মুম্বাই আমেদাবাদ অঞ্চলে কার্পাস শিল্পের একদেশীভবনের কারণ কী?
answer-
Answers
পশ্চিম ভারতের কার্পাস বয়ন শিল্পের একদেশীভবনের কারণ :-
পশ্চিম ভারতের মুম্বাই আমেদাবাদ অঞ্চলে কার্পাস বয়ন শিল্পের একদেশীভবনের কারণগুলি হল ---
(১) কাঁচামাল :-----(i) মহারাষ্ট্র অঞ্চল :-
মহারাষ্ট্রের ডেকানট্র্যাপ অঞ্চলের রেগুর বা কৃষ্ণ মৃত্তিকা অঞ্চলে (অমরাবতী, জলগাঁও, নাসিক, নাগপুর প্রভৃতি) প্রচুর পরিমাণে তুলা উৎপন্ন হয়, যা মুম্বাই সমেত অন্যান্য বস্ত্র শিল্প কেন্দ্রগুলিতে ব্যবহৃত হয়।
(ii) আমেদাবাদ অঞ্চল :-
গুজরাটের রেগুর বা কৃষ্ম মৃত্তিকা অঞ্চলে (আমেদাবাদ, রাজকোট, সুরেন্দ্রনগর প্রভৃতি) উৎপাদিত তুলা নিকটবর্তী বস্ত্রশিল্প কেন্দ্রগুলিতে সরবরাহ করা হয় ৷
(২) জলবায়ু :-----(i) মহারাষ্ট্র অঞ্চল :-
আরব সাগরের তীরে অবস্থিত মুম্বই অঞ্চলের জলবায়ু আর্দ্র প্রকৃতির কারুণ আ্দ্র জলবায়ুতে সুতাে ছেঁড়ার সম্ভাবনা কম। তাই এই অঞ্চল বস্ত্র শিল্প স্থাপনের পক্ষে আদর্শ।
(ii) আমেদাবাদ অঞ্চল :-
এই অঞ্চল খাম্বাত ও কচ্ছসাগরের অনতিদূরে অবস্থিত হওয়ায় জলবায়ু আর্দ্র প্রকৃতির। এই জলবায়ু বয়ন শিল্পের পক্ষে বিশেষ উপযুক্ত।
(৩) বন্দর :-----(i) মহারাষ্ট্র অঞ্চল :-
মুম্বাই ছিল প্রাচীনকালে অতিগুরুত্বপূর্ণ বিন্দর। ফলে বর্তমানে এটিিদেশ থেকে উন্নত যন্ত্রপাতি, উন্নত তুলা (মিশর, সুদান থেকে) আনার যেমন সুবিধা রয়েছে তেমনি বিদেশে বস্ত্র রপ্তানিরও সুবিধা রয়েছে। বর্তমানে নভসেবা বা জওহরলাল নেহরু বন্দর স্থাপন হওয়ায় পণ্য আমদানি ও রপ্তানির সুবিধা আরও বেড়েছে।
(ii) আমেদাবাদ অঞ্চল :-
এই অঞ্চলের বস্ত্রশিল্প কেন্দ্রগুলিকেপ্রথম যুগে পণ্য আমদানি ও রপ্তানির জন্য মুম্বাই-এর ওপর নির্ভর করতে হত পরবর্তীকালে কান্দালা (করমুক্ত বন্দর) পােরবন্দর, সুরাট, ওখা, প্রভৃতি বন্দর স্থাপিত হওয়ায় উন্নত তুলা এবং যন্ত্রপাতির আমদানি ও বস্ত্র রপ্তানির কাজ সহজ হয়েছে।
(৪) শক্তি :-----(i) মহারাষ্ট্র অঞ্চল :-
মুম্বাই-এ বস্ত্রশিল্প প্রাথমিক পর্যায়ে আফ্রিকার নাটালের কয়লা আমদানি করে গড়ে উঠলেও পরবর্তীকালে ভিবপুরী, ভীরা, খােপালি প্রভৃতি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে শক্তির চাহিদা মেটাত। বর্তমানে জলবিদ্যুৎ, তাপবিদ্যুৎ এবং তারাপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে শক্তির জোগান দেওয়া হয়।
(ii) আমেদাবাদ অঞ্চল :-
প্রথমে বস্ত্র শিল্পের জন্য শক্তির জোগান দেওয়া হত আফ্রিকা থেকে আনা কয়লার মাধ্যমে। পরবর্তীকালে উকাই জলবিদ্যুৎ আমেদাবাদ, ধুবারান তাপবিদ্যুৎ ও কাকড়াপাড় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে শক্তির জোগান দেওয়া হয়।
(৫) পরিবহন :----(i) মহারাষ্ট্র অঞ্চল :-
১৮৫৩ সালে মুম্বাই থেকে থানে (ভারতের প্রথম রেলপথ) রেলপথ স্থাপিত হয়। পরবর্তীকালে রেলপথ ও সড়ক পথের সম্প্রসারণ ঘটতে থাকে। বর্তমানে এই অঞ্চল সড়ক, রেল ও আকাশ পথে ভারতের অন্যান্য অংশের সাথে যুক্ত ফলে কাঁচা তুলা শিল্প কেন্দ্রে আনয়ন ও তৈরি বস্ত্র ভারতের বিভিন্ন অংশে প্রেরণ করা সহজসাধ্য হয়েছে।
(ii) আমেদাবাদ অঞ্চল :-
এই অঞ্চল সড়ক ও রেলপথের মাধ্যমে ভারতের অন্যান্য অংশের সাথে উত্তমরূপে যুক্ত। ফলে কাঁচা তুলা ও অন্যান্য সামগ্রী এবং তৈরি বস্ত্রের আমদানি ও রপ্তানি সহজ হয়েছে।
(৬) মূলধন :-----(i) মহারাষ্ট্র অঞ্চল :-
স্থানীয় পার্শী এবং ভাটিয়া শিল্পপতিদের মূলধন, ব্যবসায়িক দক্ষতা এবং পরিচালন ব্যবথা মুদ্বাই অঞ্চলে কার্পাসবয়ন শিল্প গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে। ভারতের অর্থনৈতিক রাজধানী মুম্বাই, বড়াে বড়াে অর্থ লগ্নী সংস্থার সদর দপ্তর (L.I.C., U.T.I., ILD.B.I.) এখানে রয়েছে। তাই শিল্প পরিচালনায় বর্তমানে মূলধনের অভাব হয় না।
(ii) আমেদাবাদ অঞ্চল :-
গুজরাটের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের মূলধন, ব্যবসায়িক দক্ষতা আমেদাবাদ অঞ্চলে কার্পাস বয়ন শিল্পের একদেশীভবনে সাহায্য করেছে। আমেদাবাদেঅসংখ্য ব্যাংকব্যকথা গড়ে ওঠায় বর্তমানে শিল্পে অর্থ লগ্নীকরণ আরও সহজ হয়েছে।
(৭) শ্রমিক :-----(i) মহারাষ্ট্র অঞ্চল :-
কঙ্কন, শােলাপুর, সাতারা কৃষিতে অনুন্নত হওয়ায় প্রচুর সুলভে শ্রমিক প্রাপ্তির সুবিধা রয়েছে।
(ii) আমেদাবাদ অঞ্চল :-
সুরাট, কল্লোল, মহেসানা প্রভৃতি অঞ্চলের প্রান্তিক কৃষিজীবী পরিবার আমেদাবাদ অঞ্চলের কার্পাস বয়ন শিল্পে শ্রমিক হিসাবে কাজ করে।
(৮) চাহিদা ও বাজার :-----(i) মহারাষ্ট্র অঞ্চল :-
চাহিদা বা মুম্বাই ও তৎসংলগ্ন অঞ্চল ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ায় বস্ত্রের চাহিদা খুব বেশি যা বস্ত্রশিল্প গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে। যােগাযােগ ব্যবস্থার উন্নতি, চাহিদা ও বাজারের পরিধির বিস্তার ঘটিয়েছে।
(ii) আমেদাবাদ অঞ্চল :-
মুম্বাই অঞ্চলের মত একই কারণে আমেদাবাদ অঞ্চল ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ায় বস্ত্রের চাহিদা খুব বেশি। পরবর্তীকালে যােগাযােগ ব্যবস্থার উন্নতির সাথে সাথে বাজারের সম্প্রসারণ ঘটেছে এবং চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে।
(৯) পরিশুদ্ধ জলজল :----(i) মহারাষ্ট্র অঞ্চল :-
মুম্বাই অঞ্চলের ভূ-গর্ভস্থ জল বস্ত্রশিল্পে ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া অধিকাংশ কারখানা জলাশয় নির্মাণ করে বর্ষাকালে জল ধরে রাখে।
(ii) আমেদাবাদ অঞ্চল :-
নিকটবর্তী প্রবাহিত নদীগুলির জল বস্ত্র শিল্পে ব্যবহৃত হয়
Please followmeee
mark me as brainliest please followmeee