Biology, asked by BiswajitBlueHeart, 1 day ago


৪.১ ‘স্ট্রেপ্টোমাইসেস হলাে উপকারী ব্যাকটেরিয়া’ – বক্তব্যটির যথার্থতা ব্যাখ্যা করাে।​

Answers

Answered by n0171mpsbls
0

Answer:

ব্যাকটেরিয়া (ইংরেজি: Bacteria; /bækˈtɪəriə/ (এই শব্দ সম্পর্কেশুনুন); একবচন: bacterium) হলো এক প্রকারের আদি নিউক্লিয়াসযুক্ত,অসবুজ, এককোষী অণুজীব। এরা এবং (আরকিয়া) হলো প্রোক্যারিয়ট (প্রাক-কেন্দ্রিক)। ব্যাকটেরিয়া আণুবীক্ষণিক জীব। বিজ্ঞানী অ্যান্টনি ভ্যান লিউয়েন হুক সর্বপ্রথম ১৬৭৫ খ্রিস্টাব্দে বৃষ্টির পানির মধ্যে নিজের তৈরি সরল অণুবীক্ষণযন্ত্রের নিচে ব্যাকটেরিয়া পর্যবেক্ষণ করেন। আদিকোষী অণুজীবদের একটি বিরাট অধিজগৎ ব্যাকটেরিয়া নিয়ে গঠিত। সাধারণত দৈর্ঘ্যে কয়েক মাইক্রোমিটার ব্যাকটেরিয়ার বিভিন্ন ধরনের আকৃতি রয়েছে, গোলকাকৃতি থেকে দণ্ডাকৃতি ও সর্পিলাকার পর্যন্ত ব্যাপ্ত। গোড়ার দিকে পৃথিবীতে যেসব রূপে প্রাণের আবির্ভাব ঘটেছিল, ব্যাকটেরিয়া তাদের মধ্যে অন্যতম। পৃথিবীর অধিকাংশ আবাসস্থলেই ব্যাকটেরিয়া বিদ্যমান রয়েছে। ব্যাকটেরিয়া মাটি, জল,আম্লিক উষ্ণ ঝরনা,তেজস্ক্রিয় বর্জ্য[২] এবং ভূত্বকের গভীর জীবমণ্ডলে বাস করে। ব্যাকটেরিয়া উদ্ভিদ ও প্রাণীর সাথে মিথোজীবী ও পরজীবী সংসর্গেও বাস করে। বেশিরভাগ ব্যাকটেরিয়া চিহ্নিত হয়নি এবং মাত্র প্রায় ২৭ শতাংশ ব্যাকটেরিয়া পর্বের প্রজাতিগুলোকে গবেষণাগারে আবাদ (Culture) করা যায়।[৩] মাইক্রোবায়োলজির যে শাখায় ব্যাকটেরিয়া নিয়ে অধ্যয়ন করা হয় তাকে ব্যাকটেরিওলজি বলে।

প্রায় সকল প্রাণী টিকে থাকার জন্য ব্যাকটেরিয়ার ওপর নির্ভরশীল কারণ কেবল ব্যাকটেরিয়া ও কিছু আর্কিয়া ভিটামিন বি১২ (যা কোবালামিন নামেও পরিচিত) সংশ্লেষ করার প্রয়োজনীয় জিন ও উৎসেচক ধারণ করে। ব্যাকটেরিয়া ভিটামিন বি১২ খাদ্য শৃঙখলের মাধ্যমে যোগান দেয়। ভিটামিন বি১২ জলে দ্রবণীয় একটি ভিটামিন যা মানবদেহের প্রতিটি কোষের বিপাকে জড়িত। এটি ডিএনএ সংশ্লেষণে এবং ফ্যাটি অ্যসিড ও অ্যামিনো এসিড উভয়ের বিপাকে একটি সহউৎপাদক (Cofactor) হিসেবে ভূমিকা রাখে। মায়েলিন সংশ্লেষণে ভূমিকা রাখার মাধ্যমে স্নায়ুতন্ত্রের স্বাভাবিক ক্রিয়ায় ভিটামিন বি১২ বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।[৪][৫][৬][৭]

সচরাচর এক গ্রাম মাটিতে প্রায় ৪ কোটি (বা ৪০ মিলিয়ন) ব্যাকটেরিয়া এবং ১ মিলিলিটার মিঠা জলে দশ লাখ (বা এক মিলিয়ন) ব্যাকটেরিয়া থাকে। পৃথিবীতে আনুমানিক প্রায় ৫×১০৩০ টি ব্যাকটেরিয়া আছে।[৮] যেগুলো একটি জৈববস্তুপুঞ্জ (Biomass) নির্মাণ করে যা সমুদয় উদ্ভিদ ও প্রাণীর জৈববস্তুপুঞ্জকেও অতিক্রম করে।[৯] ব্যাকটেরিয়াপরিপোষকের (Nutrient) পুনর্ব্যবহার যেমন, বায়ুমণ্ডল থেকে নাইট্রোজেন সংবদ্ধকরণের মাধ্যমে পুষ্টিচক্রের (Nutrient cycle) অনেক পর্যায়ে অপরিহার্য ভূমিকা রাখে। মৃতদেহের শটন (decomposition) পুষ্টিচক্রের অন্তর্ভুক্ত; ব্যাকটেরিয়া এই প্রক্রিয়ার পচন (Putrefaction) ধাপের জন্য দায়ী।[১০] এক্সট্রিমোফিল (Extremophile) ব্যাকটেরিয়া দ্রবীভূত যৌগ যেমন- হাইড্রোজেন সালফাইড ও মিথেনকে শক্তিতে রুপান্তরিত করে হাইড্রোথার্মাল ভেন্ট ও কোল্ড সিপসমূহের আশেপাশে বসবাসরত জীবসম্প্রদায়গুলোকে বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় পরিপোষক পদার্থের যোগান দেয়।

মানুষ ও অধিকাংশ প্রাণীতে সর্বাধিক সংখ্যক ব্যাকটেরিয়া থাকে অন্ত্রে ও একটি বিরাট অংশ থাকে ত্বকে।[১১] ইমিউনতন্ত্রের কার্যকারিতার ফলে মানব দেহে অবস্থিত বেশিরভাগ ব্যাকটেরিয়াই কোন ক্ষতি করতে পারে না। যদিও অনেক ব্যাকটেরিয়া বিশেষ করে অন্ত্রের গুলো মানুষের জন্যে উপকারী, তথাপি কিছু ব্যাকটেরিয়ার প্রজাতি রোগজনক এবং সংক্রামক ব্যাধির কারণ। যেমন, কলেরা, সিফিলিস, অ্যানথ্রাক্স , কুষ্ঠব্যাধি, বিউবনিক প্লেগ ইত্যাদি। শ্বাস নালীর সংক্রমণের ফলে সৃষ্ট রোগসমূহ হলো ব্যাকটেরিয়াজনিত সর্বাপেক্ষা মারত্মক ব্যাধি। শুধু যক্ষ্মারোগেই ২০১৮ সালে সারা বিশ্বে আক্রান্ত হয় এক কোটি মানুষ এবং মারা যায় ১৫ লাখ মানুষ।[১২] ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়, আবার কৃষিক্ষেত্রেও অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহৃত হয়। ফলে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ্যতা একটি ক্রমবর্ধমান সমস্যায় পরিণত হয়েছে। শিল্পক্ষেত্রে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় এবং পতিত তেলের (Oil spill) ভাঙনে, গাঁজন প্রক্রিয়ায় পনির ও দই উৎপাদনে এবং খননকার্যে[১৩] সোনা, প্যালেডিয়াম, তামা ও অন্যান্য ধাতু পুনরুদ্ধারে ব্যাকটেরিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া জৈবপ্রযুক্তিতে, অ্যান্টিবায়োটিক ও অন্যান্য যৌগ তৈরিতেও ব্যাকটেরিয়া প্রয়োজনীয়।[১৪]

ব্যাকটেরিয়াকে একদা Schizomycetes ("fission fungi") শ্রেণি গঠনকারী উদ্ভিদ হিসেবে বিবেচনা করা হলেও, এখন আদিকোষী হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়। প্রাণিকোষে ও অন্যান্য সুকেন্দ্রিক কোষের মতো ব্যাকটেরিয়ায় নিউক্লিয়াস এবং ঝিল্লিবদ্ধ অঙ্গাণু নেই।

একটা সময় ব্যাকটেরিয়া (bacteria) পরিভাষাটি ঐতিহ্যগতভাবে সকল আদিকোষী জীবকে অন্তর্ভুক্ত করত। পরবর্তীতে ১৯৯০ এর দশকে আবিষ্কৃত হয় যে প্রোক্যারিওটরা "সর্বশেষ সর্বজনীন সাধারণ পূর্বপুরুষ" (Last universal common ancestor) থেকে উদ্ভূত দুইটি পৃথক জীবগোষ্ঠী নিয়ে গঠিত। ফলশ্রুতিতে বৈজ্ঞানিক শ্রেণিবিন্যাস পাল্টে যায়। বর্তমানে বিবর্তনীয় অধিজগৎ দুটিকে ব্যাকটেরিয়া ও আর্কিয়া বলা হয়। [১৫]

Similar questions