Math, asked by mahadeibrahim09, 6 months ago

1)কুফরির পরিণাম ব্যাখ্যা কর।
2)শিরকের কুফল ও পরিণতি বর্ননা কর।​

Answers

Answered by sajir48
6

Answer:

1) কুফর শব্দের অর্থ হল অবিশ্বাস করা, অস্বীকার করা, গোপন করা, ঢেকে রাখা। কুফর হল ইমানের বিপরীত। অর্থাৎ তাওহিদ, রিসালাত, আখিরাত, আসমানি কিতাব, ফেরেশতা, আল্লহার হুকুম আহকাম ইত্যাদি অবিশ্বাস করাই হল কুফর বা কুফরি করা। যে ব্যক্তি কুফরি করে তাকে বলা হয় কাফির। আল্লাহ তাআলাকে যারা অস্বীকার করবে তাদের ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে কুরআন এবং হাদিসের কিছু বর্ণনা তুলে ধরা হলো-

“নিশ্চয় মুশরিক ও আহলে কিতাবের যারা কুফরি করেছে তাদের স্থান জাহান্নামে। সেখানে তারা চিরস্থায়ীভাবে অবস্থান করবে। তারাই হলো সর্বনিকৃষ্ট সৃষ্টিজীব।” (সুরা বাইয়্যিনা : আয়াত ৬)

আখিরাতে কাফিরদের স্থান হবে জাহান্নামে। এবং সেখানে তারা সারাজীবন থাকবে।

এছাড়া দুনিয়াতেও কাফিরদের জন্য আযাব রয়েছে। আল্লাহ বলেন:

“আর যদি জনপদসমূহের অধিবাসীরা ঈমান আনত এবং তাকওয়া অবলম্বন করত তাহলে আমি অবশ্যই আসমান ও জমিন থেকে বরকতসমূহ তাদের উপর খুলে দিতাম; কিন্তু তারা অস্বীকার করল। অতঃপর তারা যা অর্জন করত তার কারণে আমি তাদেরকে পাকড়াও করলাম।” (সূরা আল আ’রাফ, আয়াত ৯৬)

এই আয়াত থেকে আমরা বুঝতে পারি যারা কুফরি করে তারা দুনিয়াতে আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হয় এবং পরকালেও ভোগ কঠিন আযাব।

সুতরাং আমাদের উচিত আল্লাহর নিকট কুফর থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করা।

2) শিরকের কুফল ও পরিণতি খুবই ভয়ানক। পবিত্র কুরআন মজিদে শিরকে সবচেয়ে বড় যুলুম বলা হয়েছে।

“নিশ্চয় শিরক করা চরম যুলুম ।” (সূরা লুকমান, আয়াত ১৩)

শিরকের কুফল: শিরকের সবচেয়ে বড় কুফল হল এর মাধ্যমে আল্লাহর সাথে অন্যায় আচরণ এবং বেয়াদপি করা হয়। কেননা সকল ইবাদাত এবং প্রশংসার একমাত্র হকদার হলেন মহান আল্লাহ তায়ালা। তাছাড়া শিরক একটি মর্যাদাহানিকর কাজ। মুশরিকরা শিরকে লিপ্ত হয়ে নিজ হাতে তৈরি করা অন্য সৃষ্টির কাছে মাথা নত করে। এর ফলে মানুষের (সৃষ্টির সেরা জীব বা আশরাফুল মাখলুকাত) মর্যাদা ক্ষুন্ন হয়। শিরকের মাধ্যমে সামাজিক বিশৃখলা সৃষ্টি এবং ভ্রাতৃত্ববোধ নষ্ট হয়। বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় শিরকের অনেক নমুনা লক্ষ্য করা যায় যেমন:

মানুষ যখন নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে তখন সে শিরকে লিপ্ত হয়। আল্লাহ বলেন:

“আপনি কি তাকে দেখেন না যে তার প্রবৃত্তিকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করে?” (সূরা আল ফুরকান, ২৫ : ৪৩)

এখানে ইসলাম ও শরীয়তবিরোধী কোন প্রবৃত্তির অনুসারীকে প্রবৃত্তির পূজারী বলা হয়েছে। আমাদের মুসলিম সমাজে দেখা যায় নিজের খেয়ালখুশির অনুসরণ করে তা ইসলাম ও শরীয়তের বিধান বানিয়ে দেই। তাছাড়া জ্যোতিষশাস্ত্র, ভাগ্যগণনা, তাবিজ, কবচ, ঝাড়ফুঁক, বশীকরণ, লোক দেখানো ইবাদাত বা রিয়া ইত্যাদিও শিরকের সমতুল্য। দুঃখের বিষয় আমাদের সমাজে এইসবের চিত্র ব্যাপক।

শিরকের পরিণতি: শিরকের পরিণতি অনেক ভয়াবহ। শিরকের শেষ ঠিকনা হল জাহান্নাম। শিরকের অপরাধ আল্লাহ ক্ষমা করেন না। আল্লাহ বলেনঃ

“আল্লাহ তাঁর সাথে শরীক করার অপরাধ অবশ্যই ক্ষমা করবেন না, কিন্তু তিনি যাকে ইচ্ছা এর চেয়ে কম (অপরাধ) ক্ষমা করে দেন।” (সূরা আন নিসা, ৪ : ৪৮)

আল্লাহ শিরককারীর জন্য জান্নাত হারাম করেছেন। তাদেরকে জালিক বা অত্যাচারী ঘোষণা করে তাদের জন্য কোনো সাহায্যকারী থাকবে না বলেও ঘোষণা করেছেন। আল্লাহ বলেন:

“যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করেছে; আল্লাহ তাঁর ওপর জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন। তার পরিণতি হবে জাহান্নাম। এ সব জালিমদের জন্য কোনো সাহায্যকারী নেই”। (সূরা আল মায়েদাহ, ৫: ৭২)

আল্লাহ শিরকের ভয়াবহতা উল্লেখ করে করে পূর্ববর্তী নবিদেরকে সতর্ক করেছেন। যারা শিরক করে আল্লাহ তাদের সব ভাল আমল বরবাদ করে দিবেন বলে সুরা আনআ’ম এর ৮৮ তম আয়াতে বলেছেন।

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

‘যে ব্যক্তি শিরক করা অবস্থায় মারা যাবে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।’ (বুখারি ও মুসলিম)

সুতারং আমরা শিরক থেকে নিজের দূরে রাখবো এবং মহান আল্লাহর কাছে শিরক থেকে আশ্রয় চাইবো।

Similar questions