PN Thakur was pseudonym who migrated from India to abroad
Answers
Answer:
sydufudufidudufydy
Explanation:
jcufududififif
Answer:
Rashbehari bose
Explanation:
১১ই মে ১৯১৫। কলকাতা পুলিশ কমিশনারের আপিসে সম্ভ্রান্ত বেশবাসে এলেন এক ভদ্রলোক। রাজা পি এন ঠাকুর। সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নিকট আত্মীয়।
নোবেলজয়ী কবি জাপান থেকে সেদেশে অতিথি হবার ডাক পেয়েছেন সদ্য সদ্য। কাগজেও সে খবর বেরিয়েছিল।
পি এন ঠাকুর কমিশনারের কাছে এসেছেন পরিচয়পত্রের জন্য। জাপান যাবেন তিনি, পরের দিনই বেলা বারোটায় জাহাজ ছাড়বে। কলকাতা থেকে কোবে। কবির আসন্ন জাপানযাত্রার আগাম তদারকির দায়িত্ব পড়েছে তাঁরই ওপর।
লর্ড হার্ডিঞ্জের ওপর প্রাণঘাতী হামলা হয়েছে কিছুদিন আগেই। অসফল হামলা। ব্রিটিশ পুলিশ হন্যে হয়ে খুঁজছে রাসবিহারী বোসকে। সাংঘাতিক লোক যাকে বলে! পাঁকাল মাছকেও হার মানায়! এই আছে এই নেই!
কাগজে রবীন্দ্রনাথের জাপানযাত্রার সম্ভাবনার কথা পড়ে আইডিয়াটা খেলে গিয়েছিল বোসের মাথায়। নাহ্, এই লালকুত্তার জাত পুলিশগুলি এদেশে টিকতে দেবে না তাঁকে। পরাধীনতার লাঞ্ছনা, ক্ষোভ অন্তরে দাউ দাউ করে জ্বলছে সতত। সে আগুন নেভার নয়। বাইরে বেরিয়ে এই বিপ্লবকে আরও সংগঠিত করতে হবে। হ্যাঁ, জাপান আর চীন। এরাই দিতে পারে আশ্রয়।
টাকা লাগবে। কম করেও হাজার টাকা। বিদেশে তো এর আগে কখনও যাননি। জানেনও না কিছু। দূরে বলতে গেছেন বার্মা।
টাকার যোগাড় করেছে ঢাকার বিপ্লবী সংগঠন। শচীন (শচীন্দ্রনাথ সান্যাল) কিনে এনেছে জাহাজের টিকিট। বন্ধু গিরিজাবাবু (নরেন্দ্রনাথ দত্ত চৌধুরী) দুখানি স্যুট কাটিয়ে এনেছে সাহেবপাড়া থেকে।
প্রিয় সকলকে, আত্মীয়বন্ধুদের ছেড়ে যেতে হবে সম্পূর্ণ অজানা অচেনা দেশে। না জানেন তাদের ভাষা, না তাদের আদবকায়দা, রীতি, রেওয়াজ! বুকটা ভারি হয়ে উঠছে। জাহাজ তো নয়, এ তো স্টীমার! মাটির দিকে চোখ গেল বোসের। গলার কাছটা একদলা কান্নায় বুজে আসছে। "মা গো, তোর বুকে আর ফিরতে পারবো তো! তোর শেকল ভেঙে ফেলতে চেয়ে নিজেই তোকে ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছি!"
না, রাসবিহারী বোস আর দেশে ফিরে আসতে পারেননি। তবে তর্কাতীতভাবে তিনিই এ দেশের শ্রেষ্ঠতম বিপ্লবী ছিলেন। ব্রিটিশদের চোখে ধুলো দিয়ে জাপানে পালিয়ে তিনি এককালে জাপান সরকারের দ্বিতীয় সর্বোত্তম সম্মান অর্জন করেছিলেন। ফ্রান্স ও জার্মানি থেকে যথাক্রমে চিকিৎসাবিদ্যা ও প্রযুক্তিবিদ্যার ডিগ্রীলাভ করেছিলেন এই চিরবিপ্লবী। জাপানে থেকেই সারা এশিয়া জুড়ে অনাবাসী ভারতীয়দের নিয়ে জাতীয়তাবাদী সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন। ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তিনিই। ব্যাঙ্ককে এই সংগঠনের সভায় আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন ভারতমায়ের আরেক সুযোগ্য সন্তান, সুভাষচন্দ্র বোসকে। বোসের হাতেই সঙ্গতকারণে আইএনএর দায়িত্বভার ছেড়ে দিয়েছিলেন রাসবিহারী। তবে তিনি চুপ করে বসে থাকেননি। কালান্তক যক্ষারোগে মারা যাওয়ার আগে অবধি তাঁর জীবনের একটিই লক্ষ্য ছিল, ভারতের স্বাধীনতা।
বিদেশে একরকম চোরের মতো পালিয়ে পালিয়ে বেড়িয়েছেন। জাপান পুলিশকে ব্রিটিশরা খবর করেছিল। দমেননি একটুও। সহৃদয় বিপ্লবী বন্ধু মিৎসুরু তোমায়ার সাহায্যে দয়ালু সোমা পরিবারে আশ্রয় জুটেছিল। ধরা পড়ার ভয়, যাবতীয় অনিশ্চয়তা উপেক্ষা করে দ্রুত শিখে নিচ্ছিলেন জাপানি ভাষা, রীতি রেওয়াজ। বিয়ে করেছিলেন ঐ পরিবারেরই কন্যেকে। মাটি কামড়ে পড়ে থেকেছেন বিদেশের মাটিতে, দেশমায়ের শৃঙ্খলামোচনের স্থির অবিচল লক্ষ্যে।
বাঙালি ছিলেন? ভাবলে অবিশ্বাস্য মনে হয়। এই বর্ধমানেই জন্ম মানুষটির। এই বাংলায়। আমরা ভুলে গেছি। আমরা আর কি পারি!
আমাদের ধার করা বিপ্লবী চেতনায় রাসবিহারী বোসের স্থান হয় না। স্থান হয় না নেতাজি সুভাষের। মাগো, রেখেছ বাঙালি করে, মানুষ করোনি।
আজ রাসবিহারী বোসের পুণ্য আবির্ভাব দিবস। শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি ভারতমায়ের সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এই সন্তানকে। প্রণাম।