ঘ) ভারতের ক্রান্তীয় চিরহরিৎ ও ম্যানগ্রোভ অরণ্যের অবস্থান ও বৈশিষ্ট্য
লেখাে।
Answers
Answer:
ম্যানগ্রোভ (Mangrove) বা লবণাম্বুজ এক বিশেষ ধরনের উদ্ভিদ যা সাধারণত সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলের নোনা বা লবণাক্ত পানিতে জন্মায়। বাংলা শব্দ লবণাম্বুজ বিশ্লেষণ করলে দুটি শব্দ পাওয়া যায় লবণ এবং অম্বুজ বা জলে জন্ম অর্থাৎ লবণাক্ত জলামাটিতে জন্মানো উদ্ভিদ৷
ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদের অভিযোজন
একশটিরও বেশি গাছ ম্যানগ্রোভ বাস্তুতন্ত্রে জন্মায়। কয়েকটি ম্যানগ্রোভ গাছের উদাহরণঃ সুন্দরী (Heritiera fomes), গরান, গেঁওয়া (Excoecaria agallocha), কেওড়া (Sonneratia apetala) ইত্যাদি।
শ্বাসমূলসহ ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ। জোয়ারের সময় শ্বাসমূলের সাহায্যে ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ শ্বসন কাজ চালায়।
গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনার বদ্বীপের সুন্দরবন বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন। এর নাম সম্ভবত হয়েছে সুন্দরী গাছের নাম থেকে। এটি অন্যান্য ম্যানগ্রোভ জঙ্গলের থেকে বেশি বৈচিত্রপূর্ণ। এর জলা জঙ্গলে যে ১০০টিরও বেশি প্রজাতির গাছ জন্মায় তার মধ্যে অন্ততঃ ২৮টি সত্যিকারের ম্যানগ্রোভ।[১]
ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ, পানির উপরের এবং নিচের অংশ একসাথে দেখান হয়েছে।
এইসব গাছে সাধারণতঃ থাকেঃ
শ্বাসমূল: ছড়ানো মূল তন্ত্রের উর্ধমূখী শাখা যা ভুমি/জলতলের উপরে জেগে থাকে এবং এর ডগায় নিউমাটাপোর নামে শ্বাসছিদ্র থাকে।
জরায়ুজ প্রজনন: এদের বীজ খসবার আগেই ফলের মধ্যেই অঙ্কুরিত হয়ে থাকে। মাটিতে পড়লেই সরাসরি গেঁথে মূল বিস্তার করতে পারে।
পৃথিবীতে মাত্র ১০ টি ম্যানগ্রোভ বনের আয়তন ৫০০০ এর বেশি। পৃথিবীর সমগ্র ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের ৪৩ ভাগ ইন্দোনেশিয়া, ব্রাজিল অস্ট্রেলিয়া এবং নাইজারে অবস্থিত এবং ভারত ও বাংলাদেশে অবস্থিত সুন্দরবন বিশ্বে একক বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন যা ইউনেস্কো ঘোষিত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে বিশ্বের বুকে পরিচিত করে। এটি প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চর্য হিসেবেও মনোনীত হয়।