2 X 11 = 22 (৩.১) আঞ্চলিক ইতিহাস চর্চা গুরুত্বপূর্ণ কেন? (৩.২) নারী ইতিহাসের উপর একটি টীকা লেখ? (৩.৩) গ্রামবার্তা প্রকাশিকা' কবে প্রথম প্রকাশিত হয়? এই পত্রিকার প্রথম সম্পাদক কেছিলেন? (৩.৪) শ্রীরামপুর ত্রয়ী কাদের বলা হয় ? (৩.৫) কে, কী উদ্দেশ্যে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন? (৩.৬) দিকু কাদের বলা হয়? (৩.৭) তিনকাঠিয়া প্রথা’ কী? (৩.৮) রাণী শিরােমণি কী জন্যে বিখ্যাত? (৩.৯) সন্ন্যাসী বা ফকির বিদ্রোহ ব্যর্থ হয়েছিল কেন? (৩.১০)মহারানীর ঘােষণা পত্র কী? (৩.১১) জমিদার সভার দুটি কার্যাবলী লেখ ?
Answers
Answer:
(৩.১) ভারতধারার ক্ষেত্রে কোনো একটি বিশেষ স্থানের ইতিহাসও- হিন্দু ধর্মচর্চার বিষয়বস্তু বর্তমানঃ। ভৌগলিকভাবে স্থানীয়ভাবে স্থানীয় জনগণ , ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে যে বিষয় বা রাজনৈতিক দল তাকে আঞ্চলিক ইতিহাস বলে। এই আঞ্চলিক ইতিহাসচর্চার গুরুত্ব বোঝাপড়া করা হল –
প্রথম, আঞ্চলিক ইতিহাসে নির্দিষ্ট স্থানের নির্দিষ্ট ক্ষত্রদ্রোণ ইতিহাস এবং কোনো সদস্য সম্পর্কে ঠিক ঘোষণা দিতে পারে।
দ্বিতীয়ত , আঞ্চলিক ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারন্যাশনাল, অর্থনীতি ও সমাজবিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়।
(৩.২) সাবেক ইতিহাসে উপেক্ষিত নারী সমাজের ভূমিকার পুনর্মূল্যায়ন আধুনিক ইতিহাসচর্চার অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
নারী ইতিহাসচর্চা পুরুষকেন্দ্রিক ইতিহাসের সংশােধন: প্রচলিত ইতিহাসে নারীর ভূমিকা সর্বদাই প্রান্তিক। সেই প্রান্তিকতা থেকে সরে এসে ইতিহাসে নারীর ভূমিকার প্রকৃত মূল্যায়ন নারীবাদী ইতিহাসচর্চার অন্যতম বৈশিষ্ট্য। বস্তুতপক্ষে নারীবাদী ইতিহাস হলাে একধরনের সংশােধনবাদী ইতিহাসচর্চা।
নারীর অধিকার: সমতা প্রতিষ্ঠা ও নারীর অধিকার এবং নারী-পুরুষের সমানাধিকার প্রতিষ্ঠা নারীবাদী ইতিহাসের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
নারীর অংশগ্রহণ: বিভিন্ন সময়কালেসমাজেনারীর পরিবর্তিত অবস্থান,আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে নারীর ভূমিকা, নারীর পােশাক, কর্মসংস্থান, ধর্ম-কর্ম-গার্হস্থ্য ও শিল্পোৎপাদন কর্মে নারীর অংশগ্রহণ প্রভৃতিকে চিহ্নিত করা নারীবাদী ইতিহাসচর্চার মূল প্রতিপাদ্য।
সভ্যতার অগ্রগতির মাপকাঠি: যে নারী ‘অর্ধেক আকাশ’তথা শক্তির স্বরূপ, সেই নারীকে বাদ দিয়ে কোনাে সমাজ কোনাে কালে অগ্রসর হতে পারে না। বস্তুতপক্ষে কোনাে সমাজ বা সভ্যতায় নারীর অবস্থান ও মর্যাদার উপর সেই সমাজের অগ্রসরতা বা পশ্চাগামীতা নির্ভর করে। তাই নারী ইতিহাস হয়ে উঠেছে সভ্যতার অগ্রগতির মাপকাঠি।
মন্তব্য: ভারতবর্ষেনারীবাদী ইতিহাসচর্চার ধারা অপেক্ষাকৃত নবীন হলেও বর্তমানে এর ক্ষেত্র অনেকটাই বিস্তৃত। আধুনিক ভারতীয় সমাজে নারীর সর্বব্যাপী অধিকার ভারতীয় সমাজের অগ্রগতির যথার্থ মাপকাঠি।
গবেষণা: পাশ্চাত্যে নারীবাদী ইতিহাসচর্চার ধারা অষ্টাদশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে সূচিত হলেও ভারতের মতন দেশে এই চর্চা অপেক্ষাকৃত নবীন। ভারতে নারীবাদী ইতিহাস নিয়ে উল্লেখযােগ্য কাজ করেছেন নীরা দেশাই, বি. আর. নন্দা, মালবিকা কালেকর প্রমুখ।
(৩.৩) উনিশ শতকে বাংলায় প্রকাশিত সংবাদপত্রগুলির মধ্যে গ্রামবার্তা প্রকাশিকা' পত্রিকা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল মাসে এটি প্রথম প্রকাশিত হয়। এর প্রথম সম্পাদক ছিলেন হরিনাথ মজুমদার । এটি প্রথমে মাসিক পত্রিকা হিসেবে প্রকাশিত হলেও পরে পাক্ষিকও সাপ্তাহিক পত্রিকা হিসেবে প্রকাশিত হয়।
(৩.৪) উইলিয়াম ওয়ার্ড, মার্শম্যান, ও উইলিয়াম কেরি এই তিন জন কেশ্রীরামপুর ত্রয়ী বলা হয়।
(৩.৫) ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ স্থাপনের উদ্দেশ্য ছিল ব্রিটিশ আধিকারিকদের ভারতীয় ভাষায় শিক্ষিত করে তোলা। ... ১৭৮১ সালে কলকাতা মাদ্রাসা, ১৭৮৪ সালে এশিয়াটিক সোসাইটি ও ১৮০০ সালে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের প্রতিষ্ঠা ছিল বৌদ্ধিক চর্চাকেন্দ্র হিসেবে কলকাতা মহানগরীর উত্থানের আদিপর্ব।
(৩.৬) ছোটনাগপুর অঞ্চলের বাইরে থেকে আগত হিন্দু মুসলিম শিখ মহাজনদের কোন উপজাতি গোষ্ঠীর লোকেরা দিকু বলে সম্বোধন করত।
(৩.৭) বিহারের চম্পারণে নীলকর সাহেবরা চাষিদের বিঘা প্রতি (20 কাঠার মধ্যে তিন কাঠা অর্থাৎ 3/20 অংশ) জমিতে নীলচাষ ও নির্দিষ্ট দামে উৎপাদিত নীল নীলকর সাহেবদের কাছে বিক্রি করতে বাধ্য থাকত। এই ব্যবস্থাই তিনকাঠিয়া প্রথা নামে পরিচিত।
(৩.৮) রাণী রাসমণি তার বিবিধ জনহিতৈষী কাজের জন্য খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তিনি তীর্থযাত্রীদের সুবিধার্থে সুবর্ণরেখা নদী থেকে পুরী পর্যন্ত একটি সড়ক পথ নির্মাণ করেন। কলকাতার অধিবাসীদের গঙ্গাস্নানের সুবিধার জন্য তিনি কলকাতার বিখ্যাত বাবুঘাট, আহিরীটোলা ঘাট ও নিমতলা ঘাট নির্মাণ করেন। ইম্পিরিয়াল লাইব্রেরি (অধুনা ভারতের জাতীয় গ্রন্থাগার) ও হিন্দু কলেজ (অধুনা প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়) প্রতিষ্ঠাকালে তিনি প্রভূত অর্থসাহায্য করেছিলেন।
(৩.৯) ১৭৬৩-১৮০০ সাল পর্যন্ত চলা এই বিদ্রোহ কয়েকটি কারণে ব্যর্থ হয়। ১) ১৭৬৬ সাল থেকে সন্ন্যাসী ফকির দের মধ্যে আত্মকলহ এর ফলে বিদ্রোহীরা দুর্বল হয়ে পড়েছিল। ৩) ব্রিটিশদের আধুনিক ও উন্নত অস্ত্রশস্ত্র ও সাংগঠনিক শক্তির সাথে লড়াই করার মত অস্ত্র ও সংগঠন বিদ্রোহীদের ছিলনা। ...
(৩.১০) 1858 খ্রিস্টাব্দের 1লা নভেম্বর ইংল্যান্ডের মহারানী ভিক্টোরিয়ার প্রতিনিধি হিসাবে লর্ড ক্যানিং এলাহাবাদ দরবারে এক ঘোষণাপত্রের দ্বারা ভারতের শাসন ক্ষমতা আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণের কথা ঘোষণা করেন। একে মহারানীর ঘোষণাপত্র বলা হয়।
(৩.১১)বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভার বিলুপ্তির পর বাঙ্গালি ভদ্রলোক এবং জমিদারেরা নিজ স্বার্থ রক্ষায় একটি সমিতি গঠনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন । রাধাকান্তদেবের সভাপতিত্বে ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দে ২১শে মার্চ কলকাতার টাউন হলে একটি সভা বসে ।ঐ সভায় নতুন যে সংগঠনের সূত্রপাত হয় তার নাম রাখা হয় জমিদার সভা বা ল্যান্ড হোল্ডার্স সোসাইটি ।নামটি রাখেন দ্বারকানাথ ঠাকুর ।
উদ্দেশ্য বা কার্যাবলী:—
১।জমিদার সভার প্রধান লক্ষ্য ছিল বাংলা,বিহার ও উড়িষ্যার জমিদারদের স্বার্থ রক্ষা করা ।
২। ভারতীয়দের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতি সহানুভূতিশীল ইংরেজদের সমর্থন ও সহযোগিতা লাভ।
৩।ব্রিটিশ আমলাতন্ত্রকে জমিদারদের স্বপক্ষে আনা ।
৪।ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে শাখা স্থাপন এবং বিভিন্ন অঞ্চলে অধিবাসীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে উদ্যোগী হওয়া ।