India Languages, asked by srabani041, 1 day ago

একটি বই এর আত্মকথা



please answar me in Bengali​

Answers

Answered by rabia2005
57

Answer:

ভূমিকা:

মানব জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ কি? কেউ বলবে টাকা পয়সা, কেউ আবার বলবে জমিজমা। তবে এ মানব জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ যেটি, তা হল জ্ঞান। ধনসম্পত্তি একটি মানুষের মনুষ্যত্বকে গঠন করে না, কিন্তু জ্ঞান তা করে। টাকা পয়সা মানুষের জীবনে স্থায়ী না ও হতে পারে, কিন্তু অর্জিত জ্ঞান কখনো কোনো পরিস্থিতিতেই মানুষকে ছেড়ে যায় না।

পরম সম্পদ জ্ঞানের প্রাথমিক উপাদান হলো তথ্য এবং উপলব্ধি। উপলব্ধি আসে তথ্য আহরণের মাধ্যমে মানবাত্মার অন্তস্থল থেকে। আর সেই উপলব্ধির মূল তথ্যের আকর আধার হলো পুস্তক বা বই। মানুষ একটি বই থেকে তথ্য আহরণ করে মানসিক উপলব্ধি ঘটিয়ে নিজের মধ্যে জ্ঞানের সঞ্চার ঘটায়।

কিন্তু একবার জ্ঞান আহরণের পর সংশ্লিষ্ট বইটির খোঁজ কেউ রাখে কি! কেউ কেউ রাখে, কেউ বা রাখে না। যারা রাখেনা তাদের কাছে অবহেলায় অযত্নে তথ্যসমৃদ্ধ সেই বই গুমরে কাঁদে জীবনের কান্না। আমি তেমনই এক দুর্ভাগা অসহায় বই, নিজের দীর্ঘ জীবনের সায়াহ্নে আপন জীবন গাঁথা ব্যক্ত করার বাসনায় এই প্রতিবেদনের উপস্থাপনা করছি।

বাংলা রচনা নিয়ে এসেছে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য একটি বিশেষ ই-বুক। একান্ত নির্ভরযোগ্য প্রবন্ধ রচনার উত্তরসহ সাজেশন। অতি সামান্য মূল্যে এই বইটি কিনতে এখানে ক্লিক করুন।

আমার জন্মের কাহিনী:

একটি বই কি দিয়ে তৈরি হয়? কাগজ দিয়ে? না! তথ্য দিয়ে? তাও না! একটি বই তৈরি হয় সংযোজিত তথ্যের একত্র উপলব্ধি দিয়ে। অযাচিত অপরিশীলিত তথ্য কখনও একটি সার্থক বইয়ের জীবন রচনা করতে পারে না। কাগজ, তথ্য ও কালির বন্ধনীতে বাধা হলেও তা নিষ্প্রাণ হয়েই পড়ে থাকে।

আরেকটি নিষ্প্রাণ বই মানব মনে জ্ঞানের উন্মেষ ঘটাতে পারেনা। সংযোজিত তথ্যের একত্র পরম উপলব্ধিই একটি বইকে জন্ম দেয়। কালি, অক্ষর কিংবা কাগজ সেই বইটির শরীর রচনা করে মাত্র। আমার আত্মার প্রকৃত জন্ম হয়েছিল বহু আগে বাংলার প্রবাদপ্রতিম লেখক শ্রী সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের হাতে। আমি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বিখ্যাত রচনা ‘সেই সময়’ উপন্যাসকে নিজের শরীরে ধারণ করি।

আমার শরীর গঠন সম্পন্ন হয় কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের একটি কারখানায়। কিন্তু তখন আমার চোখ ফোটে নি। আমি তখনও বুঝতে পারিনি আমার প্রকৃত স্বরূপ আসলে কি। একটি বইয়ের চোখ তখনই ফোটে যখন কোন প্রকৃত পাঠক তাকে প্রথমবারের জন্য চোখের সামনে খুলে দেখে।

প্রথমবার পাঠকের হাতে:

আমার অন্তরাত্মা ও শরীরের মিলনের ফলে পার্থিব জন্মের কিছুদিনের মধ্যেই আমার আশ্রয় হয় জন্মস্থানের অনতিদূরেই একটি বইয়ের দোকানে। সেইখান থেকে কয়েক দিনের মধ্যেই একজন পাঠক আমায় কিনে নিয়ে গিয়ে তার বাড়ির বইয়ের সাজানো শোকেসে আমায় স্থান দেন। তখনও নিজের স্বরূপকে উপলব্ধি করতে না পারলেও একথা বেশ বুঝতে পারছিলাম আমার চারপাশে থরে থরে সাজানো রয়েছে প্রবাদপ্রতিম লেখকদের বিভিন্ন কালজয়ী রচনা।

তারপর একদিন আমার সেই পাঠক আমায় তার শোকেস থেকে বার করে অতি যত্ন সহকারে প্রথম পাতাটি খুলে আমার বুকে আঁকা কালো অক্ষরের কারাগারে নিজের দৃষ্টি নিবদ্ধ করলেন।

অতি মনোযোগ সহকারে তার পাঠের সঙ্গে সঙ্গে আমি উপলব্ধি করতে পারছিলাম আমার শরীরের অন্তঃস্থলে লুকিয়ে থাকা আপন আত্মার প্রকৃত স্বরূপকে। আবিষ্কার করছিলাম আমার শরীরের ভেতর যে রত্নরাজি লুকিয়ে আছে তার জৌলুস। আপন সত্তায় মাতোয়ারা হয়ে সেই পাঠকের চোখে দেখেছিলাম অদ্ভুত এক উন্মাদনা।

হাত ফেরত:

প্রথম পাঠকের হাতে সেই কয়েকটি দিন আমার অতি যত্ন সহকারে কেটেছিল। সুখের সেই দিনগুলি আজও আমার স্মৃতির পটে সমুজ্জ্বল। তবে সেই সুখ স্থায়ী হলো না বেশিদিন। আমার শেষ পাতাটি পড়ে শেষ করবার পরই পুনরায় আমার স্থান হল সেই সাজানো শোকেসে। সেখান থেকে কিছুদিন পর হাতবদল হয়ে আমি পৌঁছলাম আমার দ্বিতীয় পাঠকের হাতে। ইনি আমার প্রথম পাঠকের একজন বন্ধু।

এইবার আর সাজানো শোকেস নয় আমি পড়ে রইলাম অন্ধকার একটি বন্ধ ঘরের একটি ধুলোমাখা টেবিলের কোনায়। পড়ার উদ্দেশ্যে নিয়ে গিয়েও আমার সেই দ্বিতীয় পাঠক একটি পাতাও খুলে কোনদিন দেখল না। এইভাবে অন্ধকারে কতদিন কেটে গিয়েছিল জানিনা। ধীরে ধীরে অযত্নে-অবহেলায় আমার শরীরে একটু একটু করে পোকা ধরলো। তারা আমার পাতাগুলিকে কাটতে শুরু করলো নির্বিচারে।

তার কিছুদিন পরেই দ্বিতীয় পাঠকের অন্ধকার টেবিলের কোনা থেকে বেরিয়ে আমি পৌছলাম আমার তৃতীয় পাঠকের হাতে। পাঠক নন, ইনি পাঠিকা। এই পাঠিকা আমায় গ্রহণের দ্বিতীয় দিনেই অতি আগ্রহ সহকারে বহুদিন পর আমার পাতাগুলিকে নিজের স্নিগ্ধ হাতে উন্মোচিত করে

Answered by kingsaeed631
7

উপরের উত্তর অবশ্যই সঠিক

Similar questions