কি কি প্রয়োজনে শাল গাছ ব্যবহার করা যাই
Answers
Answer:
Explanation:
শাল গাছের ইংরেজি নাম কয়জনে জানে এই মধুপুর ও ভাওয়ালের গড়ের মানুষগুলো। শক্ত ও সুন্দর একটি কাঠের ইংরেজি নাম জানার গুরুত্বপূর্ণ দিক তেমন না থাকলেও এই গাছ সম্পর্কে জানা দরকার অনেক বেশি। ডিপ্টেরোকার্পাসিয়া গোত্রের অন্তর্গত একটি উদ্ভিদ এই শাল গাছ। এই গাছটির বংশবিস্তার প্রাকৃতিকভাবেই হয়। কিন্তু নির্দিষ্ট জাতের মাটি ও আবহাওয়ার তারতম্যের বড় ভূমিকা আছে এই গাছের বংশবিস্তারে। বাংলাদেশে ভাওয়াল ও মধুপুরের গড়ে গড়ে ওঠা বনে এই গাছের আধিক্য থাকলেও গাছটি কিন্তু বিলুপ্ত হতে পারে যে কোনো এক সময়। ধারণা করা হয়, এটি ভারতবর্ষের স্থানীয় গাছ। দক্ষিণ হিমালয় থেকে মিয়ানমার পর্যন্ত এই গাছ প্রচুর দেখা যায়। বাংলাদেশ এবং ভারতের আসাম, পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, উড়িষ্যা, হরিয়ানার শিবালিক পাহাড়ে এই গাছ পাওয়া যায়। ফাল্গুন মাস ছাড়া এই গাছে প্রচুর পাতা সব সময়ই দেখা যায়। এই কারণে একে প্রায় চির সবুজ বৃক্ষ বলা যায়। আয়ুর্বেদ ক্ষমতাও আছে এই গাছের। এর আঠা রক্ত-আমাশয় নিবারণ করে। আগুনে দিলে আঠা থেকে সুগন্ধ বের হয়। এই গাছ থেকে উৎপন্ন ধূপ পাইন গাছের ধূপের মতোই। শাল কাঠ খুব শক্ত প্রকৃতির। খয়েরি রংয়ের এ কাঠ বিভিন্ন ধরনের খুঁটি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। পলিশ ভালো না হওয়ায় এ কাঠ ফার্নিচারের জন্য ব্যবহার কষ্টসাধ্য হলেও এই কাঠ ভার বহনে ব্যবহার খুব জনপ্রিয়। রেললাইনের ¯িøপার হিসেবে ব্যবহার খুব জনপ্রিয়। শাল গাছের প্রাকৃতিক গুণাবলিও অনেক। চির সবুজ বৃক্ষ হওয়ায় বেশি পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড গ্রহণ সক্ষম এ গাছটি প্রকৃতির ভারসাম্যকে ঠিক রাখার জন্য কাজ করে যায় নিরবধি। শাল গাছের শক্ত বাকল মাটির ক্ষয় রোধ করতে সক্ষম। গাজীপুর, মধুপুরের পাহারের অন্যতম বৈশিষ্ট্য রক্ষাকারী এ শাল গাছ এটেল মাটির বিশেষত্বকে আরো অনন্য করে তুলেছে। মাটি দূষণ রোধেও শাল গাছের শিকড় কাজ করে যায়। এই শাল গাছের আধিক্য বজায় রাখার জন্য এই গাছ রোপণ করার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। ইদানীং দেখা যায় যেখানে শাল গজারি গাছ ছিল সেখানে অন্য গাছ রোপণ করে বন সবুজায়ন করা হয়। কিন্তু গাজীপুর, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহের কিছু এলাকা ও দিনাজপুরে এই গাছের জন্য আবাসভূমি। কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের কাছে আবেদন অধিকতর প্রকৃতিবান্ধব শাল গাছের চারা বিপণনের আওতায় আনা প্রয়োজন। এ বিষয়ে আপনাদের সুদৃষ্টি কামনা করছি। এতে করে আবার গাজীপুরসহ দেশের উত্তরাঞ্চলের এই জায়গাগুলো হয়ে উঠতে পারে শাল বৃক্ষের অসাধারণ ভূমি। শুধু তাই নয়, মাটির ক্ষয়রোধ ও মাটির বিশুদ্ধতা রক্ষার জন্যও এই গাছের অবদান অনেক। আশা করি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আরো ফলপ্রসূ পদক্ষেপ নেবেন।