সত্তর বৎসর ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে(বিবৃতি)
Answers
Answer:
সত্তর বৎসর: বিখ্যাত চরমপন্থী নেতা বিপিনচন্দ্র পাল প্রবাসী পত্রিকার সম্পাদক রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের অনুরোধে ওই পত্রিকায় তাঁর আত্মজীবনী ধারাবাহিকভাবে লিখতে শুরু করেন । কিন্তু অসম্পূর্ণ অবস্থাতেই লেখাটি বন্ধ হয়ে যায় । তাঁর মৃত্যুর পর ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে এটি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয় । প্রথমে তিনি তাঁর আত্মজীবনী লিখতে চান নি, কিন্তু শেষ পর্যন্ত কেন তিনি তাঁর আত্মজীবনী লিখতে রাজি হন, তা তাঁর কথাতেই বলা যায় যে— "আমার এই জীবনস্মৃতি বা আত্মচরিত যদি কেবল আমার নিজের কথা হইত, ইহাকে লোকসমাজে প্রচার করা সঙ্গত হইত না । কিন্তু আমার সত্তর বৎসরের জীবনকথা বাস্তবিক এই বাংলাদেশের আধুনিক ইতিহাসের কথা ··· ।" তাঁর রাজনৈতিক জীবনের বহু মূল্যবান তথ্য আমরা তাঁর রচনার থেকে পাই । কীভাবে ধর্মপ্রাণ বাঙালি জাতীয়তাবাদের দীক্ষা গ্রহণ করেছিল, তিনি তাঁর সমাজতান্ত্রিক ব্যাখ্যা দিয়েছেন । সামাজিক ইতিহাসের বেশকিছু তথ্য আমরা তাঁর বই থেকে পাই । তাঁর রচনায় পুরোনো কলকাতার যে বর্ণনা পাওয়া যায়, তা আঞ্চলিক ইতিহাস রচনায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ তর্থ্য বলে বিবেচিত হয় । তাঁর জন্মস্থান শ্রীহট্টের অন্তর্গত পল্লীগ্রামের মানুষের জীবনযাত্রা কেমন ছিল, তিনি তাঁর নিখুঁত বর্ণনা দিয়েছেন । গ্রামাঞ্চলে হিন্দু-মুসলিম সম্পর্কের ওপর তিনি আলোকপাত করেছেন । সেকালের প্রেসিডেন্সি কলেজের সুন্দর বিবরণ পাওয়া যায় তাঁর লেখায় । রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মধ্যে তিনি সুরেন্দ্রনাথ ও আনন্দমোহনের কথা উল্লেখ করেছেন । নবগোপাল মিত্র ও হিন্দুমেলার কথাও তাঁর আত্মজীবনীতে ঠাঁই পেয়েছে । নবগোপাল মিত্র ও রাজনারায়ণ বসুকে তিনি স্বদেশির প্রথম পুরোহিত বলে উল্লেখ করেছেন । ব্রাহ্মসমাজের অনেক কথাই আমরা তাঁর গ্রন্থ থেকে জানতে পারি ।