মাছ ধরলে কি হয় এই প্রশ্ন উত্তরে আব্দুর কলমের বাবা কি বলেছিলেন নিজের ভাষায় লেখ
Answers
Explanation:
ভরা সন্ধ্যায় সোফায় শুয়ে ছিলাম। পাশ ফিরতে গিয়ে মনে হলো দরজায় কেউ। ঘাড়টা যে বেতের ওপরে পড়েছিল, খেয়াল করিনি, ঘাড়ে মালিশ করতে করতে উঠলাম। দরজা খুলে দেখলাম কেউ নেই। যেই লাগাতে যাব, ডানদিক থেকে এগিয়ে এল এক বিড়াল। কালো কুচকুচে। সবুজ চোখ আমার দিকে তাক করে এক ‘ম্যাঁও’ শব্দে যেন বহু কথা বলল। তারপর কিছু বোঝার আগেই তিরের মতো ঢুকে পড়ল ঘরে। সে জানতই, বুঝতে পারলে দরজা লাগিয়ে দেব। কী মানে হয় এসব উটকো ঝামেলার! তবে বিড়াল বরাবর পছন্দ করি, ভাবলাম থাক নাহয় কিছুক্ষণ। এমনিতে আমি একাই, বছর খানেক ধরে একতলার একটা রুম ভাড়া করে থাকতাম। ওপরে অনেকগুলো বাসা, তাদের কারও বিড়াল হবে হয়তো, যদিও ওকে আগে দেখিনি। তখন সেসব নিয়ে মাথাও ঘামাইনি। এর এক সপ্তাহ আগে পিউ আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। সেই ভাবনা ছাপিয়ে অন্য চিন্তা মাথায় বেশিক্ষণ খেলত না। সে সময় কোনো রকমে অফিসে যাই, বিষণ্ন মন নিয়ে মজার মজার কার্টুন আঁকি। সম্পাদক আনিস ভাই খুব খুশি; বলতেন, ‘নিশ্চয়ই কোনো মানসিক চাপে আছ, না হলে কাজ এত ভালো হওয়ার কথা না।’
ঘুম পুরো হয়নি বলে আবার সোফায় ফিরে গেলাম। কিন্তু বিড়ালের গতিবিধি দেখার আশায় চোখ আর লাগল না। দেখলাম এটা শুঁকছে, ওটার নিচে উঁকি দিচ্ছে। বাইরে অন্ধকার হয়ে গেল কি না, ভেতর থেকে বোঝা যেত না, ঘরে বরাবরই লাইট জ্বালিয়ে রাখতে হতো। তাতে অবশ্য আমার কোনো ক্ষতি ছিল না, বিদ্যুৎ বিল ভাড়ার মধ্যেই গোনা। সূর্যের আলোয় ঘরের জিনিসপত্রগুলো দেখতে পেতাম না, এই যা। চোখ বুজে ছিলাম কিছুক্ষণ, খুলে দেখলাম এক হাত দূরে বিড়াল। আমার দিকে তাকিয়ে স্থির বসে আছে। সরাসরি তার দিকে তাকালাম। সে চোখ সরাল না। উঠে বসলাম। সে তাকিয়ে থাকল। ভাবলাম খাবার চায় নাকি—কী দেওয়া যায়। হঠাৎ আওয়াজ শুনলাম, ‘আমার পেট ভরা।’ গলাটা ভারী। চমকে তাকালাম আশপাশে। ঠিক তখনই শুনলাম, ‘এই যে, এখান থেকে বলছি। বিড়ালরা যত পায় তত খায়, এটা ঠিক না। তাদেরও একসময় পেট ভরে যায়।’ আমি সোফার সঙ্গে সেঁটে গেলাম; কী বিপদ, পিউ চলে গেল বলে কি আমার মাথাটাই গেল!
‘তোমার মাথা ঠিকই আছে টুকটাক ঝামেলা ছাড়া।’
একে তো শুদ্ধ বাংলায় কথা বলা বিড়াল, তার ওপরে মাইন্ড রিডার। চিৎকার করে অজ্ঞান যখন হইনি, তখন মনে হলো শুনেই দেখি কী বলতে চায়।
‘কী ঝামেলা বলো তো?’
‘এই যে, তুমি সামান্য বেতের সোফায় ঘুমিয়ে আছ, আরামেই তো আছ, কিন্তু পিউ থাকলে কী হতো?’
বললেই হলো? বিড়াল ভেবেছে বেতের সোফা খুব গরিবি জিনিস। মাথা খারাপ! তাহলে আর গুলশানের পায়ের কাছে মহাখালীতে বেতের দোকানগুলো গজিয়ে উঠত না। আনিস ভাই সোফা বদলানোর সময় পুরোনো সোফাসেট নামমাত্র দামে দিয়ে দিলেন বলেই না এখন এর ওপরে ঘুমিয়ে আছি। তবে পিউ এমন শক্ত জায়গায় ঘুমানো তো দূরের কথা, আরাম করে বসতেও পারবে না। দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললাম, ‘কী আর হতো, খুব কষ্টে থাকত। বাবার অত বড় বাড়ি ফেলে সে এই ঘুপচির মধ্যে এসে ঢুকতে পারত না। চলে যেতই, আগে না হয় পরে।’
‘প্রেম করার সময়ে খেয়াল ছিল না?’
‘তখন কি জানতাম আর্টিস্ট হব নাকি দৈনিকের কার্টুনিস্ট?’ বলতেই অনেক কিছু মনে পড়ল। হেয়ার রোডের শিশুগাছগুলোর নিচে হাঁটতে হাঁটতে আমি আর পিউ কত কথা বলতাম, আমার চিত্র প্রদর্শনী হবে, আর্ট গ্যালারি বানাব, আরও কত কী।
‘ভালো যুক্তি। তা, আমাকে এখন একটু টুনা মাছ দাও দেখি, ওই যে টিনে থাকে, ওটা।’
‘সে আমি কই পাব?’
আজব বিড়াল তো! মান না মান ম্যায় তেরে মেহমান?
‘আচ্ছা, নেই তবে তোমার কাছে।’
চার চেয়ারের খাবার টেবিলটার দিকে হতাশ দৃষ্টি দিল বিড়ালটা। মনে মনে ভাবলাম, পিউ এ বাড়িতে এলে ঠিক এই অবস্থা হতো। বিড়ালকে কথাটা বলার প্রয়োজন দেখলাম না। সে তো আমার মনের কথা বুঝতেই পারছিল। হতাশ বিড়াল একেবারে চুপসে গেল। হাত গুটিয়ে ধুপ করে শুয়ে পড়ল মেঝেতে। রাতে খাবার সময় প্লেট থেকে এক স্লাইজ পাউরুটি দিলাম তাকে। বললাম, ‘বাড়ি যাবে না?’ গেলেই বাঁচি, না হলে কী খাবার চায় না চায়। সে বলল, ‘বাড়ি নেই।’
‘নেই মানে? কোথা থেকে আসছ?’
‘কোথাও থেকে না। যেখানে দরকার সেখানেই থেকে যাই।’
কেন যেন চোখ ভিজে গেল শুনে। মনে মনে বললাম, আমার কাউকে দরকার নেই; পিউ গেছে, বেশ হয়েছে। খুব করে হাত-পা চেটে বেড়াল উল্টো দিকে ফিরে ঘুমিয়ে গেল।
পরদিন অফিসে যাওয়ার জন্য দরজা খুলতেই ছুটে বেরিয়ে গেল বিড়ালটা। কথা যতই বলুক, আদতে তো বিড়ালই, প্রাকৃতিক ব্যাপারস্যাপার আছে। যা-ই হোক, গেছে। নিশ্চিন্তে অফিসে এলাম। স্যাটায়ারের জন্য কিছু কার্টুন আঁকার কথা। কিন্তু যা আঁকি, সব বিড়ালের মতো হয়ে যায়। সারাদুপুর বিড়ালের মুখের আদলে নানা ছবি আঁকতে আঁকতে ক্লান্ত হয়ে গেলাম। পাশের টেবিলের জামিল বলল, ‘ভাই, আপনারে আইজ বিলাইয়ে পাইছে।’ ভালো করে ছবিগুলোতে তাকিয়ে দেখলাম, মহা সমস্যা!
পত্রিকা অফিসে কে কার খোঁজ রাখে, দুপুরের পরে বাসায় চলে এলাম। বিড়াল এল খানিক বাদেই। দরজায় এমনভাবে নক করছিল যে মনে হলো মানুষ। নরম থাবা দিয়ে তো ওই শব্দ করা সম্ভব নয়, মাথা দিয়েই করেছে। আহারে, মাথায় হাত বুলিয়ে দিলাম। সে বলল, ‘চলে এলে যে?’
‘এমনি।’
‘একবার কিছু মাথায় ঢুকলে নামানো কঠিন।’
প্রায় সারা রাত বিদ্যুৎ বাতির দিকে তাকিয়ে কাটালাম। সকালে টলতে টলতে অফিসে |
✪============♡============✿
Explanation:
ভরা সন্ধ্যায় সোফায় শুয়ে ছিলাম। পাশ ফিরতে গিয়ে মনে হলো দরজায় কেউ। ঘাড়টা যে বেতের ওপরে পড়েছিল, খেয়াল করিনি, ঘাড়ে মালিশ করতে করতে উঠলাম। দরজা খুলে দেখলাম কেউ নেই। যেই লাগাতে যাব, ডানদিক থেকে এগিয়ে এল এক বিড়াল। কালো কুচকুচে। সবুজ চোখ আমার দিকে তাক করে এক ‘ম্যাঁও’ শব্দে যেন বহু কথা বলল। তারপর কিছু বোঝার আগেই তিরের মতো ঢুকে পড়ল ঘরে। সে জানতই, বুঝতে পারলে দরজা লাগিয়ে দেব। কী মানে হয় এসব উটকো ঝামেলার! তবে বিড়াল বরাবর পছন্দ করি, ভাবলাম থাক নাহয় কিছুক্ষণ। এমনিতে আমি একাই, বছর খানেক ধরে একতলার একটা রুম ভাড়া করে থাকতাম। ওপরে অনেকগুলো বাসা, তাদের কারও বিড়াল হবে হয়তো, যদিও ওকে আগে দেখিনি। তখন সেসব নিয়ে মাথাও ঘামাইনি। এর এক সপ্তাহ আগে পিউ আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। সেই ভাবনা ছাপিয়ে অন্য চিন্তা মাথায় বেশিক্ষণ খেলত না। সে সময় কোনো রকমে অফিসে যাই, বিষণ্ন মন নিয়ে মজার মজার কার্টুন আঁকি। সম্পাদক আনিস ভাই খুব খুশি; বলতেন, ‘নিশ্চয়ই কোনো মানসিক চাপে আছ, না হলে কাজ এত ভালো হওয়ার কথা না।’
ঘুম পুরো হয়নি বলে আবার সোফায় ফিরে গেলাম। কিন্তু বিড়ালের গতিবিধি দেখার আশায় চোখ আর লাগল না। দেখলাম এটা শুঁকছে, ওটার নিচে উঁকি দিচ্ছে। বাইরে অন্ধকার হয়ে গেল কি না, ভেতর থেকে বোঝা যেত না, ঘরে বরাবরই লাইট জ্বালিয়ে রাখতে হতো। তাতে অবশ্য আমার কোনো ক্ষতি ছিল না, বিদ্যুৎ বিল ভাড়ার মধ্যেই গোনা। সূর্যের আলোয় ঘরের জিনিসপত্রগুলো দেখতে পেতাম না, এই যা। চোখ বুজে ছিলাম কিছুক্ষণ, খুলে দেখলাম এক হাত দূরে বিড়াল। আমার দিকে তাকিয়ে স্থির বসে আছে। সরাসরি তার দিকে তাকালাম। সে চোখ সরাল না। উঠে বসলাম। সে তাকিয়ে থাকল। ভাবলাম খাবার চায় নাকি—কী দেওয়া যায়। হঠাৎ আওয়াজ শুনলাম, ‘আমার পেট ভরা।’ গলাটা ভারী। চমকে তাকালাম আশপাশে। ঠিক তখনই শুনলাম, ‘এই যে, এখান থেকে বলছি। বিড়ালরা যত পায় তত খায়, এটা ঠিক না। তাদেরও একসময় পেট ভরে যায়।’ আমি সোফার সঙ্গে সেঁটে গেলাম; কী বিপদ, পিউ চলে গেল বলে কি আমার মাথাটাই গেল!
‘তোমার মাথা ঠিকই আছে টুকটাক ঝামেলা ছাড়া।’
একে তো শুদ্ধ বাংলায় কথা বলা বিড়াল, তার ওপরে মাইন্ড রিডার। চিৎকার করে অজ্ঞান যখন হইনি, তখন মনে হলো শুনেই দেখি কী বলতে চায়।
‘কী ঝামেলা বলো তো?’
‘এই যে, তুমি সামান্য বেতের সোফায় ঘুমিয়ে আছ, আরামেই তো আছ, কিন্তু পিউ থাকলে কী হতো?’
বললেই হলো? বিড়াল ভেবেছে বেতের সোফা খুব গরিবি জিনিস। মাথা খারাপ! তাহলে আর গুলশানের পায়ের কাছে মহাখালীতে বেতের দোকানগুলো গজিয়ে উঠত না। আনিস ভাই সোফা বদলানোর সময় পুরোনো সোফাসেট নামমাত্র দামে দিয়ে দিলেন বলেই না এখন এর ওপরে ঘুমিয়ে আছি। তবে পিউ এমন শক্ত জায়গায় ঘুমানো তো দূরের কথা, আরাম করে বসতেও পারবে না। দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললাম, ‘কী আর হতো, খুব কষ্টে থাকত। বাবার অত বড় বাড়ি ফেলে সে এই ঘুপচির মধ্যে এসে ঢুকতে পারত না। চলে যেতই, আগে না হয় পরে।’
‘প্রেম করার সময়ে খেয়াল ছিল না?’
‘তখন কি জানতাম আর্টিস্ট হব নাকি দৈনিকের কার্টুনিস্ট?’ বলতেই অনেক কিছু মনে পড়ল। হেয়ার রোডের শিশুগাছগুলোর নিচে হাঁটতে হাঁটতে আমি আর পিউ কত কথা বলতাম, আমার চিত্র প্রদর্শনী হবে, আর্ট গ্যালারি বানাব, আরও কত কী।
‘ভালো যুক্তি। তা, আমাকে এখন একটু টুনা মাছ দাও দেখি, ওই যে টিনে থাকে, ওটা।’
‘সে আমি কই পাব?’
আজব বিড়াল তো! মান না মান ম্যায় তেরে মেহমান?
‘আচ্ছা, নেই তবে তোমার কাছে।’
চার চেয়ারের খাবার টেবিলটার দিকে হতাশ দৃষ্টি দিল বিড়ালটা। মনে মনে ভাবলাম, পিউ এ বাড়িতে এলে ঠিক এই অবস্থা হতো। বিড়ালকে কথাটা বলার প্রয়োজন দেখলাম না। সে তো আমার মনের কথা বুঝতেই পারছিল। হতাশ বিড়াল একেবারে চুপসে গেল। হাত গুটিয়ে ধুপ করে শুয়ে পড়ল মেঝেতে। রাতে খাবার সময় প্লেট থেকে এক স্লাইজ পাউরুটি দিলাম তাকে। বললাম, ‘বাড়ি যাবে না?’ গেলেই বাঁচি, না হলে কী খাবার চায় না চায়। সে বলল, ‘বাড়ি নেই।’
‘নেই মানে? কোথা থেকে আসছ?’
‘কোথাও থেকে না। যেখানে দরকার সেখানেই থেকে যাই।’
কেন যেন চোখ ভিজে গেল শুনে। মনে মনে বললাম, আমার কাউকে দরকার নেই; পিউ গেছে, বেশ হয়েছে। খুব করে হাত-পা চেটে বেড়াল উল্টো দিকে ফিরে ঘুমিয়ে গেল।
পরদিন অফিসে যাওয়ার জন্য দরজা খুলতেই ছুটে বেরিয়ে গেল বিড়ালটা। কথা যতই বলুক, আদতে তো বিড়ালই, প্রাকৃতিক ব্যাপারস্যাপার আছে। যা-ই হোক, গেছে। নিশ্চিন্তে অফিসে এলাম। স্যাটায়ারের জন্য কিছু কার্টুন আঁকার কথা। কিন্তু যা আঁকি, সব বিড়ালের মতো হয়ে যায়। সারাদুপুর বিড়ালের মুখের আদলে নানা ছবি আঁকতে আঁকতে ক্লান্ত হয়ে গেলাম। পাশের টেবিলের জামিল বলল, ‘ভাই, আপনারে আইজ বিলাইয়ে পাইছে।’ ভালো করে ছবিগুলোতে তাকিয়ে দেখলাম, মহা সমস্যা!
পত্রিকা অফিসে কে কার খোঁজ রাখে, দুপুরের পরে বাসায় চলে এলাম। বিড়াল এল খানিক বাদেই। দরজায় এমনভাবে নক করছিল যে মনে হলো মানুষ। নরম থাবা দিয়ে তো ওই শব্দ করা সম্ভব নয়, মাথা দিয়েই করেছে। আহারে, মাথায় হাত বুলিয়ে দিলাম। সে বলল, ‘চলে এলে যে?’
‘এমনি।’
‘একবার কিছু মাথায় ঢুকলে নামানো কঠিন।’
প্রায় সারা রাত বিদ্যুৎ বাতির দিকে তাকিয়ে কাটালাম। সকালে টলতে টলতে অফিসে |
✪============♡============✿
\huge \pink{✿} \red {C} \green {u} \blue {t} \orange {e} \pink {/} \red {Q} \blue {u} \pink {e} \red {e} \green {n} \pink {♡}✿Cute/Queen♡