মূল্যবোধ ও দেশ প্রেমের অভাবে দুর্নীতির বিস্তার ঘটে
Answers
মূল্যবোধ ও দেশপ্রেমের অভাবে দুর্নীতি ঘটে
ভূমিকা: বর্তমান পৃথিবীর দিকে তাকালে সমস্ত রকম উন্নতি ও সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি দেখা যাবে প্রাকৃতিক সম্পদের অবক্ষয়, উচ্ছৃঙ্খলতা, লড়াই, হিংসা, ভেদাভেদ, মারামারি ও দলাদলি। মানুষকে গ্রাস করেছে পুঁজিবাদ আর তাই তাদের মধ্য থেকে লোপ পেয়েছে মূল্যবোধ ও দেশপ্রেম।
ব্যবসায়িক মূল্যবোধ: একবিংশ শতাব্দীর দুনিয়া দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে যন্ত্রের হাত ধরে। আর তার সাথে তাল মিলিয়ে বিপুল পৃথিবীতে সত্যিকারের মানুষের সংখ্যা ক্রমশ কমেই চলেছে। যন্ত্রের অপব্যবহার মানুষকে তার স্তর থেকে নামিয়ে তাকে পশু বানিয়েছে। আজ মূল্যবোধের লড়াই বাস্তবের চেয়ে বেশী দেখা যায় ফেসবুক, হোয়াট্সঅ্যাপ, ট্যুইটার ইত্যাদি সোশ্যাল নেটওয়ার্কে। যে শিক্ষার উদ্দেশ্যই হ'ল মানুষ তৈরী করা, আজ সে শিক্ষা ব্যবসায়িক মাধ্যমে রূপান্তরিত হয়েছে। মূল্যবোধ আজ শুধু মৃত পুঁথিতে বন্দি। শিক্ষাই যেখানে জাতির মেরুদন্ড, সেই শিক্ষা ও শিক্ষানবিসরা দেশে দেশে ক্রমাগত আঘাত সহ্য করে চলেছে। কোথায় মূল্যবোধ? ব্যবসায়ী তার ক্রেতাদেরকে অর্থের উৎস মনে করে, মানুষ নয়। রাজনীতির নেতারা মানুষকে তার ভোটব্যাঙ্ক রূপে দেখে, মানুষ নয়। আর যেখানে মানুষ মানুষই নয়, সেখানে কীসের মূল্যবোধ। প্রতি বছর সারা পৃথিবীতে কয়েক লক্ষ ধর্ষণ হচ্ছে। মেরে ফেলা হচ্ছে লক্ষ লক্ষ মানুষকে। কোথায় তখন মূল্যবোধ? ভুলে গিয়েছে সবাই যে, "সবার উপরে মানুষ সত্য। তাহার উপর নাই।"
বিকৃত দেশপ্রেম: চোখের উপরের কালো পর্দা সরালেই স্পষ্ট দেখতে পাবে যে, সত্যিকারের মানবপ্রেম-দেশপ্রেমের বর্তমান বিকৃত স্বরূপ। যারা নিজের মা'কে "মা" সম্বোধন করতে কুণ্ঠাবোধ করে, নিজের বাবাকে "বাবা" বলে মানতে চায়না, আজ তারাই দেশপ্রেমের ধ্বজা উড়িয়ে চলেছে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের কথা বাদই দেওয়া যাক। ভারতবর্ষের মতো বিপুল দেহধারী এই মহান দেশের "জন্মভূমিই আমার স্বর্গ" বার্তা লোপ পেয়েছে। দেশপ্রেমের নামে চলছে লুট। কে কতো গুছিয়ে উঠতে পারে। সামনে রয়েছে দেশপ্রেমের ঝান্ডা। কোটি কোটি টাকা লুট করে নিয়ে ফেরার হচ্ছে আসামী। সব মিলিয়ে যেখানে মানুষের মূল্য অর্থের বাটখারায় মাপা হয়, সেসব দেশের দেশপ্রম আজ বিকৃত।
দুর্নীতি: নীতি যেখানে ভ্রষ্ট, দুর্নীতির আঁতুড় ঘর তো সে স্থান হ'বেই। মূল্যবোধ না থাকলে, সেখানে হ'বে সম্পদের অপচয় ও অপব্যবহার। মানুষে মানুষে গড়ে উঠবে ভেদাভেদ। প্রস্তুত হ'বে ধ্বংসের এক মঞ্চ। দেশপ্রেম না থাকলে, মানবপ্রেম না থাকলে, গড়ে উঠবে এক ভয়ঙ্কর শ্রেণী। আর তাদের কার্যকলাপে সুবিধার বিষদাঁত ফোটাবে দেশী ও বিদেশী শত্রুরা। তারা ব্যস্ত হ'বে কোনো দেশের ভিত্তিপ্রস্তর নড়িয়ে দিতে।
উপসংহার: শুধুমাত্র খাদ্য, বাসস্থান, স্বাস্থ্যের সুরাহা করলে চলবে না। সত্যিকারের শিক্ষার প্রয়োজন। সেই সাহসিকতার শিক্ষা যার সাহায্যে একজনের মেরুদন্ড শক্ত হ'বে। মাথা নীচু করে ভিক্ষা নয়, মাথা উঁচু করে নিজের অধিকার বুঝে নেবে সে। মূল্যবোধের শিক্ষা, যার সাহায্যে বটগাছের মতো দৃঢ় চরিত্র তৈরী হ'বে। দেশপ্রেম ও মানবপ্রেমের শিক্ষা, যার ফলে চরিত্রের মধ্যে সত্যই এক জাতীয়তাবাদ ফুটে উঠবে।
আরও একটি ভালো প্রশ্ন:
অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পাশ-ফেল প্রথা চালু করা নিয়ে দুই বন্ধুর কাল্পনিক সংলাপ রচনা করো। - https://brainly.in/question/7782292
মূল্যবোধ ও দেশ প্রেমের অভাবে দুর্নীতির বিস্তার ঘটে
অংশীদারি মূল্যবোধ হ্রাস, অপ্রত্যাশিত নেতাদের উত্থান, সম্পদ ও ক্ষমতার ক্রমবর্ধমান ঘনত্ব, বিজ্ঞান, যুক্তি, দক্ষতা এবং সত্যের প্রত্যাখ্যান, জেনোফোবিয়া এবং মেরুকরণের জন্য ক্রমহ্রাসমান, বিশ্ব আরও বিপজ্জনক স্থানে পরিণত হচ্ছে তরুণ এবং ভবিষ্যতের প্রজন্মের চাহিদা ও আকাঙ্ক্ষা, পরিবেশগত সম্পদ ও জীবন-সহায়তা ব্যবস্থার প্রধানতম ধ্বংস, জলবায়ুর অস্থিতিশীলতা এবং স্বল্পমেয়াদী মুনাফার জন্য গ্রহকে ধর্ষণকারী ণচ্যুত অর্থনৈতিক ও আর্থিক ব্যবস্থা। এই বিপরীত বাতাস অতীতের অগ্রগতির অনেক আশাবাদী লক্ষণগুলি সরিয়ে নিয়েছে এবং মনে হয় আমাদের একাধিক মাত্রা এবং অকল্পনীয় পরিণতির বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
দুর্নীতিটিকে ঘুষ, ভাগ্নতন্ত্র এবং অপব্যবহার সহ বেসরকারী লাভের জন্য ক্ষমতা এবং অবস্থানের অপব্যবহার হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়; আমলাতন্ত্রের ক্রিয়াকলাপগুলিতে প্রভাব অর্জনের জন্য ব্যক্তি বা গোষ্ঠীগুলির অতিরিক্ত আইনী প্রচেষ্টা; পরবর্তীকালের সুবিধার জন্য সরকারী ও বেসরকারী খাতের দলগুলির মধ্যে জোটবদ্ধকরণ; এবং আরও বিস্তৃত জনকল্যাণ ব্যয় করে অবদানকারী বেসরকারী দলগুলিকে উপকৃত উপায়ে নীতি ও সংস্থাগুলির রূপদানকে আরও সাধারণভাবে প্রভাবিত করছে
স্বার্থপর এবং আক্রমণাত্মক হওয়া একেবারে স্বাভাবিক এবং অনেকের কাছেই "আপনি মানুষের প্রকৃতি পরিবর্তন করতে পারবেন না"। দুর্নীতি হ'ল যুদ্ধ, অপরাধ, স্বৈরশাসক এবং আজকের বিশ্বে স্বার্থ-স্বার্থ যে আরও অনেক উপায়ে প্রকাশিত হয়েছে তার মতোই এর বহিঃপ্রকাশ। যে সমস্ত সভ্যতায় এই বিভাজনের শক্তিগুলি প্রাধান্য পেয়েছে তা শেষ পর্যন্ত ভেঙে পড়েছে।
এটা স্পষ্ট বলে মনে হচ্ছে যে আজ আমাদেরকে হুমকির সম্মুখীন একাধিক চ্যালেঞ্জের একমাত্র সমাধান হ'ল সমাজের আধ্যাত্মিক ভিত্তি শক্তিশালী করা, এবং প্রতিটি ইচ্ছুক ব্যক্তিকে অভ্যন্তরীণ রূপান্তর প্রক্রিয়া শুরু করতে সহায়তা করা এবং প্রতিটি সম্প্রদায় নিজেকে দায়বদ্ধতার সম্মিলিত প্রক্রিয়াতে চালিত করতে এবং রূপান্তর। কেবলমাত্র এই পথেই আমরা বিশ্ব সমাজের জন্য নীচ থেকে উপরে দৃ নৈতিক ভিত্তি পুনর্গঠন করতে পারি যা অবশেষে হতাশা ও উত্তরণের এই যুগ থেকেই উত্থিত হতে হবে।