বেদৰ ভাগকেইটা কি কি ?
Answers
Answer:
বেদ (সংস্কৃত: वेद veda, "জ্ঞান") হল প্রাচীন ভারতে লিপিবদ্ধ তত্ত্বজ্ঞান-সংক্রান্ত একাধিক গ্রন্থের একটি বৃহৎ সংকলন। বৈদিক সংস্কৃত ভাষায় রচিত বেদই সংস্কৃত সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন এবং সনাতন ধর্মের সর্বপ্রাচীন পবিত্র ধর্মগ্রন্থ। সনাতনরা বেদকে "অপৌরুষেয়" ("পুরুষ" দ্বারা কৃত নয়, অলৌকিক)[৩] এবং "নৈর্বক্তিক ও রচয়িতা-শূন্য" (যা সাকার নির্গুণ ঈশ্বর-সম্বন্ধীয় এবং যার কোনও রচয়িতা নেই) মনে করেন।
বেদকে শ্রুতি (যা শ্রুত হয়েছে) সাহিত্যও বলা হয়। এইখানেই সনাতন ধর্মের অন্যান্য ধর্মগ্রন্থগুলির সঙ্গে বেদের পার্থক্য। কারণ, সনাতন ধর্মের অন্যান্য ধর্মগ্রন্থগুলিকে বলা হয় স্মৃতি (যা স্মরণধৃত হয়েছে) সাহিত্য। প্রচলিত মতে বিশ্বাসী সনাতন ধর্মতত্ত্ববিদদের মতে, বেদ প্রাচীন ঋষিদের গভীর ধ্যানে প্রকাশিত হয়েছিল এবং প্রাচীনকাল থেকেই এই শাস্ত্র অধিকতর যত্নসহকারে রক্ষিত হয়ে আসছে। সনাতন মহাকাব্য মহাভারতে ব্রহ্মাকে বেদের স্রষ্টা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও বৈদিক স্তোত্রগুলিতে বলা হয়েছে, একজন সূত্রধর যেমন নিপূণভাবে রথ নির্মাণ করেন, ঠিক তেমনই ঋষিগণ দক্ষতার সঙ্গে বেদ গ্রন্থনা করেছেন।
বেদে মোট মন্ত্র সংখ্যা ২০৪৩৪টি।
বেদের সংখ্যা চার: ঋগ্বেদ, যজুর্বেদ, সামবেদ ও অথর্ববেদ। প্রত্যেকটি বেদ আবার চারটি প্রধান ভাগে বিভক্ত: সংহিতা (মন্ত্র ও আশীর্বচন), আরণ্যক (ধর্মীয় আচার, ধর্মীয় ক্রিয়াকর্ম, যজ্ঞ ও প্রতীকী যজ্ঞ), ব্রাহ্মণ (ধর্মীয় আচার, ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও যজ্ঞাদির উপর টীকা) ও উপনিষদ্ (ধ্যান, দর্শন ও আধ্যাত্মিক জ্ঞান-সংক্রান্ত আলোচনা)। কোনও কোনও গবেষক উপাসনা (পূজা) নামে একটি পঞ্চম বিভাগের কথাও উল্লেখ করে থাকেন।
ভারতীয় দর্শনের বিভিন্ন শাখা ও সনাতন ধর্মের বিভিন্ন সম্প্রদায় বেদ সম্পর্কে ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান গ্রহণ করে থাকে। ভারতীয় দর্শনের যে সকল শাখা বেদের প্রামাণ্যতা স্বীকার করে এবং বেদকেই তাদের শাস্ত্রের প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করে, সেগুলিকে "আস্তিক" শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত করা হয়। অন্যদিকে ভারতীয় দর্শনের লোকায়ত, চার্বাক, আজীবক, বৌদ্ধ ও জৈন প্রভৃতি অন্যান্য শ্রামণিক শাখায় বেদের প্রামাণ্যতা স্বীকৃত নয়। এগুলিকে "নাস্তিক" শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত করা হয়। মতপার্থক্য থাকলেও শ্রামণিক ধারার গ্রন্থগুলির মতো বেদের বিভিন্ন স্তরের বিভাগগুলিতেও একই চিন্তাভাবনা ও ধারণাগুলি আলোচিত হয়েছে।