Subject is Geography.
Class:X.
Marks:2.
1) নদীর ষষ্ঠঘাতের সূত্র লেখো?
Answers
Explanation:
what language is this???
Answer:
Advertisements
Ad
☻সংজ্ঞাঃ নদী তার ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট পদার্থগুলিকে (শিলাখন্ড, বালুকা, কর্দম প্রভৃতি) বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় তার জলস্রোতের সাথে বয়ে নিয়ে অগ্রসর হয়, একে নদীর বহনকার্য (Transportation of River) বলে ।
নিয়ন্ত্রকঃ নদীর বহনকার্য – এর নিয়ন্ত্রকগুলি হলো মূলত তার জলের পরিমান, গতিশক্তি, ভূমির ঢাল, বাহিত বোঝার পরিমান, শিলার প্রকৃতি, নদী উপত্যকার প্রকৃতি প্রভৃতি । তবে এদের মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ হলো নদীর জলের পরিমান ও নদীর গতিবেগ । প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, নদীর গতিবেগ (Velocity) প্রত্যক্ষভাবে নির্ভর করে ঢালের (Slope) উপর । নদীর ঢাল বৃদ্ধি পেলে নদীর গতিবেগও বৃদ্ধি পায় । যদি একটি নদীর গতিবেগ দ্বিগুণ হয়ে যায় তাহলে তার বহন করার ক্ষমতাও সেই অনুপাতে ৬৪ গুণ বৃদ্ধি পাবে । অর্থাৎ, নদীর বহন করার ক্ষমতা তার গতিবেগের (Velocity) ষষ্ঠঘাত (Sixth Power) বৃদ্ধি পায় । একে নদীর ষষ্ঠঘাতের সূত্র (Sixth Power Law) বলে ।
আবার, নদীর জল কমে গেলে অথবা অধিক পরিমানে শিলাখন্ড নদীতে এসে পড়লে তার বহন করার শক্তিও সেই অনুপাতে কমতে থাকে ।
নীচে নদীর বহনকার্য – এর নিয়ন্ত্রকগুলি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো –
১. নদীর জলের বেগঃ নদীর জলপ্রবাহের গতিবেগ সর্বদা নদীর শক্তির সাথে সমানুপাতিক; অর্থাৎ, নদীতে জলের বেগ বাড়লে নদীর ক্ষয় ক্ষমতা ও বহন ক্ষমতা যেমন বেড়ে যায়, ঠিক তেমনই বেগ কমলে উভয়ই কমে যায় ।
২. নদীতে জলের পরিমানঃ নদীতে জলের পরিমান বাড়ার সাথে সাথে যেমন নদীর ক্ষয় ও বহন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, তেমনই জলের পরিমান কমে গেলে উভয়ই হ্রাস পায় ।
৩. ভূমির ঢালঃ ভূমির ঢালের উপর নির্ভর করে নদীস্রোতের গতিবেগ অর্থাৎ, ভূমির ঢাল বেড়ে গেলে নদীর ক্ষয় ও বহনশক্তি যেমন বেড়ে যায়, তেমনই ভূমির ঢাল কম হলে নদীর গতিবেগও ধীর হয়ে যায় । ফলত নদীর শক্তি (ক্ষয় ও বহন) হ্রাস পায় ।
৪. শিলার প্রকৃতিঃ নদীবক্ষ গঠনকারী শিলার প্রকৃতির উপরও নদীর বহনকার্য অনেকাংশে নির্ভর করে ।
৫. নদীবাহিত বোঝার পরিমাণ ও আকৃতিঃ নদীর বহনকার্য নদীবাহিত বোঝার পরিমাণ উপর বহুলাংশে নির্ভর করে । অর্থাৎ, একটি নদী বৃহদাকার প্রস্তরখন্ড যে পরিমাণে বহন করতে পারবে, তা অপেক্ষা ক্ষুদ্রাকার প্রস্তরখন্ড ঐ নদীটি অধিক পরিমাণে বহন করতে পারবে ।
এবং
৬. উপত্যকার প্রকৃতিঃ নদী উপত্যকার আকৃতির উপরেও নদীর বহনকার্য অনেকাংশে নির্ভর করে । অমসৃণ ও আঁকাবাঁকা নদী উপত্যকায় নদীর বহনকার্য বিঘ্নিত হয় । তুলনায় নদী উপত্যকা অপেক্ষাকৃত মসৃণ ও সোজা নদী অধিক পরিমাণে বহনক্রিয়া সম্পন্ন করে থাকে ।
নদীর বহনকার্যের প্রক্রিয়াসমূহ: নদীর বহনকার্য মূলত নিম্নলিখিত চারটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন করে থাকে । যথা –
১. লম্ফদান প্রক্রিয়ায় বহন: মাঝারি থেকে বৃহৎ আকৃতির শিলাখন্ডগুলি নদীর স্রোতের টানে নদীখাতের সাথে ধাক্কা খেয়ে লাফাতে লাফাতে অগ্রসর হয়ে অন্যত্র বাহিত হয় । একে লম্ফদান প্রক্রিয়ায় বহন বলে ।
২. ভাসমান প্রক্রিয়ায় বহন: অপেক্ষাকৃত হালকা, ক্ষুদ্রাকার প্রস্তরখন্ড, বালি, পলি, কর্দম কণা প্রভৃতি নদীর স্রোতের সাথে চক্রাকারে ঘুরতে ঘুরতে অগ্রসর হয় । একে ভাসমান প্রক্রিয়ায় বহন বলে ।
৩. টান বা আকর্ষন প্রক্রিয়ায় বহন: নদীর প্রবল স্রোতের টানে অপেক্ষাকৃত বড় বড় শিলাখন্ডগুলি নদীর তলদেশ দিয়ে গড়াতে গড়াতে অগ্রসর হয় । একে নদীর টান বা আকর্ষন প্রক্রিয়ায় বহন বলে । অবশ্য এই প্রক্রিয়ায় কেবলমাত্র বড় বড় শিলাখন্ডই নয়, নুড়ি-বালি-কাকর প্রভৃতিও পরিবাহিত হয়।
৪. দ্রবণ প্রক্রিয়ায় বহন: বিভিন্ন প্রকার লবনশিলা, চুনাপাথর প্রভৃতি নদীর গতিপথে অবস্থান করলে তা নদীর জলপ্রবাহের সংস্পর্শে এসে দ্রবীভূত হয়ে যায় এবং ঐ দ্রবীভূত অবস্থাতেই স্থানান্তরে পরিবাহিত হয় । একে নদীর দ্রবণ প্রক্রিয়ায় বহন বলে ।