবং প্রকৃতপক্ষে পৃথিবীতে আঘাত করে, তাহলে সেই অবশিষ্ট অংশটিকে উল্কা বলে।
#SPJ3