History, asked by sonu8319, 1 year ago

তিলক স্বরাজ তহবিল গঠন করা হয় কোন আন্দোলনের সময়?

Answers

Answered by elizaknile
3

অসহযোগ আন্দোলন মহাত্মা গান্ধী ও ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস পরিচালিত ভারতব্যাপী অহিংস গণ-আইন অমান্য আন্দোলনগুলির মধ্যে সর্বপ্রথম। ১৯২০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ১৯২২ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলা এই আন্দোলন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে “গান্ধী যুগ”-এর সূত্রপাত ঘটায়।

ইতিহাস

ব্রিটিশ পার্লামেন্টে রাওলাট আইন পাস হলে, ভারতের ভাইসরয় ও ইম্পিরিয়াল লেজিসলেটিভ কাউন্সিল ১৯১৯ সালের ৬ এপ্রিল সেই আইন বলবৎ করে। এই আইনবলে ভারতবাসীর উপর দমনমূলক নানা বিধিনিষেধ আরোপিত হয়। সাধারণ মানুষের ন্যায়বিচার লঙ্ঘিত হয়, ন্যূনতম প্রমাণ দাখিল ব্যতিরেকেই সেনা ও পুলিশকে সাধারণ ভারতীয়দের গ্রেফতার, কয়েদ ও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার অণুমতি দেওয়া হয়।

অধিকন্তু, ভারতীয় জনসাধারণের ইচ্ছা-অনিচ্ছাকে গুরুত্ব না দিয়ে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের একতরফা ভারতীয় সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত অনেক ভারতবাসীকেই ক্ষুব্ধ করেছিল। মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, অ্যানি বেসান্ত, গোপালকৃষ্ণ গোখেল ও বাল গঙ্গাধর তিলকের মতো উদার মধ্যপন্থী নেতাদের আহ্বানে হোমরুল আন্দোলন শুধুমাত্র আবেদন-নিবেদন ও রাজনৈতিক সভাসমিতির মাধ্যমে চলছিল; তার এমন কোনও বিধ্বংসী চরিত্র ছিল না যা সরকারি কাজে বিপুল বাধার সৃষ্টি করতে পারে।

চম্পারণ, খেদা, খিলাফত ও অমৃতসর

১৯১৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় এবং বিহারের চম্পারণ ও গুজরাটের খেদায় মহাত্মা গান্ধী দেখিয়ে দিয়েছিলেন কিভাবে গণ-আইন অমান্য করে সরকারি কাজে বাধা দিয়ে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের সম্ভ্রম ও দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়।

১৯১৮ সালে চম্পারণ ও খেদা সত্যাগ্রহের সময় অস্বাস্থ্যকর অবস্থা, গার্হস্থ্য্য হিংসা, কুসংস্কার, নারীনির্যাতন ও অস্পৃশ্যতার অন্ধকারে নিমজ্জিত গরিব কৃষকদের নেতৃত্ব দেন তিনি। এই সব দুর্দশার মধ্যেও তাদের বাধ্য করা হচ্ছিল খাদ্যশস্যের বদলে নীল, তামাক ও তুলা উৎপাদনে। বদলে দেওয়া হচ্ছিল অতি নগণ্য মজুরি। তার উপর, দুর্ভিক্ষ সত্ত্বেও তাদের করদানে বাধ্য করা হচ্ছিল। শেষপর্যন্ত সরকার এই মর্মে চুক্তিসাক্ষরে বাধ্য হন যে, দুর্ভিক্ষপীড়িত অঞ্চলে কর মকুব করা হবে, কৃষকদের নিজ ইচ্ছামতো ফসল চাষ করতে দেওয়া হবে, রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হবে ও সমস্ত জমি ও সম্পত্তি যা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল, তাও ফেরত দেওয়া হবে। আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধের পর এটিই ছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে বৃহত্তম বিজয়।

মহাত্মা গান্ধীকে সাহায্য করেন রাজেন্দ্র প্রসাদ ও জওহরলাল নেহেরুর মতো একদল তরুণ ভারতীয় বিপ্লবী। খেদা আন্দোলনটি সামগ্রিক পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল। তিনিও গান্ধীজির অন্যতম সহসৈনিকে পরিণত হন।

তুরস্কের মুস্তাফা কামাল ইসলামের খলিফা বলে পরিচিত তুরস্কের সুলতানকে সিংহাসনচ্যুত করলে ব্রিটিশ সরকার কামালকে সমর্থন করেন। তখন লক্ষ লক্ষ ভারতীয় মুসলমান সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হন। প্রতিবাদের উদ্দেশ্যে মুসলমান নেতারা খিলাফত কমিটি গঠন করে তাঁদের প্রতি ব্রিটিশ সরকারের ঔদাসিন্যের অবসান ঘটাতে সচেষ্ট হন।

পাঞ্জাবের জালিয়ানওয়ালাবাগে একটি নীরস্ত্র জমায়েতে রেজিন্যাল্ড ডায়ারের নির্দেশে নির্বিচারে গুলি চালানো হলে শতাধিক মানুষ নিহত ও সহস্রাধিক আহত হন। মহিলা, শিশু ও বৃদ্ধদেরও ছেড়ে দেওয়া হয় না। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিক্ষোভ শুরু হলে ব্যাপক ধরপাকড়, লাঠিচার্জ ও হত্যালীলা চালায় পুলিশ। জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড ভারতের ব্রিটিশ শাসনের সর্বাপেক্ষা কুখ্যাত ঘটনা বলে বিবেচিত হয়। গান্ধীজি ও তাঁর সহযোগীদের কাছে পরিষ্কার হয়ে যায় যে ব্রিটিশ শক্তির সঙ্গে এবার সংঘাত অনিবার্য।

i hope this will help you

please mark my answer as brainlist

Similar questions