Political Science, asked by surojsk0929, 7 months ago

প্রতিটি প্র
জানি
জোট নির্বাচন করো।
‘নেশন কী’ নামক প্রবন্ধটির রচয়িতা হলেন
A) বঙ্কিমচন্দ্র
৪) বিবেকানন
© রবীন্দ্রনাথ
সুভাষচন্দ্র​

Answers

Answered by sharmachitranshi75
0

Answer:

হালফিলে এক অত্যাশ্চর্য ঘটনা চোখে পড়েছে কিছু পরীক্ষকের। এখানকার কলেজগুলি ইদানীং এই হালফিলের সি বি সি এস পড়ানোর দৌলতে তো প্রায় পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এমনই এক পরীক্ষায় ছেলেপুলেদের জন্য প্রশ্ন দেওয়া হয়েছিল, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় আর প্রমথ চৌধুরী সম্পাদিত পত্রিকার নাম কী ছিল? বি-এ অনার্স বা পাস ছাত্রছাত্রীদের কাছে প্রশ্নটা একটু বেশিই সহজ।

কারণ, কে আর না জানে, বঙ্কিমচন্দ্র আর প্রমথ চৌধুরী সম্পাদিত দুটি কাগজ ছিল বঙ্গদর্শন আর সবুজ পত্র। কলেজের হাতে যে কটা নম্বর আছে, তা যাতে কলেজের ছেলেপুলেরা পায়, এমন একটি ভাবনা থেকেই বুঝি প্রশ্নটা করা হয়েছিল। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, তবু বাংলার পরীক্ষকরা খাতায় দেখলেন, অনেকেই লিখেছে পত্রিকার নাম নাকি উইকিপিডিয়া!!

অনেকের খাতায় আসার কারণ না হয় বোঝা গেল 'হল কালেকশন'-এর ব্যাধি। কিন্তু প্রশ্নটা হল, এর উৎসটা কী? একজন পরীক্ষক বলেছিলেন, আসলে কী জানেন, দেখুন গিয়ে হয়ত হাতে মোবাইল লুকোনো ছিল। সেখানে গুগুল-এ সার্চ দিয়েছিল বঙ্কিমবাবু আর প্রমথবাবুর নাম। প্রথমেই নিশ্চয়ই এসেছিল উইকিপিডিয়া!

সেটাই সটান লিখে দিয়েছে। কথাটায় যুক্তি আছে। তবে ভুলটা তো বড়ো কথা নয়, বড়ো কথা হল ভুলের ধরনটা। এক সময়ে মনে আছে, হল-কালেকশন করতে গিয়ে সতীনাথ ভাদুড়ির লেখা উপন্যাসের নাম ‘ঢোঁড়াইচরিত মানস’--- এ-কান সে-কান হয়ে ফাইনালি হয়ে দাঁড়িয়েছিল ‘ঘোড়ায় চড়া মানুষ’।

শোনা যেত, রবীন্দ্রনাথের অনেক গল্প নাকি 'সানন্দা' পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। বোঝা গেল, সেকালের 'সাধনা' আর একালের ওই একই ধ্বনি-সাদৃশ্য ওয়ালা সাময়িকপত্রের নাম কারো কাছে এক হয়ে গেছে। কে একজন যেন লিখেছিল, প্রসব আর গর্ভপাত সমার্থক। কারণ, গর্ভপাতের অর্থ তার মনে হয়েছিল, গর্ভ থেকে শিশুর পতন আর প্রসব-ও তো তাই-ই।

কিন্তু এখনকার সময়ে দাঁড়িয়ে সেই সব গপ্পোগাছা ফিকে হয়ে আসছে। এখন মনে হচ্ছে, তখন যা নিয়ে খুব মজা দেওয়া যেত, এখন সেই দিনটাও বুঝি অস্তাচলে গেছে! না হলে, কোনো খাতায় উইকিপিডিয়ার সম্পাদক বঙ্কিমচন্দ্র, কোনো খাতায় বৈষ্ণব পদাবলির উত্তরে 'বৈষ্ণব দর্শন' শব্দটিকে আগাগোড়া 'বৈষ্ণব ধর্ষণ' লেখা হয়!!

এ এক গভীর উদ্বেগের কথা। তার মানে এই ছেলেপুলেরা উত্তর তো জানে না-ই! উত্তর না-জানা এক আর উত্তরের ভুলের ধরনটা সম্পর্কেও একেবারেই মাথা না কাজ করা আরেক। এ তো একেবারে গভীর অন্ধকার!

এই এক মহা সমস্যার সম্মুখীন এখনকার বাংলা পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীরা। সাহিত্য পড়া নেই, এমনকি সাহিত্য পড়ার ইচ্ছেও নেই। তবু সাহিত্য পড়তে আসা। প্রায় সমস্ত কলেজের প্রথমে নতুন- আসা ছাত্রছাত্রীদের যখনই জিজ্ঞাসা করা হয়, কেন পড়তে এসেছ সাহিত্য? এর উত্তরে সিংহভাগ শিক্ষকরা যে উত্তরটা পান, তার একদিকে আছে আরেকটি বিষয় পড়তে চাই বলে, অমুক দাদা বা দিদি বলেছে, এখনকার মতো বাংলায় ভর্তি হয়ে থাকতে।

আর অন্যদিকে আছে, নিতান্ত গোল-গোল করে বলা "সাহিত্য পড়তে ভালো লাগে" গোছের উত্তর। সেই ভালো লাগার সন্ধান করতে গেলে শিক্ষকদের অনেক সময়েই এত মন খারাপ হয়ে যায় যে, অনেক শিক্ষকই এখন সাহস করে এর পরের প্রশ্নগুলোতে আর এগোন না। তাদের হালে পড়া গল্প-উপন্যাসের নাম জিজ্ঞাসা করলে যে সব বিচিত্র উত্তরের মুখোমুখি হতে হয়, তার মুখোমুখি হয়ে কে আর হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালোবাসে? তবে এর উত্তরে আগে ফেলুদা থেকে বিশেষ নড়াচড়া হত না। তবে সেখানেও একটু কথা বললে, বোঝা যাবে, এফ এম-এ বা ইউ টিউবে সানডে সাসপেন্স জাতীয় গল্প-শোনাকেই সে পড়া বলে ধরে নিয়েছে।

ফেলুদার পাশাপাশি, এমনকি এক সময়ে হাঁদা-ভোঁদা, বাঁটুলদার নামও শোনা গিয়েছিল। এখন অবশ্য সেই সব শোনার দিনও গেছে। কিন্তু মজা বা দুঃখ হল, তবুও বাংলা সাহিত্য পড়ায় ভিড় কমছে না। বিশেষ করে স্কুল শিক্ষকতার কথা ভেবে, এখনও একটা বিরাট অংশ ছেলেমেয়ে, সাহিত্য নিয়ে পড়ার কথা ভাবে।

Similar questions