Global warming essay in bengali
Answers
→ বর্তমানে প্রগতির ঘোড়ায় সওয়ার হয়ে উন্নয়নের রঙিন চশমা পড়েছে মানুষ।
→ কিন্তু লাগামছাড়া উন্নয়ন আঁধার নামিয়ে আনছে, তা জেনেও বুঝতে চাইছে না মানুষ।
→ তাই ভূমন্ডলীয় উষ্ণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
→ এর একটা গালভরা নাম আছে, বিশ্ব ঊষ্ণায়ন বা গ্লোবাল ওয়ার্মিং।
বর্তমানে প্রগতির ঘোড়ায় সওয়ার হয়ে উন্নয়নের রঙিন চশমা পড়েছে মানুষ। কিন্তু লাগামছাড়া উন্নয়ন আঁধার নামিয়ে আনছে, তা জেনেও বুঝতে চাইছে না মানুষ। তাই ভূমন্ডলীয় উষ্ণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর একটা গালভরা নাম আছে, বিশ্ব ঊষ্ণায়ন বা গ্লোবাল ওয়ার্মিং।
বিশ্ব উষ্ণায়ন কি ও কিভাবে হয়?
চারিদিকে যে বিশ্ব উষ্ণায়নের চাপে জেরবার মানুষ, তা আসলে কি? গ্রিণ হাউস গ্যাসের প্রভাব, ওজোন স্তরের ক্ষয়, অরণ্যচ্ছেদন প্রভৃতি কারণে বায়ুমন্ডলের উষ্ণতা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, একেই গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা বিশ্ব উষ্ণায়ন বলে।
গ্রিন হাউস গ্যাসগুলি হল- কার্বন ডাই-অক্সাইড, মিথেন ও নাইট্রাস অক্সাইডের সমন্বয়ে গঠিত একটি গ্যাস। এ গ্যাস পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। সূর্য থেকে আগত তাপশক্তি ভূপৃষ্ঠকে উত্তপ্ত করে এবং বিকিরিত তাপশক্তির অধিকাংশই পুনরায় বায়ুমন্ডলে ফিরে যায়। কিন্তু মনুষ্যসৃষ্ট দূষণ এবং বনভূমি ধ্বংস করার ফলে বায়ুমন্ডলে গ্রিন হাউস গ্যাসের পরিমাণ প্রচুর বেড়ে গেছে। এর ফলে বিকিরিত তাপশক্তি পুনরায় বায়ুমন্ডলে ফিরে যাওয়ার পথে বাধাগ্রস্থ হয় এবং এভাবেই বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে বড় কারণ হল বিশ্ব উষ্ণায়ন বৃদ্ধি।
পরিসংখ্যান:
বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখেছেন, গত ১০০ বছরের অনুপাতে প্রমাণিত যে এই তাপমাত্রা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। যেখানে বিগত প্রায় ৮০০০ বছর ধরে তাপমাত্রা প্রায় স্থির ছিল। বিজ্ঞানীরা আরও জানিয়েছেন, বিগত ১০০ বৎসরে পৃথিবীর তাপমাত্রা ০.৫ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা জানিয়েছেন, আগামী তিরিশ বছরের মধ্যে ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা ১.৫ডিগ্রী থেকে ২.০ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড হবে। ২১০০ সালের মধ্যে ১.৮ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড থেকে ৬.৩ডিগ্রী সেন্টিগ্রেডের মতো বৃদ্ধি পেতে পারে বলে বিজ্ঞানীদের অনুমান।
বিশ্ব উষ্ণায়ন-এর কারণ:
ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা বৃদ্ধির মূল কারণ মানুষ। হ্যাঁ আমরাই সভ্যতাকে ক্রমশ ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছি। শিল্প, নগরায়ন, প্রগতির পথে এগিয়ে লাগামছাড়া উন্নয়নের প্রচেষ্টায় নিজের ক্ষতি নিজেরাই ডেকে আনছি আমরা। যেসব কাজের ফলে গ্রিণ হাউজ গ্যাসের বৃদ্ধি ও ওজোন স্তরের ক্ষতি হচ্ছে, সেগুলি হল-
ক) কলকারখানা, যানবাহন, বিদ্যুৎ উৎপাদন সবকিছুতেই জীবাশ্ম জ্বালানী ব্যবহারের পরিমাণ বৃদ্ধির ফলে কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমনের পরিমাণও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। খ) কলকারখানা-যানবাহনের বিষাক্ত কালো ধোঁয়া, ট্যানারির বর্জ্য পদার্থ, জেট বিমান, রকেট উৎক্ষেপণ– এইসব থেকে নাইট্রাস অক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড, সালফারের কণা উৎপাদন হয়, যা ক্ষতিকারক। গ) এয়ার কন্ডিশনার, ফোম শিল্প, প্লাস্টিক শিল্প ইত্যাদিতে ব্যবহৃত ক্লোরোফ্লুরোকার্বন ওজোন স্তরের ক্ষতির অন্যতম কারণ। ঘ) গাছপালার পচন, কৃষিজ বর্জ্য এবং জীব জন্তুদের বর্জ্য থেকে মিথেন গ্যাসের পরিমাণ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বিশ্ব উষ্ণায়নের পেছনে সবথেকে বড় কারন অরণ্যচ্ছেদন। গাছপালা কেটে ফেলার জন্য বায়ুমন্ডলের কার্বন ডাই অক্সাইড শুষে নেওয়ার ক্ষমতা কমে যাচ্ছে।