উচ্চশিক্ষায় কলকাতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা লেখো।
Answers
Answer:
১৯ জুলাই বোর্ড অফ কন্ট্রোলের সভাপতি চার্লস উড তার নির্দেশনামায় কলকাতায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কথা বলেন। সেই অনুসারে ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল—
শিক্ষার প্রসার ঘটানো: ভারতে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির এক্তিয়ারভুক্ত এলাকায় প্রজাদের মধ্যে শিক্ষার প্রসার ঘটানোর কথা বলা হয়।
শিক্ষার বিভিন্ন শাখায় দক্ষতা নিরূপণ করা : কলকাতা
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য হল সাহিত্য, বিজ্ঞান ও শিল্পকলার বিভিন্ন শাখায় পরীক্ষার মাধ্যমে সকল ছাত্রের দক্ষতা নিরূপণ করা।
কলেজ অনুমোদন, পরীক্ষাগ্রহণ, উপাধিদান : কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্য ছিল কলেজগুলিকে অনুমোদন দেওয়া, পরীক্ষা গ্রহণ করা ও উপাধি প্রদান করা।
পরিচালনা : কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার জন্য আচার্য ও উপাচার্য পদ এবং সিনেটের ব্যবস্থা করা হয়। সিনেট বা পরিচালন সভা ৩৮ জন সদস্য নিয়ে গড়ে উঠেছিল। .
চ্যান্সেলার বা আচার্্যঃ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম আচার্য ছিলেন ভারতের গভর্নর জেনারেল লর্ড ক্যানিং।
ভাইস চ্যাফেলার বা উপাচার্য : বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার অন্যতম প্রধান পদ হল ভাইস চ্যান্সেলার বা উপাচার্য। ভাইস চ্যান্সেলারের পদটি ছিল অবৈতনিক। তিনি সিনেট ও সিন্ডিকেটের সুপারিশ অনুসারে মনোনীত হতেন। তাদের পরামর্শ নিয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ পরিচালনা ।কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য ছিলেন স্যার জেমস উইলিয়ম কোলভিল (২৪ জানুয়ারি, ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দ থেকে ২৪ জানুয়ারি, ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দ)। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ভারতীয় উপাচার্য ছিলেন স্যার গুরুদাস ব্যানার্জি (১ জানুয়ারি, ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৩১ ডিসেম্বর, ১৮৯২ খ্রিস্টাব্দ)
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্তিয়ারভুক্ত এলাকা : কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্তিয়ারভুক্ত এলাকা লাহোর থেকে রেঙ্গুন পর্যন্ত প্রসারিত ছিল। ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫ বছর পূর্তির সময় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্তিয়ারভুক্ত এলাকা হয়— লাহোর, পাতিয়ালা, সিমলা, দিল্লি, অমৃতসর, ইন্দোর, আগ্রা, আজমির, জয়পুর, কটক, ঢাকা, গুয়াহাটি, রেগুন প্রভৃতি। এর বাইরে সিংহল ও বার্মাতেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্তিয়ার ছিল।
কৃতী ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দঃ এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহু খ্যাতনামা ছাত্র-ছাত্রীগণ ডিগ্রি লাভ করেছিলেন। ১৮৫৮ সালে সালে সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ও যদুনাথ বোস এখান থেকে প্রথম স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন এবং ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মহিলা স্নাতক হন কাদম্বিনী গাঙ্গুলি ও চন্দ্রমুখী বসু।এছাড়াও কৃষ্ণমোহন ব্যানার্জি (১৮৭৬), রাজেন্দ্রলাল মিত্র, মহেন্দ্রলাল সরকার (১৮৯৮) আশুতোষ মুখার্জী(১৯০৮) প্রমুখ এখান থেকে বিভিন্ন বিষয়ে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন।
উনিশ শতকের শেষ দিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ছাত্রসংখ্যা ক্রমশ বাড়তে থাকে। শিক্ষার ক্ষেত্রে অগ্রগতির বিষয় পর্যালোচনার জনা লর্ড রিপন ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে হান্টার কমিশন’ নিয়োগ করেন। হান্টার কমিশন তার রিপোর্টে প্রাথমিক শিক্ষা, নারীশিক্ষা ও বিজ্ঞান শিক্ষার উপর গুরুত্ব আরোপ করে।যাই হোক, ১৯০১-০২ খ্রিস্টাব্দে বাংলায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কলেজ শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটে। বিদ্যমান ৭২টি কলেজের উপর কলকাতায় আরও ২০টি এবং সমগ্র বাংলাদেশে ২৬টি কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়।
মুল্যায়নঃভারতের শিক্ষার ইতিহাসে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় একটি গুরুত্বপূর্ণ নাম। উনিশ শতকে বাংলার নবজাগরণ এর প্রেক্ষিতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান অনস্বীকার্য ।এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ বাংলায় নবজাগরণ কে সমৃদ্ধ করেছিলেন। সেই সময় এটি ছিল ভারতের সর্ববৃহৎ ও সর্বোৎকৃষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়; শুধু তাই নয় এটি ছিল দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
Answer:
Hope it's correct thank you
please mark me as a brain lies