চিত্রসহ শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত সৃষ্টির প্রক্রিয়াটি বর্ণনা করো
Answers
Answer:
সংজ্ঞা : ‘শৈল’ শব্দের অর্থ ‘পর্বত’ এবং ‘উৎক্ষেপ’-এর অর্থ ‘উপরে ওঠা’। সাধারণ জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু পর্বতে বাধা পেয়ে উপরে উঠে ঘনীভূত হয়ে যে বৃষ্টিপাত ঘটায়, তাকে শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত বলে।
সৃষ্টির পরিবেশ : সমুদ্র নিকটবর্তী সুউচ্চ পর্বতের অবস্থান, ও সমকোণে প্রবল জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু পর্বত দ্বারা বাধা পেয়ে শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টির পরিবেশ সৃষ্টি করে।
পদ্ধতি : সমুদ্র থেকে আসা জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু তার প্রবাহপথে আড়াআড়িভাবে অবস্থিত কোনো পর্বতে বাধা পেলে ঢুকা বায়ু পর্বতের গা বেয়ে উপরে উঠে যায়।ঊর্ধ্বগামী এই বায়ু প্রসারিত ও শীতল হতে থাকে এবং বায়ুস্থিত জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে জলকণায় পরিণত হয়। এই জলকণাগুলি পরস্পর যুক্ত হয়ে ক্রমশ বড়ো হতে থাকে এবং পর্বতের যে ঢাল বেয়ে বায়ু উপরে উঠে এসেছে, সেই প্রতিবাত ঢালে (Windward Side) প্রচুর শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত ঘটায়। পর্বত অতিক্রম করে এই বায়ু যখন বিপরীত ঢাল অর্থাৎ, অনুবাত ঢালে (Leeward Side) এসে পৌঁছায় তখন তাতে আর জলীয় বাষ্প থাকে না। তা ছাড়া নীচের দিকে নামতে থাকায় বায়ু ক্রমশ উগ্ন হতে থাকে, ফলে, ঘনীভূত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। তাই এই ঢালে বৃষ্টি হয় না বললেই চলে। একে বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল (Rainshadow Region) বলে।
উদাহরণ : 1. ভারতের মেঘালয় রাজ্যের খাসি পাহাড়ের প্রতিবাত ঢালে অবস্থিত চেরাপুঞ্জির মৌসিনরামে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বাধা পেয়ে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত ঘটায়। কিন্তু শিলং বিপরীত পাশে থাকায় সেখানে বৃষ্টিপাত কম হয়। 2.দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর আরবসাগরীয় শাখা পশ্চিমঘাট পর্বতের পশ্চিম ঢালে বাধা পেয়ে প্রচুর শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত পরিচলন ঘটায়, কিন্তু পূর্ব ঢালে বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল সৃষ্টি হয়েছে।