সংক্ষেপে উদাহরণসহ ভারতের বিভিন্ন সড়ক পথ গুলো আলোচনা করো
Answers
Answer:
ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের পরিবহন ব্যবস্থা দেশের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ৩২,২৭,২৪০ বর্গকিলোমিটার আয়তন[২] এবং প্রায় ১,০২৮,৭৩৭,৪৩৬ জনসংখ্যাবিশিষ্ট[৩] ভারত রাষ্ট্রে পরিবহন ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা ও উপযোগিতা দুইই অপরিসীম। ১৯৯০-এর দশকের অর্থনৈতিক উদারীকরণের সময় থেকেই দেশের পরিকাঠামো উন্নয়নের গতি বৃদ্ধি পায়। আজকের ভারতে জল, স্থল এবং আকাশপথে নানা প্রকার পরিবহন ব্যবস্থার উপস্থিতি চোখে পড়ে। যদিও দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের (জিডিপি) হার কম হওয়ায় সর্বস্তরে এই সকল পরিবহন ব্যবস্থাগুলি সহজলভ্য হয়ে উঠতে পারেনি। দেশের মাত্র দশ শতাংশ পরিবারের (প্রায় ১০২,৮৭৩,৭৪৪ জন) নিজস্ব মোটরসাইকেল রয়েছে।[৪] ধনী পরিবারগুলির নিজস্ব মোটরগাড়ি রয়েছে – এঁদের হার ২০০৭ সালের হিসেব অনুযায়ী ০.৭ শতাংশ (প্রায় ৭,২০১,১৬৩ জন)।[৫] গণপরিবহন ব্যবস্থা আজও দেশের অধিকাংশ জনসাধারণের কাছে পরিবহনের একমাত্র উপায়; এবং ভারতের গণপরিবহন ব্যবস্থাটিও বিশ্বের সর্বাধিক ব্যবহৃত পরিবহন ব্যবস্থার অন্যতম।[৬]
মুম্বই-পুনে এক্সপ্রেসওয়ে, ভারতের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে
রাজীব গান্ধী সমুদ্রসেতু, ভারতের দীর্ঘতম ও উচ্চতম কেবল-স্টেইড সেতু
দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে একটি বিশ্ব ঐতিহ্য;[১] এই রেলপথে এখনও কয়েকটি বাষ্পচালিত ইঞ্জিন কার্যকর রয়েছে।
ইন্ডিয়ানের একটি যাত্রীবাহী বিমান
উন্নয়ন সত্ত্বেও অচল পরিকাঠামো ও ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা একাধিক পরিবহন ব্যবস্থাকে সমস্যাকীর্ণ করে রেখেছে। অন্যদিকে পরিবহন পরিকাঠামো ও পরিষেবার দাবিও প্রতি বছর দশ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে।[৬] রাজ্যসীমান্তে শুল্ক ও উৎকোচ প্রদান অতি সাধারণ ঘটনা। ট্র্যান্সপেয়ারেন্সি ইন্টারন্যাশানালের অনুমান, ট্রাকচালকরা প্রতি বছর পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিমাণ অর্থ উৎকোচ দিয়ে থাকেন।[৭][৮] ভারত বিশ্বের মোট যানবাহনের মাত্র ১ শতাংশের মালিক হলেও এই দেশে যানবাহন ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সারা বিশ্বের ৮ শতাংশ।[৯][১০] ভারতের মহানগরগুলি অত্যন্ত ঘনজনবহুল – অনেক বড়ো শহরেই বাসের গড় বেগ ৬-১০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়। ভারতীয় রাস্তায় যানজটের কারণে যানবাহনের জ্বালানি সাশ্রয়ের হারও খুব কম। এই রকম কম বেগে জ্বালানি অপচয় করে ইঞ্জিন চালানোর জন্য একদিকে যেমন দেশে জ্বালানি ভোগের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে, তেমনি বেড়ে চলেছে পরিবেশ দূষণও।[১১] ভারতের রেল পরিবহন ব্যবস্থাটি বিশ্বে দীর্ঘতম তথা চতুর্থ অতিব্যবহৃত পরিবহন ব্যবস্থা।[৬] দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের প্রসারের ফলে চাপ বাড়ছে বন্দরগুলির উপরও।[১২] দেশের বিমানবন্দরগুলির উপর যাত্রী পরিবহনের চাপ অত্যন্ত বৃদ্ধি পাওয়ায় এগুলির সামগ্রিক আধুনিকীকরণের কাজ শুরু হয়েছে। বৃদ্ধি পেয়েছে বৈমানিক ক্ষেত্রে বিনিয়োগের হারও।[১৩] সাধারণভাবে গণপরিবহন ব্যবস্থার মূল সমস্যাগুলি হল অচল প্রযুক্তির ব্যবহার, অদক্ষ ব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি, অতিরিক্ত কর্মচারী, শ্রম উৎপাদনশীলতার নিম্নহার।[১১] গোল্ডম্যান স্যাকসের একটি সাম্প্রতিক অনুমান অনুসারে আগামী এক দশকের মধ্যে অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে ভারতকে ১.৭ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হবে – এর মধ্যে ৫০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে একাদশ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায়।[১৪]