History, asked by akhimajhi613, 22 days ago

নিম্নবর্গের ইতিহাসচর্চা প্রথাগত ইতিহাসচর্চা থেকে কতটা আলাদা বলে তুমি মনে করাে ? ইতিহাসের যুগ বিভাজনের ক্ষেত্রে ভারত ও পাশ্চাত্যের দৃষ্টিভঙ্গিগত পার্থক্য রেখাচিত্রের মাধ্যমে দেখাও। ৪. উপযুক্ত তথ্য সহযােগে নীচের ছকটি পূরণ করাে : সামাজিক বৈশিষ্ট্য অবদান সভ্যতার নাম সময়কাল যুগ / পর্ব অর্থনৈতিক বৈশিষ্ট্য ক) হরপ্পা সভ্যতা খ) মিশরীয় সভ্যতা গ) সুমেরিয় সভ্যতা​

Answers

Answered by priyankaghosh17718
5

Answer:

nimnoborger etihaschorcha prothagoto etihaschorchar theke koto ta alada bole tui mone koro ?etihaser jug bivajoner khettre varot o praschatter dristivongigoto partthoko rekhachittro maddhome dhekau. upojukto totto sohojoge nicher chokti puron koro:samajik boysisto obodan sovvotar nam somoykal jug/porbo ortonoytik boysito. horropa sovvata misorio sovvota sumeriyo sovvota

Answered by triasha27
3

Answer:

১৯৮২ সালে প্রথম যখন নিম্নবর্গের ইতিহাস সংকলন বের হয়, তখন সারস্বত সমাজে আলোচনা-সমালোচনার ঢেউ বয়ে যায়। আলোচনা যত হয়েছিল, সমালোচনা হয়েছিল এর কয়েক গুণ বেশি। পণ্ডিত মহলে নিম্নবর্গের ইতিহাস চর্চার পদ্ধতি নিয়েও কম কথা ওঠেনি। সমালোচনা এসেছিল জ্ঞান চর্চার সব মার্গ থেকেই। ইতিহাস চর্চার সাম্রাজ্যবাদী ঘরানা যেমন এর কড়া সমালোচনা করেছিল, জাতীয়তাবাদী ঘরানাও সেই একই কাজ করে। এমনকি কট্টর মার্কসবাদীরাও নিম্নবর্গের ইতিহাস চর্চাকে ভালো চোখে নেয়নি। তবে একটি কথা কোনভাবেই অস্বীকার করা যাবে না যে, নিম্নবর্গের ইতিহাস, ইতিহাস তত্ত্বে ও চর্চায় একটি বড় পরিবর্তন এনেছে। প্রথাগত ইতিহাস চর্চার ধারায় একটি বড় ধাক্কা দেয় নিম্নবর্গের ইতিহাস চর্চাগোষ্ঠী। পূর্ববতী ইতিহাস চর্চার সব ঘরানার আবির্ভাব পাশ্চাত্য থেকে। পাশ্চাত্যের তথ্য ও ডিসকোর্সেই বিশ্বজুড়ে নির্মিত হত ইতিহাস। নিম্নবর্গের ইতিহাস সেক্ষেত্রে পাশ্চাত্যের ইতিহাস তত্ত্বের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়। যুগ যুগ ধরে যে ’পাশ্চাত্য’ ধারণা পোষণ করে এসেছে এবং সৃষ্টি করে যে- -প্রাচ্য অর্থাৎ এশিয়া এবং আফ্রিকার দেশগুলো অনড়, স্থবির, অচল ও অপরিবর্তনীয়। নতুন কিছু এই অঞ্চল থেকে হওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু পাশ্চাত্যের এই ডিসকোর্সে নুনের ছিটা দিয়ে দিয়েছে নিম্নবর্গের ইতিহাস চর্চাকারীরা। পাশ্চাত্য ’তৃতীয় বিশ্বের’ আখ্যা দিয়েছে যে অঞ্চলকে সেই ’তৃতীয় বিশ্ব’ থেকেই এমন ইতিহাস তত্ত্ব খাড়া হয়েছে যা উপনিবেশবাদী, পুঁজিবাদী ও সাম্রাজ্যবাদী ডিসকোর্সকে তোপের মুখে ফেলেছে। ইতিহাসে চিরবঞ্চিত নিম্নবর্গকে রিপ্রেজেন্ট করেছে তার আঙিনায়। আবেগ দিয়ে এই নির্মাণ নয়, তাত্ত্বিকভাবে নির্মাণ, যৌক্তিকভাবে নির্মাণ। সাম্রাজ্যবাদী- উপনিবেশবাদী এবং জাতীয়তাবাদী উচ্চ বর্গীয় ইতিহাস চর্চাকারীরা সব সময় দেখিয়ে এসেছেন নিম্নবর্গের কৃষক-শ্রমিক শ্রেণীর কোন রাজনৈতিক চেতনা নেই। কিন্তু নিম্নবর্গের ইতিহাস চর্চাকারীরা তাদের চর্চিত ইতিহাসে প্রমাণ করেছেন ইতিহাসে নিম্নবর্গের অসিতত্ব, চৈতন্য, প্রভা এবং একইভাবে সীমাবদ্ধতা।

অনেকে হয়তো বলতে পারেন, নিম্নবর্গের ইতিহাস সত্তরের দশকে লেখা ’হিস্ট্রি ফ্রম বেলো’র অনুকৃতি। এর নতুনত্বটা কি? কথাটা যারা বলবেন, ইতিহাস চেতনায় তাদের সীমাবদ্ধতা আছে। সত্তরের দশকে ক্রিস্টোফার হিল, এডোয়ার্ড টমাস এবং এরিক হবস্‌বমের ধারা অনুসরণ করে তল থেকে ইতিহাস লেখার একটা ধারা প্রচলিত হয়েছিল। ইউরোপের যন্ত্রসভ্যতা আর পুঁজি পসারিদের পায়ের তলায় পিষ্ট জনমানুষের কথা তুলে ধরার দাবি করেছিলেন ’হিস্ট্রি ফ্রম বেলো’র ইতিহাসবিদরা। কথাটা সত্যি। পদপিষ্ট মানুষের কথা তুলে ধরেছিলেন এই ইতিহাসবিদরা। কিন্তু এই জনমানুষ, শোষিত মানুষের কথা কি তুলে ধরেছিলেন তারা? কতোটা রিপ্রেজেন্ট করেছিলেন তাদের? কিভাবে রিপ্রেজেন্ট করে ছিলেন তারা নিম্নবর্গকে! বিষয়টা একটু খতিয়ে দেখার অবকাশ আছে। তারা যেভাবে প্রদর্শন করেছিলেন শোষিত, নির্যাতিত নিম্নবর্গের কৃষক-শ্রমিক শ্রেণীকে তা হলো - এই শোষণ অনিবার্য। ইতিহাসে তাদের অবস্থান শুধু শোষিত এবং পিষ্ট হিসেবেই। তাদের রচিত ইতিহাসে নিম্নবর্গ প্রতিবাদ -প্রতিরোধহীন, রাজনৈতিক চেতনাহীন, বাকহীন একজন মানুষ। ক্রন্দসী এই ইতিহাসে নিম্নবর্গ উপস্থাপিত হয়েছে রাজনৈতিক চেতনাহীন জনগোষ্ঠী হিসেবে। আদতে এই ’হিস্ট্রি ফ্রম বেলো’ও কোন নতুন কাঠামো দাঁড় করাতে পারেনি। ’হিস্ট্রি ফ্রম বেলো’র অবস্থানও সাম্রাজ্যবাদী ও উপনিবেশবাদী ইতিহাস কাঠামোর ভেতরেই। এ ধারার তাত্ত্বিক গুরু হব্‌সবমের তত্ত্বও পরিষকারভাবে সে কথা বলে দেয়। হব্‌সবম ভারতীয় উপমহাদেশের উপনিবেশ কালের প্রথম দিক্‌কার কৃষক সংগ্রামগুলোকে বলেছেন প্রাক-রাজনৈতিক। অর্থাৎ এ আন্দোলন সংগ্রামের কোন রাজনৈতিক চেতনা নেই। হব্‌সবমের এ তত্ত্বের অসারতা প্রমাণ করেছেন সিরাজুল ইসলাম, মুনতাসীর মামুন ও সৈয়দ আনোয়ার হোসেন সম্পাদিত বাংলাদেশের সশস্ত্র সংগ্রামের ইতিহাস গ্রন্থে। নিম্নবর্গের ইতিহাসকাররা এই ’হিস্ট্রি ফ্রম বেলো’ থেকে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র। আর কেউ যদি বলেন, নিম্নবর্গের ইতিহাসবিদরা এই ইতিহাস থেকে উদ্দীপনা পেয়েছে, সহযোগিতা পেয়েছে তাহলে বলব সব ইতিহাসের কাছ থেকেই শেখার আছে। সেক্ষেত্রে ’হিস্ট্রি ফ্রম বেলো’ কেনো, বুর্জোয়া ইতিহাস তত্ত্ব থেকেও অনেক শেখার আছে ইতিহাসবিদদের। এর ফাঁক-ফোকর, কূট-কৌশল, ফন্দি, এগুলো অবশ্যই নখদর্পণে থাকতে হবে জনমানুষের পক্ষের একজন ইতিহাসবিদের।

Similar questions