পথ নিরাপত্তা সচেতনতা বিষয়ে একটি প্রতিবেদন রচনা করো
Answers
Answer:
নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা, ০১ জানুয়ারী : সােমবার থেকে এ রাজ্যে চলছে বিশেষ পথ-নিরাপত্তা সপ্তাহ। সারা রাজ্য জুড়ে দুর্ঘটনার সংখ্যা কমিয়ে আনতেই এই বিশেষ উদ্যোগ বলে জানা গেছে। গত কয়েক বছরে যেভাবে পথ-দুর্ঘটনা, বিশেষ করে বাইক দুর্ঘটনা বেড়ে গিয়েছিল, তা গত কয়েক মাসে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে সরকারি পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে। আর রাজ্য সরকারের ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ প্রকল্পের পরই যে এই দুর্ঘটনার সংখ্যা কমেছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
২০১৬ সালের জুলাই মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি গাড়িচালক ও পথচারীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে এই ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ প্রকল্পটি চালু করেন। এ নিয়ে বেশ কয়েক মাস ধরে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে ব্যাপকভাবে প্রচার অভিযান চালানাে হয়। মিটিং, মিছিল, শােভাযাত্রা, বিভিন্ন অনুষ্ঠানমঞ্চ থেকেও বাইক আরােহীদের হেলমেট পরা-সহ বিভিন্ন পথ-নিরাপত্তা বিধি নিয়ে আওয়াজ তােলা হয়। এমনকি রাস্তার মােড়ে মােড়ে বড় বড় ব্যানার, পােস্টার দেওয়া হয়। এবার সে সবের সুফল যে পাওয়া যাচ্ছে তা কিছু পরিসংখ্যানেই পরিষ্কার।
এই সচেতনতামূলক কর্মসূচির জেরেই শহরে গত বছরের তুলনায় ২৩ শতাংশ দুর্ঘটনা কমেছে বলে জানান কোলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। সম্প্রতি আলিপুরে পথ নিরাপত্তা বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “২০১৭ সালে কলকাতায় পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৪০৭। ২০১৮ সালের ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৩১২।”
সেই সঙ্গে জাতীয় সড়কেও বিশেষ গুরুত্ব নেওয়া হয়েছে। কারণ পরিসংখ্যান বলছে, জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনার সংখ্যা বেশি। এই অভিযান সফল করতে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া শুরু হয়েছে। জরিমানার পাশাপাশি গ্রেফতারের সংখ্যা বেড়েছে। ট্রাফিক কর্তারাও যাতে ব্যবস্থা নিতে পারেন, সেজন্য পরিকাঠামাে গড়ে তােলার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। অর্থদফতরও এ জন্য মােটা অংকের টাকা অনুমোদন দিয়েছে। রাস্তায় বসানাে হয়েছে আরও বেশি করে ট্রাফিক সিগন্যাল। সিগন্যাল ভাঙলে অপর সিগন্যালে যাতে চালককে ধরা যায় তার জন্য সিসি ক্যামেরার দ্বারা ডিজিটাল মনিটরিংও করা হচ্ছে। এছাড়া ট্রাফিক সার্জেন্টকে বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। রাস্তার মােড়ে মােড়ে স্পিড মিটার বসানাে হয়েছে। কোন রাস্তায় কত স্পিডে গাড়ি চলবে তা ডিজিটাল ইন্ডিকেটরে দেখা যাবে। নতুন ট্রাফিক আইনে বলা হয়েছে, বিনা হেলমেট ও বিনা কাগজে গাড়ি বের করলে জরিমানা করা হবে। বিনা হেলমেটে পেট্রোলপাম্প থেকে তেল দিতে মানা করা হয়েছে। এছাড়া আরও কিছু কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে যানচলাচল নিয়ন্ত্রণে। শুধু চালক-ই নয়, পথচারীদের জন্যও আইন কঠোর করা হয়েছে। এরমধ্যে উল্লেখযােগ্য হচ্ছে - শহরের রাজপথে নির্দিষ্ট জায়গা ছাড়া রাস্তা পারাপার না করলে ও কানে ফোন নিয়ে রাস্তা পারাপার হলে মােটা অংকের জরিমানার বিধান।
এছাড়াও আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত হতে চলেছে‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ প্রকল্প। পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু আটকাতে ও ছােটোবেলা থেকে সচেতনতা বাড়াতে এবার তা থাকবে বইয়ের পাতায়। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়