প্রতিবেদন....
অনলাইন ক্লাসের সুবিধা - অসুবিধা
DON'T SPAM . PLEASE :D
Answers
Explanation:
দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোসহ অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের পাঠদানের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছে ইন্টারনেট। তবে, সকল স্তরের শিক্ষার্থীরা সমান সুবিধা পাচ্ছে কি-না তা নিয়ে আছে নানান কথা। শহুরে শিক্ষার্থীরা ইন্টারনেটের ডাটা স্পিড পর্যাপ্ত পেলেও এক্ষেত্রে পিছিয়ে গ্রাম্য শিক্ষার্থীরা।
আবার, ইন্টারনেটের উচ্চমূল্য এবং স্মার্টফোন না থাকায় ব্যবধান দেখা যাচ্ছে বিত্তবান ও গরিব শিক্ষার্থীদের মাঝে। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মন্তব্য তুলে ধরেছেন হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) শিক্ষার্থী যোবায়ের ইবনে আলী
আর্থসামাজিক বৈষম্য দৃশ্যমান অনলাইন ক্লাসে
বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অবস্থার ভিত্তিতে অনলাইন ক্লাস বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য আশীর্বাদ না হয়ে বোঝায় পরিণত হয়েছে। করোনাকালীন সময়ে সবার মাঝেই অস্থিরতা, হতাশাসহ নানাবিধ মানসিক সমস্যা অনুভূত হচ্ছে তারই মাঝে অনলাইন ক্লাস বিষফোঁড়া হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেটের করুণ হালের ফলে গ্রামে অবস্থানকারী শিক্ষার্থীরা অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ করতেও পারছে না।
এ নিয়ে তাদের মাঝে ক্যারিয়ার এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিচ্ছে। অনলাইন ক্লাসে এক শ্রেণি উপকার পেলেও অন্য শ্রেণি অবহেলার শিকার হচ্ছে। অনলাইন ক্লাস সামাজিক এবং আর্থসামাজিক বৈষম্যকে আরও প্রখর ভাবে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে।
করোনায় লেখাপড়া হয়ে পড়েছে গতিহীন
বৈশ্বিক মহামারির এই সময়ে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়াটা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। অতিরিক্ত ডাটা কেনা, ইন্টারনেট স্পিড, ওয়াইফাই থাকলেও লোডশেডিং ইত্যাদি রকমের সমস্যায় জরাজীর্ণ হয়েও এগিয়ে চলার খাতিরে করতে হচ্ছে অনলাইন ক্লাস।
তবে পড়ালেখার গতি হারিয়ে যাচ্ছে ক্রমশ। মোবাইল বা ল্যাপটপের টাইপিং স্পিড বাড়লেও খাতায় লেখা ভুলতে চলছে ছাত্রসমাজ। শিক্ষক পড়া ধরার কোনো কারবার নেই, তাই নির্ধারিত সময়ে পড়া কমপ্লিট করারো নেই কোনো কারবার। কোর্স সম্পর্কিত কত প্রশ্ন যে বাফারিং এ উবে যায় তা নাহয় বাদ থাক। করোনা পরিস্থিতির পরও এই স্থিতিজড়তা কাটানো সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।
অনলাইন পদ্ধতি শিখছি না অ্যাকাডেমিক শিখছি
এই করোনাকালীন লকডাউনে শিক্ষার্থীদের হাতে প্রচুর সময়। সময় থাকলে কী হবে, এই সময়কে যথাযথ ব্যবহার করতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা! অনলাইন ক্লাসের নানান জটিলতা, ইন্টারনেট ডাটা, নেটওয়ার্ক স্পিড ও টেকনোলজিক্যাল সমস্যা। সব মিলিয়ে একটা ঘোরের মধ্যে থাকতে হয় শিক্ষার্থীদেরকে। প্রায় সব ক্যাটাগরির শিক্ষার্থীদের যেনো একই দশা। সর্বোপরি বলা যায়, আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা এখনো ভার্চুয়াল সিস্টেমটাকে সিরিয়াসলি নিতে পারছেন না।
কারণ, আমাদের পুরো দেশে এখনো নেটওয়ার্ক এবং ভার্চুয়াল টেকনোলজি ব্যবহারের পরিবেশটা হয়ে উঠেনি এবং আমরা এসব ব্যবহারে অভ্যস্ত না। এমনকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকেও শিক্ষার্থীরা টেকনোলজি ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রাকটিক্যাল শিক্ষাটা সম্পূর্ণভাবে পায়নি। অনলাইনের এই নতুন পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের মাথায় প্রশ্ন ছুড়ে দেয়, আমরা অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে অনলাইন ক্লাস করার পদ্ধতি শিখছি নাকি অ্যাকাডেমিক পড়ালেখা শিখছি?
অনলাইন ক্লাসের চাহিদা অপূর্ণ থেকে যাচ্ছে
করোনা ভাইরাসের কারণে অচল শিক্ষাকার্যক্রমকে সচল করতে শুরু হয়েছে অনলাইন ক্লাস। সেশনজটের জাঁতাকল থেকে মুক্তির নিমিত্তে পড়াশোনা পুশিয়ে নিতে নিঃসন্দেহে এটি প্রশংশনীয় উদ্যোগ।
তবে অনলাইন ক্লাসের প্রধান অন্তরায় ইন্টারনেটের মন্থর গতি। অনলাইন ক্লাস কারো জন্য আশীর্বাদ, কারো অভিশাপ। অনেক শিক্ষার্থী বিভিন্ন সমস্যার কারণে ক্লাসে উপস্থিত হতে পারছে না।
ফলে বড় একটা অংশ ক্লাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে ক্লাসের যথেষ্ট চাহিদা অপূর্ণই থেকে যাচ্ছে। পড়া বুঝতে না পারলে দুই একজন প্রশ্ন করার সুযোগ পেলেও বেশির ভাগ তা পাচ্ছে না। অনলাইন ক্লাসে তাত্ত্বিক জ্ঞান মিললেও ব্যবহারিক জ্ঞান থেকে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি।