কবি জোনাকীর আলো কেন ভালো লাগে বলেছেন
Answers
Answer:
জোনাক এক বিস্ময়কর আলোকিত পোকা ! কিন্তু জোনাকিরা কোথা থেকে পায় এই মিষ্টি এবং চোখ-জুড়ানো আর মন-ভুলানো আলো? কেউ কখনো কি ভেবেছেন, জোনাকি পোকা ঠিক কি কারণে এবং কিভাবে আলো জ্বালিয়ে রাতের আকাশ ভরিয়ে তুলে? রাতের বেলায় জোনাকিরা মূলত মিটমিট আলো জ্বালিয়ে আমাদের আনন্দ দেয়ার জন্য ঘুরে বেড়ায় না। তারা ঠিক কি কারণে আলো জ্বালাতে সক্ষম এবং কেন আলো জ্বালিয়ে ঘুরে বেড়ায়। জোনাকি পোকার দেহ থেকে আলো বিচ্ছুরণের মূল মাধ্যম হলো লুসিফারিন (luciferin) নামক একটি রাসায়নিক পদার্থ। জোনাকি পোকার দেহে এই কেমিক্যালটি উৎপাদন হয়, যা বাতাসের অক্সিজেনের সাথে মিশে আলো তৈরি করে। এর থেকেই আমাদের মনে হয় জোনাকি পোকা আলো বিচ্ছুরণ করে। গ্রীষ্মকালে শুধুমাত্র আমাদের বিনোদন যোগাতে জোনাকি পোকা আলো জ্বালিয়ে ঘুরে বেড়ায় না। এর পেছনে একটি বিশেষ কারণ রয়েছে। এই সময়ে পুরুষ জোনাকি মেয়ে জোনাকিদের তার আলোর সংকেত দিয়ে তার মনের কথাগুলো জানায়, আগ্রহী নারী জোনাকিটি আলোর সংকেতে তার ইতিবাচক উত্তর জানিয়ে দেয়। এরপরে তারা কম গাছপালাপূর্ণ কোনো জায়গায় মিলিত হয়। তাই সঙ্গীকে আকর্ষণ করার নিমিত্তেই জোনাকি পোকা রাতের বেলায় আলো জ্বেলে থাকে। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, জোনাকি পোকার পেটের পেছনের অংশ ঝকঝকে, স্বচ্ছ। তার ভেতরে থাকে একধরনের স্ফটিকস্বচ্ছ কোষ বা রাসায়নিক বস্তু, যা এনজাইম অর্থাৎ বিশেষ জৈব রাসায়নিক পদার্থের বিক্রিয়ায় ভেঙে যায়। আর ভাঙতে গেলেই শক্তি খরচ হয়; তো, সেসময় কিছুটা শক্তি আলোর আকারে বের হয়, যা আমরা অন্ধকারে দেখতে পাই। জোনাকির এই আলো বিচ্ছুরিত হয় সামান্য বিরতি দিয়ে দিয়ে। তাইতো আমরা দেখতে পাই, আলো একবার জ্বলছে, আবার নিভছে; আবার জ্বলছে.. .. নিভছে.. ..। কবি এই আলো জ্বলার দৃশ্য দেখে লিখেছেন- ‘জোনাকির আলো নিভে আর জ্বলে শাল মহূয়ার বনে/ কবিতা লিখার প্রহর এসেছে রাতের নির্জনে।’ আমাদের দেশে শুধুমাত্র সবুজ আলোর জোনাকি পোকা দেখা যায়। কিন্তু অন্যান্য অনেক দেশে লাল আলো বিচ্ছুরণকারী জোনাকি পোকারও দেখা মেলে।
জোনাকি পোকার কথা আমরা জানলাম। জোনাকির আলোর কথা জানা থাকলেও এ ধরনের আরও কিছু আলোর পোকার কথা আমরা অনেকেই জানি না। সমুদ্রে এক ধরনের পোকা আছে যারা দল- বেঁধে জলের ওপর ভেসে ওঠে আলোর চক্র বানায়। আর তার সাহায্যে তাদের খাদ্য সংগ্রহ করে। এ এক বিচিত্র ব্যাপার। আলোগুলোও বেশ জোরালো হয়ে থাকে। বারমুডা এলাকায় এই জাতের পোকা দেখতে পাওয়া যায়। এরা সাধারণত পূর্ণিমার ঠিক তিনদিন পরে এভাবে পানির ওপর ভেসে ওঠে আলোর বৃত্ত রচনা করে। সময়ের কোনো হেরফের হতে দেখা যায়নি। জোনাকির দেহে সবুজ আলো আমরা দেখেছি। কিন্তু কোনো পোকা একই সঙ্গে সবুজ আলো ও লাল আলো দেহ থেকে বের করতে পারে এ রকম ঘটনা বিরল। ব্রাজিলের রেল রোড ওয়ার্ম নামে এক ধরনের পোকার দেহ থেকে লাল ও সবুজ আলো বের হয়। আসলে এই আলোর সৃষ্টি হয় দেহের নির্গত রাসায়নিক পদার্থ থেকে। এরা যখন পরপর লাল-সবুজ আলো ছড়িয়ে ঘোরাফেরা করে তখন দেখতে বেশ সুন্দর লাগে। একশ্রেণীর পোকা আবার পাহাড়ের গুহায় তাদের বাসায় আলো ছড়িয়ে বসবাস করে। গুহার ভেতর হাজার হাজার আলো জ্বালায়। গুটিপোকা যখন থাকে তখন পুরো গুহা আলোয় ঝলমল হয়ে ওঠে। আর এসব পোকার শরীর থেকে জ্বলন্ত সুতার মতো এক ধরনের পদার্থ বেরিয়ে আসে। তার সাহায্যে এরা খাদ্য সংগ্রহ করে। নিউজিল্যান্ডের ওয়েলিংটন থেকে প্রায় ২০০ মাইল দূরে ওয়েই টোৎসা অঞ্চলে এই পোকা দেখা যায়।
what dose the old man ask the poet