কেউ কি মহালয়ার আসল মানে জানে?
যে ঠিক উত্তর দেবে, তার উত্তর কে আমি brainliest করবো
If anyone if you, don't understand my language or the question, then pls don't answer......Many are there who can answer the questions correctly but because of you all they aren't...
NO SPAM
Answers
Answer:
মহালয়ার কথা যা আমরা অনেকেই জানিনা,,,
হিন্দু রীতি অনুসারে মহালয়া হল, প্রয়াত পূর্বপুরুষদের জলদান বা তর্পণ করার সর্বশ্রেষ্ঠ তিথি। এ প্রসঙ্গে একটি আখ্যান আছে।
মহাভারতে আছে, কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে নিহত কর্ণ স্বগে গেলে তাঁকে খাদ্য-পানীয়ের পরিবর্তে শুধু সোনা-রুপো খেতে দেওয়া হচ্ছে। বিস্মিত কর্ণ যমরাজকে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, তাঁর প্রতি ওই রকম ব্যবহারের কারণ কী? যমরাজ বললেন, ‘হে কর্ণ, তুমি জীবনভোর শুধু শক্তির আরাধনা করে গেছ। কখনও নিজের পূর্বপুরুষের কথা ভাবোনি, তাঁদের প্রয়াত আত্মাকে খাদ্য-পানীয় দাওনি তাই পুণ্যফলে তুমি স্বর্গে আসতে পারলেও খাদ্য-পানীয় পাবার যোগ্য বলে বিবেচিত হওনি। সেই জন্যেই তোমার প্রতি এই ব্যবহার।’ কর্ণ বললেন, ‘হে ধর্মরাজ! এতে আমার দোষ কোথায়? জন্ম মুহূর্তেই আমার মা আমাকে ত্যাগ করেন। সূত বংশজাত অধিরথ ও তাঁর স্ত্রী আমাকে প্রতিপালন করেন। তার পর আমার শৌর্য দেখে দুযোর্ধন আমাকে আশ্রয় দেন। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ আরম্ভের আগের দিন প্রথমে কৃষ্ণ ও তার পরে মাতা কুন্তী এসে আমার জন্ম ও বংশ পরিচয় জানিয়ে দেন। এর পর যুদ্ধ আরম্ভ হল এবং মাত্র ষোল সতের দিন বেঁচে ছিলাম আমি। পিতৃপুরুষকে জল দেবার সময়ই তো পাইনি আমি।’ আবার তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তাহলে উপায়? আমি কি কোনও দিনও খাদ্য-পানীয় পাব না আর?’ যমরাজ বললেন, ‘উপায় অবশ্য আছে একটা। তা হল— তোমাকে আবার মর্ত্যে ফিরে যেতে হবে। সেখানে গিয়ে পিতৃপুরুষকে জলদান করলে তবেই স্বর্গে খাদ্য-পানীয় পাবে।
যমের নির্দেশে সূর্য যখন কন্যা রাশিতে এবং চন্দ্র মীন রাশিতে প্রবেশ করল সেদিন কর্ণ আবার মর্ত্যে ফিরে এসে এক পক্ষ কাল থেকে পিতৃপুরুষকে তিল-জল দান করে পাপস্খলন করলেন। এক পক্ষ কাল পরে চন্দ্র যখন কন্যা রাশিতে অবস্থান করল তখন কর্ণ স্বর্গে ফিরে গেলেন। এই বিশেষ পক্ষকাল সময়কে শাস্ত্রে পিতৃপক্ষ বলা হয়েছে। পিতৃপক্ষের শেষ দিন হল মহালয়া। এই সময়কালে প্রয়াত পূর্বপুরুষদের তিল-জল দিয়ে স্মরণ করার রীতি চালু আছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে। একে বলা হয় তর্পণ।
কাজেই মহালয়া হল মানুষের প্রয়াত পূর্বপুরুষদের স্মরণ করার দিন। তাকে wish করে শুভেচ্ছা জানানোর কোনও কারণ থাকতে পারে না। কিন্তু মোবাইলধারী প্রায় সব বাঙালি জনগণ sms এবং ওয়াটসঅ্যাপ এর মাধ্যমে মহালয়ার শুভেচ্ছাবার্তা অনর্গল দিয়ে থাকেন। এই ভুল প্রথার প্রধান কারণ হল, মহালয়ার ভোরে আকাশবাণীর মহিষাসুরমর্দিনী গীতিআলেখ্য প্রচার।
১৩৩৯ বঙ্গাব্দের (১৯৩২ খ্রিস্টাব্দ) আশ্বিন মাস। দুর্গাপুজোর মহাষষ্ঠীর ভোরে তত্কালীন ‘ইন্ডিয়ান ব্রডকাস্টিং সার্ভিস’ নামে খ্যাত কলকাতা বেতার কেন্দ্র থেকে সম্প্রচার হল এক অভিনব আগমনী গীতি-আলেখ্য ‘মহিষাসুরমর্দিনী। রচনা: বাণীকুমার, সুর সংযোজনা: পণ্ডিত হরিশচন্দ্র, রাইচাঁদ বড়াল ও পঙ্কজকুমার মল্লিক। স্ত্রোত্র পাঠ: বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র।
বেতার সম্প্রচারের প্রায় একশো বছরের ইতিহাসে এই রকম অনুষ্ঠান আর দ্বিতীয় নির্মিত হয়নি, যার জনপ্রিয়তা এর ধারেকাছে আসতে পারে। ১৯৭৬-এ একবার, মাত্র একবারই মহালয়ার ভোরে বেজে উঠেছিল এক নতুন গীতি-আলেখ্য, কিন্তু সে পরিবর্তন বাঙালি মেনে নেয়নি। প্রত্যাখ্যানের সুর এতটাই চড়া ছিল যে বাদ পড়েননি বাঙালির ‘ম্যাটিনি আইডল’ উত্তমকুমারও, যিনি ছিলেন ওই অনুষ্ঠানের গ্রন্থক। সেই ‘জরুরী অবস্থা’-র জমানাতেও জনগণের প্রবল প্রতিবাদে মহাষ্ঠীর সকালে ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ সম্প্রচার করতে বাধ্য হয়েছিল সরকারি প্রচার মাধ্যম ‘আকাশবাণী’।
প্রথম বছর অর্থাৎ, ১৯৩২-এ দুর্গাষষ্ঠীর ভোরে সম্প্রচারিত হলেও পরের বছর থেকে তা মহালয়ার ভোরে সরিয়ে আনা হয় একটাই কারণে যে, মানুষজন ওই অনুষ্ঠান শোনার জন্য ভোরে ঘুম থেকে উঠবেন এবং তার পর তর্পণ করতে বেরোবেন।
মহালয়া পিতৃপুরুষকে জলদান করার তিথি, এর সঙ্গে দুর্গাপুজোর কোনও যোগ নেই, যোগ নেই মহিষাসুরমর্দিনী’ গীতিআলেখ্যটিরও। মহালয়ার পর থেকে দেবীপক্ষের সূচনা হয়।
আন্তরিক শারদীয়া শুভেচ্ছা রইল।
I think this can help you.
Please mark me the brainliest and Rate me and give me thanks.