১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বিশাল জনসমুদ্রে
ভাষণ দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি ঘােষণা
করেন, 'এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের
সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, জয় বাংলা। ঐতিহাসিক এই
ভাষণে তিনি প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলতে এবং শত্রুর
বিরুদ্ধে প্রতিরােধ গড়ে তােলার জন্য সবাইকে প্রস্তত থাকার
আহ্বান জানান। ২০১৭ সালের ৩০শে অক্টোবর এই ভাষণকে
বিশ্ব ঐতিহ্যের ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া
আন্তর্জাতিক সংস্থাটির নাম কী?
Answers
Explanation:
১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিকামী বাঙালি জাতিকে মুক্তির বাণী শুনিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান৷ ৭ই মার্চের সেই ভাষণেরই সফল পরিণতি স্বাধীন বাংলাদেশ৷ ৪৭ বছরেও ১৮ মিনিটের সেই ভাষণের আবেদন এতটুকু কমেনি৷
বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ অনেক ভাষায় অনুবাদ হয়েছে৷ গবেষণা হয়েছে৷ পাঠ্যপুস্তকেও ঠাঁই পেয়েছে৷ গত বছরের ৩০ অক্টোবর বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক এ ভাষণকে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয় জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো৷ গবেষকরা বলছেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের একটি বড় বৈশিষ্ট্য হলো এর সার্বজনীনতা এবং মানবিকতা৷ যে-কোনো নিপীড়িত জনগোষ্ঠীর জন্য এই ভাষণ সব সময়ই আবেদন সৃষ্টিকারী৷ এই ভাষণে গণতন্ত্র, আত্মনিয়ন্ত্রণ, স্বাধিকার, মানবতা এবং সব মানুষের কথা বলা হয়েছে৷ ফলে এই ভাষণ দেশ-কালের গণ্ডি ছাড়িয়ে সার্বজনীন হয়েছে৷ আর একজন মানুষ একটি অলিখিত বক্তৃতা দিয়েছেন, যেখানে স্বল্প সময়ে কোনো পুনরুক্তি ছাড়াই একটি জাতির স্বপ্ন , সংগ্রাম আর ভবিষ্যতের দিক নির্দেশনা দিয়েছেন৷ তিনি বিশ্বাসের জায়গা থেকে কথা বলেছেন৷ সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য ভাষায় কথা বলেছেন৷ সবচেয়ে বড় কথা, বঙ্গবন্ধু সাধারণ মানুষের চাওয়া-পাওয়া বুঝতে পেরেছেন৷ তাঁরা যা চেয়েছেন, বঙ্গবন্ধু তা-ই তাঁদের কাছে তুলে ধরেছেন৷ ফলে এই ভাষণটি একটি জাতির প্রত্যাশার আয়নায় পরিণত হয়৷ এই ভাষণই একটি জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে উদ্বুদ্ধ করেছে৷ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালেও এই ভাষণ প্রেরণা জুগিয়েছে৷ আর এতবছর পরও মানুষ তাঁর ভাষণ তন্ময় হয়ে শোনেন৷
১৯৭১ সালের এই দিনে বিশাল জনসমুদ্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিকামী বাঙালি জাতিকে মুক্তির বাণী শোনান৷ এই দিনে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দি উদ্যান) মহান নেতা বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম৷'' তিনি বলেন, ‘‘রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেবো, এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো, ইনশাআলাহ!''