আলোর মাধ্যম কাকে বলে? কয় প্রকার ও কি কি?
Answers
1.আলোক মাধ্যম কাকে বলে?
আলো যে মাধ্যমের মধ্য দিয়ে আলো চলাচল করতে পারে তাকে আলোক মাধ্যম বলে (Optical Medium)।
আলোর বিস্তারের জন্য বাস্তব মাধ্যমের প্রয়োজন নাও হতে পারে। ভূ-পৃষ্ঠের বায়ুমন্ডলের উপরে যে মহাশূন্য রয়েছে তার ভিতর দিয়ে সূর্য ও নক্ষত্রের আলো অবাধ গতিতে ভূ-পৃষ্ঠে এসে পৌঁছায়।
2.আলোক মাধ্যম কয়প্রকার ও কী কী?
সমসত্ত্ব মাধ্যম (Homogeneous Medium):
যে মাধ্যমের ভৌত ধর্মগুলি সর্বত্র একই থাকে অর্থাৎ যে মাধ্যমে আলো সম গতিতে সবদিকে চলাচল করতে পারে তাকে সমসত্ত্ব মাধ্যম বলে।
যেমন, স্বল্প পরিসরে বায়ু, জল, কাচ ইত্যাদি হল সমসত্ত্ব মাধ্যম।
অসমসত্ত্ব মাধ্যম (Heterogeneous Medium):
যে মাধ্যমের সমস্ত অংশের ভৌত ধর্ম একই নয় অর্থাৎ যে মাধ্যমের মধ্য দিয়ে আলো সম গতিতে চলাচল করতে পারে না, বিভিন্ন অংশে আলোর গতিবেগ বিভিন্ন হয়, সেই মাধ্যমকে অসমসত্ত্ব আলোক মাধ্যম বলে।
একটি অসমসত্ত্ব মাধ্যমকে একাধিক সমসত্ত্ব মাধ্যমে ভাগ করা যেতে পারে। বায়ুমন্ডল সামগ্রিকভাবে একটি অসমসত্ত্ব মাধ্যম। কারণ বায়ুমন্ডলের নীচের বায়ুস্তরের ঘনত্ব, উপরের বায়ুস্তরের ঘনত্বের তুলনায় বেশী।
যেমন, অভ্র, কোয়ার্জ ইত্যাদি
আলোক মাধ্যমের প্রকারভেদ:
আলোক মাধ্যম মুলত তিন রকমের –
(i) স্বচ্ছ মাধ্যম
(ii) ঈষৎ স্বচ্ছ মাধ্যম
(iii) অস্বচ্ছ মাধ্যম
স্বচ্ছ মাধ্যম (Transparent Medium):
যে সব মাধ্যমের মধ্য দিয়ে আলো সহজে চলাচল করতে পারে, তাদের স্বচ্ছ মাধ্যম বলে।
যেমন, শূন্যস্থান, কাচ, বিশুদ্ব জল, বায়ু ইত্যাদি হল আলোকের স্বচ্ছ মাধ্যম। এইসব মাধ্যমে আলো অতি সামান্য পরিমাণে শোষিত হয়।
ঈষৎস্বচ্ছ মাধ্যম (Translucent Medium):
যে সব মাধ্যমের মধ্য দিয়ে আলো আংশিকভাবে চলাচল করতে পারে, তাদের ঈষৎস্বচ্ছ মাধ্যম বলে।
যেমন, তৈলাক্ত কাগজ, ঘষাকাচ, রঙিন কাচ ইত্যাদি এই ধরণের মাধ্যম।
অস্বচ্ছ মাধ্যম (Opaque Medium):
যে মাধ্যমের মধ্য দিয়ে আলো একেবারেই চলাচল করতে পারতে না, তাকে অস্বচ্ছ মাধ্যম বলে।
যেমন, ধাতু, কাঠ, পাথর, কয়লা, মাটি ইত্যাদি।
আলোকরশ্মি (Light Ray):
আলো যে পথে মাধ্যমের একবিন্দু থেকে অন্য বিন্দুতে যায়, সেই পথকে আলোকরশ্মি বলে।
সমসত্ত্ব মাধ্যমের মধ্য দিয়ে আলো সরলরেখায় যায়। এইরকম মাধ্যমে একটি আলোক রশ্মিকে তীর চিহ্ন যুক্ত একটি সরলরেখা দিয়ে সূচিত করা হয়। তীর চিহ্নের অভিমুখ আলোর গতির দিক নির্দেশ করে।
আলোকরশ্মিগুচ্ছ (Light Rays`):
কয়েকটি আলোকরশ্মি এক সঙ্গে থেকে যে গুচ্ছ গঠন করে, তাকে আলোক রশ্মিগুচ্ছ বলে। একটি আলোকরশ্মিগুচ্ছকে অসংখ্য রশ্মির সমষ্টি হিসাবে কল্পনা করা হয়।
আলোকরশ্মির প্রকারভেদ:
(i) সমান্তরাল আলোকরশ্মিগুচ্ছ
(ii) অভিসারী আলোকরশ্মিগুচ্ছ
(iii) অপসারী আলোকরশ্মিগুচ্ছ
সমান্তরাল আলোকরশ্মিগুচ্ছ (Parallel Rays):
আলোকরশ্মিগুচ্ছের রশ্মিগুলি যদি পরস্পর সমান্তরাল হয়, তবে ওই রশ্মিগুচ্ছকে সমান্তরাল রশ্মিগুচ্ছ বলে।
অনেক দূর থেকে আসা কোনো আলোক উৎস থেকে আগত রশ্মিগুচ্ছকে সমান্তরাল রশ্মিগুচ্ছ বলে ধরে নেওয়া হয়। সূর্য এবং অন্যান্য নক্ষত্র থেকে আগত রশ্মিগুচ্ছ হল সমান্তরাল রশ্মিগুচ্ছ।
সমান্তরাল আলোক রশ্মিগুচ্ছ
অভিসারী রশ্মিগুচ্ছ (Converging Rays):
যদি কোনও আলোকরশ্মিগুচ্ছের রশ্মিগুলি আলোর গতির কোনো বিন্দুতে মিলিত হয় বা মিলিত হতে চায়, তখন ওই রশ্মিগুচ্ছকে অভিসারী রশ্মিগুচ্ছ বলে।
উত্তল লেন্সের মাধ্যম চারিপাশের মাধ্যম অপেক্ষা বেশী ঘনতর হলে, একগুচ্ছ সমান্তরাল রশ্মিগুচ্ছ ওই লেন্স দিয়ে প্রতিসৃত হওয়ার পর অভিসারী রশ্মিগুচ্ছে পরিণত হয়।
অভিসারী আলোক রশ্মিগুচ্ছ
অপসারী রশ্মিগুচ্ছ (Diverging Rays):
যদি কোনও আলোর আলোকরশ্মিগুলি এমন হয় যে, তারা নির্দিষ্ট কোনও বিন্দু থেকে নির্গত হয়ে রশ্মিগুলো আলোর গতির পরস্পর থেকে দূরে সরে যায় তবে ওই রশ্মিগুচ্ছকে অপসারী রশ্মিগুচ্ছ বলে।
যেকোনও আলোক উৎস থেকে বিকীর্ণ আলোর রশ্মিগুলো সর্বদা অপসারী রশ্মিগুচ্ছই হয়।
Explanation:
আলোর যে মাধ্যমের মধ্য দিয়ে আলো চলাচল করতে পারে তাকে আলোর মাধ্যম বলে ।
আলোর মাধ্যম 3 প্রকার । যথা -
i) সচ্ছ মাধ্যম
ii) ঈষৎ সচ্ছ মাধ্যম
iii) অসচ্ছ মাধ্যম