Social Sciences, asked by tajul1232020, 6 months ago

ইংরেজ শাসনামলে বাংলা রাজনৈতিক পরিবর্তন সংক্ষিপ্ত বণনা কর​

Answers

Answered by payalchatterje
0

Answer:

সমুদ্রপথে ইউরোপীয় বণিকদের সাফল্য, প্রাচ্যের ধন-সম্পদের প্রাচুর্য, ইংরেজ বণিকদেরকেও এ অঞ্চলে ব্যবসা বাণিজ্যে উৎসাহিত করে। এই উদ্দেশ্যে ইংল্যান্ডের একদল বণিক ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নামে একটি বণিক সংঘ গড়ে তোলে। বণিক সংঘটি ১৬০০ খ্রিস্টাব্দে রাণী এলিজাবেথের কাছ থেকে ১৫ বছর মেয়াদি প্রাচ্যে একচেটিয়া বাণিজ্য করার সনদপত্র লাভ করে। এই সনদপত্র নিয়ে কোম্পানির প্রতিনিধি বাণিজ্যিক সুবিধা লাভের আশায় আকবরের দরবারে হাজির হন। এরপর ক্যাপ্টেন হকিন্স ১৬০৮ খ্রিস্টাব্দে জেমসের সুপারিশপত্র নিয়ে বাণিজ্য সমপ্রসারণের লক্ষ্যে সম্রাট জাহাঙ্গীরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তাঁর অনুমতি নিয়ে ১৬১২ খ্রিস্টাব্দে সুরাটে বাণিজ্য কুঠি স্থাপিত হয়। পরবর্তীকালে ১৬১৫ খ্রিস্টাব্দে প্রথম জেমসের দূত হয়ে জাহাঙ্গীরের দরবারে আসেন স্যার টমাস রো। সম্রাটের কাছ থেকে তিনি ইংরেজদের জন্য বাণিজ্যিক সুবিধা আদায় করে নেন। ১৬১৯ খ্রিঃ তিনি ভারতবর্ষ ত্যাগ করেন। ইতোমধ্যে কোম্পানি সুরাট আগ্রা, আহমদাবাদ প্রভৃতি স্থানে বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করে তাদের ভিত্তি মজবুত করে ফেলে।

কোম্পানি তার দ্বিতীয় বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করে মসলিমপট্টমে। এরপর বাংলার বালাসোরে আরেকটি বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করে। এদের শক্তি ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকলে এরা করমণ্ডল (মাদ্রাসা শহর) উপকূলে একটি দুর্গ নির্মাণ করতে সক্ষম হয়। বাংলার সুবেদার শাহ সুজার অনুমোদন লাভ করে তারা ১৬৫৮ খ্রিস্টাব্দে হুগলিতে বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করে। এভাবে কোম্পানি কাশিমবাজার, ঢাকা, মালদহেও বাণিজ্য কুঠি নির্মাণ করে।

১৬৬৮ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় চার্লস পর্তুগীজ রাজকন্যা ক্যাথরিনের সঙ্গে বিয়ের যৌতুক হিসেবে লাভ করেন বোম্বাই শহর। অর্থাভাবে চার্লস ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছে পঞ্চাশ হাজার পাউন্ডের বিনিময়ে শহরটি বিক্রি করে দেন। পরবর্তীকালে এই বোম্বাই শহরই কোম্পানির প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্রে পরিণত হয়।

জব চার্ণক নামে আরেকজন ইংরেজ ১৬৯০ খ্রিস্টাব্দে ১২০০ টাকার বিনিময়ে কোলকাতা, সুতানটি ও গোবিন্দপুর নামে তিনটি গ্রামের জমিদারী স্বত্ত্ব লাভ করেন। ভাগীরথী নদীর তীরের এই তিনটি গ্রামকে কেন্দ্র করেই পরবর্তীকালে কোলকাতা নগরীর জন্ম হয়। এখানেই কোম্পানি ১৭০০ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডের রাজা তৃতীয় উইলিয়ামের নাম অনুসারে ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ নির্মাণ করে। ধীরে ধীরে এটি ইংরেজদের বাণিজ্যিক স্বার্থ রক্ষা এবং রাজনৈতিক স্বার্থ বিস্তারের শক্তিশালী কেন্দ্রে পরিণত হয়।

ইংরেজ কোম্পানির ক্ষমতা আরো বৃদ্ধি পায় যখন দিল্লির সম্রাট ফারুখশিয়ার তাদের বাংলা, বোম্বাই ও মাদ্রাজে বিনা শুল্কে বাণিজ্যের অধিকার প্রদান করেন। একই সঙ্গে নিজস্ব মুদ্রা প্রচলনের অধিকারও কোম্পানি লাভ করে। সম্রাটের এই ফরমানকে ইংরেজ ঐতিহাসিক ওরমে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মহাসনদ বা ম্যাগনা কার্টা বলে উলে- করেন। এইখ অধিকার লাভ করে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি অপ্রতিরুদ্ধ গতিতে অগ্রসর হতে থাকে।

Similar questions