History, asked by sandipsannyasi15, 10 months ago

সায়ন্তন একটি হারমােনিয়াম বিক্রি করবে যার ধার্যমূল্য 4000 টাকা। যদি সে ধার্যমূল্যের উপর পরপর যথাক্রমে 20%, 10%
এবং 10% ছাড় দেয়, তবে হারমােনিয়ামের বিক্রয়মূল্য কত হবে এবং সেক্ষেত্রে সমতুল্য ছাড় নির্ণয় করাে।​

Answers

Answered by adityadabad73
2

Explanation:

বাঙালির থেমে থাকা অথবা হয়তো ক্রমাগত ছোট হয়ে আসার একটা বড় উদাহরণ হতে পারে আমাদের বাংলা একাডেমী আয়োজিত একুশের বই মেলা। এর কোনো পরিবর্তন নেই, প্রকৃত বৃদ্ধি নেই, লক্ষ্য-উদ্দেশ্যের কোনো বালাই নেই, ব্যবস্থাপনার কোনো উন্নতি নেই।

দীর্ঘদিন ধরেই এই বই মেলার আয়োজন নিয়ে মৌসুমী কিছু মৃদু কথাবার্তা হয় এবং ফেব্রুয়ারি শেষ হলেই সেই আলোচনা পরবর্তী বছরের জন্য মুলতবি হয়ে যায়। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে, এই আলোচনাটা আরেকটু জোরগলায় করার সময় এসেছে। এই বই মেলাটা আমাদের এবং একে বাড়িয়ে তোলাটা আমাদের সবারই দায়িত্ব।

প্রথমেই প্রশ্ন হচ্ছে– মেলার আয়োজন কেন? যে কোনো মেলার আসলে দুটো উদ্দেশ্য। প্রথমটি বাণিজ্যিক; দ্বিতীয়টি সাধারণ মানুষের বিনোদন। যদিও বিনোদন সামনে রেখেই সাধারণত মেলা আয়োজিত হয়, কিন্তু বাণিজ্যিক দিকটিই আসল উদ্দেশ্য। আমাদের বই মেলার দিকে গভীরভাবে তাকালে দেখা যাবে, অসীম সম্ভাবনা সত্ত্বেও বই মেলা থেকে এই দুটো উদ্দেশ্যের কোনোটিই খুব বেশি অর্জিত হচ্ছে না।

যে কোনো বিকেলে মেলায় প্রবেশ করে দেখুন। বিশেষ করে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে যখন নাগরিক মানুষের বিনোদন প্রয়োজন, তখন তো কথাই নেই। শাহবাগ থেকে লাইনে দাঁড়াবেন এবং সেই লাইনও রিক্সা, গাড়ির মাঝ দিয়ে এঁকেবেঁকে, হকারের পসরা ডিঙিয়ে মেলায় পৌঁছাতে পৌঁছাতে আপনাকে ক্লান্ত করে ফেলবে। এসব দিনে বই মেলার কোনো স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে শান্তিমতো বই দেখা অসম্ভব একটি ব্যাপার। প্রচণ্ড ভিড়ে নিঃশ্বাস ফেলার জো থাকে না। আমি ব্যক্তিগতভাবে অনেককে চিনি যারা বই মেলায় গিয়ে বই কিনতে না পেরে একাধিক ছুটির দিনে ফিরে এসেছেন। আমাদেরকে মেনে নিতে হবে যে, মানুষ এই মেলায় প্রবেশ করে বেড়ানোর আনন্দটুকু ভোগ করতে পারছে না, বইও কিনতে পারছে না। মেলা আয়োজন তাই সফল হচ্ছে বলা যাচ্ছে না।

বই মেলা নিয়ে এই লেজেগোবরে অবস্থার বড় দায় আয়োজক সংস্থা বাংলা একাডেমীর। বিশ্বের সব দেশে যেখানে গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো শৌর্যে-বীর্যে নিজেদের দেশ ও জাতিকে সমৃদ্ধ করতে ব্যস্ত, তখন আমাদের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমীর বছরের ৩ মাস কেটে যায় স্টলের বাঁশ আর চাটাইয়ের ম্যানেজমেন্টে। বই মেলা আয়োজন বাংলা একাডেমীর দায়িত্বের মাঝে পড়ে না, এই বই মেলা তাদের চালুও করা নয়, কিন্তু বছরের পর বছর তারা এই মেলা তাদের আঙিনায় ধরে রাখছে। তা-ও যদি তাদের ব্যবস্থাপনা উন্নতমানের হত, তাহলে হয়তো এক ধরনের সান্ত্বনা পাওয়া যেত। কিন্তু ব্যবস্থাপনার দীনতা বরং জনসমক্ষে একাডেমীর ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের অযোগ্যতা ও অদক্ষতা প্রকট করে তুলছে।

উদাহরণ দেওয়া যাক। প্রথমেই একটি হিসেব দেখি। বই মেলায় ছুটির দিনে প্রতি সেকেন্ডে একেকটি নিরাপত্তা গেট দিয়ে একজন করে মানুষ প্রবেশ করেন। এই স্রোত বিকেল ৪টা থেকে শুরু করে রাত ৮টা পর্যন্ত চলতে থাকে। টিএসসির দিক দিয়ে দুটি প্রবেশ গেট দিয়ে এই হিসাবে লোক ঢুকলে এই সময়ের মাঝেই মেলায় প্রবেশ করেন কমপক্ষে ষাট হাজার মানুষ। ধরে নিতে পারি যে, দোয়েল চত্ত্বর দিয়েও সমসংখ্যক মানুষ মেলায় প্রবেশ করেন। এই বিপুল জনস্রোতের জন্য বাংলা একাডেমীর তথাকথিত টয়লেট আছে মাত্র ৪/৫টা। দেয়ালের সঙ্গে লাগিয়ে রাখা খোলা নোংরা এই টয়লেটই হচ্ছে একাডেমীর ব্যবস্থাপনার মানের একটি বড় প্রতীক। বছরের পর বছর এখানে মেলা আয়োজন করলেও টয়লেট ব্যবস্থাপনাটাই আজ পর্যন্ত সঠিকভাবে করতে পারেনি একাডেমী। মেলা আয়োজনের অন্যান্য বড় ব্যাপারগুলোকে আলোচনায় না টেনে এই টয়লেট তাই উদাহরণ হিসেবে নিলাম।

এর বাইরে প্রতিনিয়ত তাদের অযোগ্যতা আর উদাসীনতা পাল্লা দিয়ে চলছে। এ বছর মেলা শুরুর আগে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছিল। প্রথম দিন থেকেই টাস্কফোর্সের মাঠে নামার কথা থাকলেও অবশেষে ২৫ দিন পর তারা মাঠে নামে। এ অভিযানে নয়টি স্টল থেকে ডোরেমন, পোকেমন, মি. বিন, এনসাইকোলপিডিয়া, বারবি ডলসহ অননুমোদিত প্রায় ১২৫টি বই জব্দ করা হয়। বই মেলার বড় জোয়ারটা ২১ তারিখ পর্যন্ত চলে, কিন্তু টাস্কফোর্স নেমেছে আরও পরে, মেলা শেষ হওয়ার ৪ দিন আগে। এগুলোই বাংলা একাডেমীর ব্যবস্থাপনা-দক্ষতার সীমা। এর বেশি কিছু করার মুরোদ তারা কোনো কালেই দেখাতে পারেনি।

Similar questions