Political Science, asked by anupambiswas7679, 4 months ago

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সংজ্ঞা লেখাে। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিকাশের ধারা সংক্ষেপে আলােচনা করাে।
বিশ্বায়নের সংজ্ঞা লেখাে। বিশ্বায়নের বিভিন্ন রূপ পর্যালােচনা করাে।
উদারনীতিবাদ কাকে বলে? এর বৈশিষ্ট্যগুলি আলােচনা করাে।​

Answers

Answered by djrajesh233
0

Answer:

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সংজ্ঞা লেখাে। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিকাশের ধারা সংক্ষেপে আলােচনা করাে।

Answered by dreamrob
1

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সংজ্ঞা:- বিশেষজ্ঞদের অনেকের মতে, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ধারণা ব্যাপকতর। পামার-এর মতে, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের আলােচনার মধ্যে রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক উভয় বিষয় যুক্ত থাকে। তাঁর মতে, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ধারণা অনেক ব্যাপক। বলাবাহুল্য, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্বসমাজের অন্তর্গত সকল জনগণ ও গােষ্ঠীর সব সম্পর্ক নিয়ে আলােচনা করে। মূলত আন্তর্জাতিক সম্পর্ক রাষ্ট্রগুলির পারস্পরিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক, সামাজিক ও মানবিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলােচনা করে। হলটি-এর মতে, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক পররাষ্ট্রনীতি থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক নীতিবােধ ও নানাবিধ উপায় নিয়ে আলােচনা করে।

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিকাশের ধারা নিচে আলোচনা করা হলো:

  • আদর্শবাদী ধারা :- প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহ ধ্বংসলীলা প্রত্যক্ষ করার পর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে ভাবনাচিন্তার সূত্রপাত হয়েছিল৷ এই পর্যায়ের চিন্তকগণ যুদ্ধ এবং নৈরাজ্যের অবসান ঘটিয়ে এমন এক বিশ্ব গঠনের পরিকল্পনা করেছিলেন যেখানে চিরশান্তি বিরাজ করবে এবং রাষ্ট্রগুলি যুদ্ধ থেকে বিরত থাকবে৷ এই পর্যায়ের একজন নেতৃস্থানীয় চিন্তাক হলেন প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রপতি উড্রো উইলসন৷ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক আলোচনার এই ধারাকে আদর্শবাদী ধারা বলা হয়
  • বাস্তববাদী ধারা:- আন্তর্জাতিক সম্পর্ক আলোচনা আদর্শবাদী ধারার বিরুদ্ধে বাস্তববাদী ধারার সূত্রপাত হয়েছিল৷ এই ধারার অন্যতম প্রবক্তা হলেন ই. এইচ. কার, হ্যান্স জে. মর্গেনথাউ, হার্বার্ট বাটারফিল্ড, জর্জ কেনান প্রমুখ৷ এদের মতে, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ন্ত্রিত হয় ক্ষমতা অর্জন এবং সম্প্রসারণের মাধ্যমে; অর্থাৎ, ক্ষমতাই হল আন্তর্জাতিক সম্পর্কের নিয়ন্তা৷
  • বিজ্ঞানভিত্তিক ধর :- আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষণের বাস্তববাদী তাত্ত্বিকগণ ক্ষমতাকে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের কেন্দ্রে স্থাপন করেছিলেন এবং রাষ্ট্রীয়-আচরণ নিয়ন্ত্রণকারী অন্যান্য বিষয়গুলিকে উপেক্ষা করেছিলেন৷ মূলত এই তত্ত্বের বিরোধিতা করেই গত শতকের মাঝামাঝি সময়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক ধারার সূত্রপাত ঘটে৷ এই ধারার কয়েকজন প্রবক্তা হলেন স্ট্যানলি হফম্যান, কার্ল ডয়েশ্চ রিচার্ড স্নাইডার প্রমুখ। বস্তুতপক্ষে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পরিবর্তিত আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় বাস্তববাদী তত্ত্ব মুখ থুবড়ে পড়েছিল৷ এই অবস্থায় রাষ্ট্রগুলির পারস্পরিক সম্পর্ক বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োগ করা প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল।
  • মার্কসীয় ধারা:- আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষণের উপরোক্ত তিনটি ধারার পাশাপাশি মার্কসীয় ধারাটিও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য৷ মার্কসবাদীরা অর্থনীতিকে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের নিয়ন্ত্রক হিসেবে চিহ্নিত করেছেন৷ তাদের মতে, অর্থনীতির আলোচনা ছাড়া আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সম্পর্কের আলোচনা ভিত্তিহীন৷ লেনিনের লেখা 'Imperialism: The Highest Stage of Capitalism' এবং নিকোলাই বুখারিনের লেখা 'Imperialism and World Economy' গ্রন্থদুটিতে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে মার্কসীয় ধারণার সন্ধান পাওয়া যায়৷

বিশ্বায়ন:- যে বিশ্বায়ন হল এমন একটি প্রক্রিয়া যা পুঁজিবাদের আর্থসামাজিক বিকাশের একটি স্তরের প্রতিনিধিত্ব করে। এককথায় বিশ্বায়ন হল সমগ্র বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে একক বিশ্বের আদর্শ প্রতিষ্ঠা এবং নিবিড় সংযােগসাধনের একটি প্রক্রিয়া।

উদারনীতিবাদ:- উদারনীতিবাদ বলতে সেই মতবাদকে বোঝায় , যা ব্যক্তির স্বাধীন চিন্তার ও মত প্রকাশের অধিকারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে , ব্যক্তিগত সম্পত্তির অধিকারকে অপরিহার্য মনে করে ও রাষ্ট্রের কার্যাবলিকে সীমিত করতে চায় । অর্থাৎ ব্যক্তিস্বাধীনতার অনুকূল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য যে চিন্তাধারার উদ্ভব ও বিকাশ হয় , তাই হল উদারনীতিবাদ । উদারনীতিবাদ ব্যক্তিস্বাধীনতার ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করে বলে অনেকে এই মতবাদকে ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদ বলে অভিহিত করেন ।

উদারনীতিবাদের বৈশিষ্ট্য : উদারনীতিবাদের কতকগুলি বৈশিষ্ট্য ও মৌলিক নীতি পরিলক্ষিত হয় । এগুলি হল—

( 1 ) অবাধ বাণিজ্যনীতি : উদারনীতিবাদ অবাধ বাণিজ্যনীতিকে গুরুত্ব দেয় । উদারনীতিবাদের প্রবক্তাগণ মনে করেন , রাষ্ট্রের কাজ হল বিদেশি শক্তির হাত থেকে ব্যক্তি তথা রাষ্ট্রকে রক্ষা করা এবং রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে জনগণের সুযোগসুবিধাকে সংরক্ষণ করা ।

( 2 ) জনসম্মতি : রাষ্ট্রের সমস্ত ক্ষমতার উৎস হল জনসম্মতি । উদারনীতিবাদ মনে করে ব্যক্তির শক্তিকে উপেক্ষা করে রাষ্ট্রশক্তি স্বীকৃতি লাভ করতে পারে না । এ প্রসঙ্গে T. H. গ্রিন - কে উদ্ধৃত করে বলা যায় — "পাশবিক বলে নয় , সম্মতিই হল রাষ্ট্রের ভিত্তি " ।

( 3 ) অধিকার সংরক্ষণ: উদারনীতিবাদ মনে করে যে , মানুষের কতকগুলি স্বাভাবিক অধিকার আছে । যেমন — জীবনের অধিকার , সম্পত্তির অধিকার প্রভৃতি । ব্যক্তির এই স্বাভাবিক অধিকারগুলি যাতে খর্ব না হয় , সেদিকে রাষ্ট্র লক্ষ রাখে এবং এইসব অধিকারগুলি সংরক্ষণ করে ।

( 4 ) স্বাধীনতা : উদারনীতিবাদে স্বাধীন চিন্তা , স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশ এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার মতো ব্যক্তিগত স্বাধীনতাগুলিকে অপরিহার্য বলে মনে করা হয় ।

( 5 ) দলব্যবস্থার স্বীকৃতি : উদারনীতিবাদ বহুদলীয় ব্যবস্থায় বিশ্বাসী । কারণ একদিকে রাজনৈতিক দল থাকলে নাগরিকগণ তাদের পছন্দমতো দলকে ভোটদানের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন থাকতে পারে ।

#SPJ2

আন্তর্জাতিক সম্পর্কে আরও তথ্যের জন্য, আপনি নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলি উল্লেখ করতে পারেন

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সংজ্ঞা দাও।

https://brainly.in/question/40093755

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সংজ্ঞা?

https://brainly.in/question/47487973

Similar questions