২. সপুষ্পক উদ্ভিদের ক্ষেত্রে নিষেক এবং নতুন উদ্ভিদের গঠন কিভাবে হয় তা একটি রেখাচিত্রের সাহায্যে উপস্থাপন করো। ইতর পরাগযোগের দুটি অসুবিধা উল্লেখ করো
উত্তর: ◾ ইতর পরাগযোগ এর দুটি অসুবিধা:-
• ইতর পরাগ যোগে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের মধ্যে পরাগ যোগ এর ফলে প্রজাতির বিশুদ্ধতা নষ্ট হয়।
• ইতর পরাগযোগে জনিতৃ বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রিত হয় না।
Answers
নিষেক :- যে প্রক্রিয়া তে পুংগ্যামেট ও স্ত্রীগ্যামেটের মিলন হয় তাকে নিষেক বলে।
নিষেক প্রক্রিয়া :-ফুল হল সপুষ্পক উদ্ভিদের জনন অঙ্গ ,পরাগ রেনুকে পুং গ্যামেট আর ডিম্বাণু কে স্ত্রী গ্যামেট বলে। পরাগ রেনুর নিউক্লিওস টি দুটি অসমান ভাগে ভাগ হয় , এবং একটি নালিকা নিউক্লিওস ও একটি জনন নিউক্লিওস গঠন করে। পরাগ সংযোগ হলে পরাগ রেনু থেকে উৎপন্ন পরাগ নালিকা ডিম্বকের দিকে এগিয়ে যায়, প্রথমে এটি নালিকা নিউক্লিওস ও পরে জনন নিউক্লিওস এর সঙ্গে মিলিত হয় , এর পর নালিকা নিউক্লিওস টি নষ্ট হয়ে যায় ,আর জনন নিউক্লিওস টি দুটি পুংগ্যামেট এ পরিনত হয় ( n),
নিষেকের আগে ডিম্বকের নিউক্লিওস টি বার বার বিভক্ত হয়ে আট টি নিউক্লিওস তৈরি করে , এদের মধ্যে তিন টি করে মোট ছয় টি ভ্রুন থলির দুই প্রান্তে অবস্থান করে, এদের মধ্যে সব থেকে বড় নিউক্লিওস টি হল ডিম্বাণু ।
পরাগ রেনু যখন গর্ভমুণ্ডে এসে পরে পরাগ নালিকা তৈরি করে এর মধ্যে দুটি পুংগ্যামেট থাকে, এই পরাগ নালিকা ডিম্বক রন্ধ্র কে ছেদ করে ভ্রুন থলিতে প্রবেশ করে, এদের একটি ডিম্বকের সঙ্গে মিলিত হয় , একেই নিষেক বলে, অন্যটি নির্ণীত নিউক্লিওস এর সঙ্গে মিলিত হয়।
পরাগরেণু >পরাগরেণু এর গর্ভমুণ্ডতে স্থানান্তরন > গ্যামেট উৎপাদন > পুং ও স্ত্রী গ্যামেট এর মিলন ও নিষেক > জাইগােট>ভ্রণ > ফল > বীজ অঙ্কুর > শিশু উদ্ভিদ
ইতর পরাগযােগের দুটি অসুবিধা:-
i) পরাগযােগ কীট পতঙ্গ ওপর নির্ভরশীল, এই জন্য অনেক সময় পরাগযােগ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।অনেক সংখ্যক পরাগরেণু নষ্ট হয়।
ii)নানা ধরনের ফুলের মধ্যে ইতর পরাগযােগের ফলে প্রজাতির বিশুদ্ধতা নষ্ট হয়।
যে পদ্ধতিতে পুংগ্যামেট এবং স্ত্রীগ্যামেট স্থায়ীভাবে মিলিত হয়ে ডিপ্লয়েড (2n) কোশ জাইগােট গঠন করে নতুন জীব সৃষ্টি করে, তাকে নিষেক (Fertilization) বলে।
সপঙ্কক উদ্ভিদের নিষেক পদ্ধতি :
1. পরাগযােগ : ফুলের পুংকেশরে পরাগধানী থেকে পরাগরেণু (n) উৎপন্ন হয় এবং বাহক দ্বারা বা বাহক ছাড়া একই ফুলের বা অন্য ফুলের স্ত্রীস্তবকের গর্ভমুণ্ডে স্থানান্তরিত হয়।
2. পরাগরেণুর অঙ্কুরােদগম এবং পুংগ্যামেট সৃষ্টি : গর্ভমুণ্ড থেকে রস শােষণ করে পরাগরেণু স্ফীত হয় এবং অন্তস্তক থেকে একটি নল সৃষ্টি করে। একে পরাগরেণুর অঙ্কুরােদগম বলে। পরাগনালির মধ্যে নিউক্লিয়াস বিভাজিত হয়ে একটি নালিকা নিউক্লিয়াস এবং একটি জনন নিউক্লিয়াস গঠন করে। জনন নিউক্লিয়াসটি বিভাজিত হয়ে দু’টি পুংগ্যামেট গঠন করে।
স্ত্রীগ্যামেট সৃষ্টি : ফুলের ডিম্বাশয়ে এক বা একাধিক ডিম্বক থাকে। ডিম্বকে রেণু মাতৃকোশ থেকে চারটি স্ত্রীরেণু বা মেগাস্পাের গঠিত হয়। তিনটি স্ত্রীরেণু নষ্ট হয় এবং একটি সক্রিয় স্ত্রীরেণু ভ্ৰণস্থলী গঠন করে এবং পরপর চার বার বিভাজিত হয়ে আটটি নিউক্লিয়াস গঠন করে। এর মধ্যে একটি ডিম্বাণু বা স্ত্রীগ্যামেট থাকে।
নিষেক : পরাগনালিকা ভুণস্থলীতে প্রবেশ করলে পুংগ্যামেট দুটির একটি ভ্ৰূণস্থলীতে উৎপন্ন ডিম্বাণুর (n) সঙ্গে মিলিত হয়ে জাইগােট (2n) গঠন করে এবং অপর পুংগ্যামেটটি নির্ণীত নিউক্লিয়াসের সঙ্গে মিলিত হয়ে সস্য নিউক্লিয়াস (3n) গঠন করে। জাইগােট থেকে পরে ভূণ গঠিত হয় এবং সস নিউক্লিয়াস থেকে সস্য গঠিত হয়।
ভুণ, ফল ও বীজ গঠন : ডিপ্লয়েড জাইগােট মাইটোসিস পদ্ধতিতে বিভাজিত হয়ে ভ্রণ গঠন করে। ডিম্বকটি বীজে পরিণত হয় এবং ডিম্বাশয় পরিণত হয়ে ফল গঠন করে।
অপত্য উদ্ভিদ গঠন : বীজের মধ্যে অবস্থিত ভ্ৰূণ অনুকূল পরিবেশে অর্থাৎ আলাে উষ্ণুতা, অক্সিজেনের উপস্থিতিতে অঙ্কুরােদগম ঘটে এবং নতুন অপত্য উদ্ভিদ সৃষ্টি করে। এর জ্বণমূল অংশ থেকে মূল এবং ভ্রণ মুকুল অংশ থেকে কাণ্ড গঠিত হয়।