India Languages, asked by sumitraojha09, 1 year ago

আলাউদ্দিন খলজি কেন বিখ্যাত​

Answers

Answered by DEBOBROTABHATTACHARY
0

ভারতবর্ষের মুসলিম শাসকদের মধ্যে বিজেতা হিসাবে শ্রেষ্ঠ ছিলেন আলাউদ্দিন খিলজি। দৃঢ়তা ও অসীম সাহসিকতা পূর্ণ যুদ্ধকৌশলের জন্য ইতিহাসে বিখ্যাত হয়ে আছেন তিনি। তাঁর কূটনীতিজ্ঞানও ছিল প্রশংসা করার মতো। ... তবে এ-ও ঠিক এদেশের বুকে সুলতানি সাম্রাজ্যবাদ ও আগ্রাসননীতির সূচনা হয়েছিল আলাউদ্দিনের হাত ধরেই।

অবদানঃ

● হিন্দুস্তানের প্রতি সুলতান আলাউদ্দীন খিলজির আরেকটি বৃহৎ অবদান হচ্ছে, দাক্ষিণাত্যকে হিন্দুস্তানের মূল ভূ-খন্ডের সাথে একত্রিত করা। হিন্দুস্তানের মূল ভূ-খন্ড থেকে দাক্ষিণাত্য সবসময়েই আলাদা ছিলো। তবে, গৌড় শাসনামলে দাক্ষিণাত্যের শেষ সীমানা কন্যাকুমারিকা পর্যন্ত গৌড় শাসন পৌঁছুতে পেরেছিলো। এরপর আর কোনো শাসকই দাক্ষিণাত্য শাসন করতে পারেন নি। কিন্তু সুলতান আলাউদ্দীন খিলজি ছিলেন ব্যতিক্রম। তিনি দাক্ষিণাত্য বিজয় করতে পেরেছিলেন।

● আলাই মিনার, পুরাতন দিল্লীর কুতুব মিনার কমপ্লেক্সে মিনারটি অবস্থিত। সুলতান আলাউদ্দীন খিলজির দাক্ষিণাত্য বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে এই মিনারটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। এর নির্মাণ শুরুর সালটি সঠিকভাবে জানা না গেলেও ধারণা করা হয়, ১৩০০ সালের দিকে এর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ১৩১৬ সালে সুলতানের মৃত্যুর সময় মিনারটির মাত্র এক তলা সম্পন্ন হয়।

● গোটা সাম্রাজ্যে তিনি মাদকপান নিষিদ্ধ করেন। এমনকি মাদক উৎপাদনেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

● একজন সুলতানের সুষ্ঠুভাবে শাসন করার জন্য প্রয়োজন হয় রাষ্ট্রের অভ্যন্তরের বিভিন্ন গোপন তথ্যের। আর এসব তথ্য সংগ্রহ করার জন্য গোটা রাজ্যজুড়ে তিনি অসংখ্য গুপ্তচর ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিয়েছিলেন। এ গুপ্তচরেরা রাজ্যে সুলতানের চোখ-কান হিসেবে কাজ করতো। রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থেকে শুরু করে অতি তুচ্ছ তথ্যও মূহুর্তেই সুলতানের কাছে পৌছে যেতো!

● হিন্দুস্তানের ইতিহাসে সুলতান আলাউদ্দীন খিলজির পূর্বে সেনাবাহিনীর সদস্যরা নির্দিষ্ট কোনো বেতন পেতেন না। বরং তাদের জমির জায়গীর দান করা হতো। তিনি এই জায়গীর ব্যবস্থার পরিবর্তন করে সেনাবাহিনীর সদস্যদের নির্দিষ্ট বেতন দেয়ার রীতি শুরু করেন।

● সুলতান আলাউদ্দীন খিলজির সময়ে সাম্রাজ্যের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন ছিলো ‘দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ’ করা। এ ব্যবস্থায় নিত্য ব্যবহার্য প্রতিটি পণ্যের মূল্যই রাষ্ট্র থেকে নির্ধারণ করে দেয়া হতো। শুধু নির্ধারণ করে দিয়েই তিনি তাঁর দায়িত্ব থেকে হাত গুটিয়ে নিলেন না। বরং তাঁর নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে মানা হচ্ছে কিনা, তা পর্যবেক্ষণ করে গুপ্তচররা নিয়মিত সুলতানকে রিপোর্ট করতো। গুপ্তচররা ঘুরে ঘুরে বাজার পর্যবেক্ষণ করতেন।

● দ্রব্যমূল্য কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা ছাড়াও, প্রশাসনের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে যে ঘুষের রীতি প্রচলিত ছিলো, তা সুলতান আলাউদ্দীন খিলজি কঠোরহস্তে নির্মূল করেন।

● সুদৃঢ় ও কঠোর ব্যবস্থা দ্বারা তিনি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে এনেছিলেন। তার শাসনব্যবস্থা জনকল্যাণমূলক ছিল।

● প্রশাসনিক ব্যবস্থার পুনর্বিন্যাস তার শাসনামলের বিরাট সাফল্য। তিনি রাজস্ব আদায়কারী খুত, মুকাদ্দাম ও চৌধুরীদের অত্যাচার থেকে প্রজাদের রক্ষা করেছিলেন।

● ভূমি জরিপ ব্যবস্থা ভারতবর্ষে মুসলিম শাসক হিসেবে তিনিই সর্বপ্রথম প্রবর্তন করেন। রাষ্ট্রের কাজের জন্য অশ্বকে চিহ্নিত করার প্রথা প্রবর্তন করে তিনি সামরিক বাহিনীতে প্রচলিত দুর্নীতি দমন করেন।

Similar questions