সৌরদিন ও নক্ষত্রদিনের দুটি পার্থক্য লেখ।
Answers
Answer:
খুব সহজ একটি পরীক্ষার সাহায্যে বিষয়টা বোঝা যেতে পারে। তার জন্যে আপনাকে যেটা করতে হবে, সেটা হলো-
একটি ঘরের ঠিক মাঝখানে একটা বিন্দু আঁকুন বা একটা বল বা কিছু একটা রাখুন। এটা হলো সূর্য।
চারপাশের দেয়ালে আরো কিছু বিন্দু আঁকুন বা রঙিন কাগজ সেঁটে নিন। এগুলো হলো দুরের নক্ষত্র।
এবার আপনি নিজে পৃথিবী হবেন। ঘরের মাঝখানে রাখা বস্তুটির চারপাশে আপনাকে ঘুরতে হবে। পুরো ৩৬০ ডিগ্রী ঘুরে আসতে হবে।
যেকোন জায়গা থেকে শুরু করতে পারেন। প্রথমে আপনাকে মাঝের বস্তুটির দিকে মুখ ফিরে দাঁড়াতে হবে। তারপর ওই বস্তুটির চারপাশে ঘুরতে শুরু করুন।
ঘোরার সময় লক্ষ্য রাখবেন যেন মাঝের বস্তুটি সবসময় আপনার চোখে চোখে থাকে। অর্থাৎ সারাক্ষন ওর দিকে মুখ রেখে তবেই ঘুরবেন।
এভাবে পুরো একটি চক্কর দিয়ে ফেলার পর ভাবতে বসবেন।
পুরো পথে সূর্যটা আপনার মুখমন্ডলে আলো ফেলেছে, অর্থাৎ আপনার দিনে-রাতের কোন পরিবর্তন হয়নি। পৃথিবীর একটা পৃষ্ঠ সবসময় মাঝের সূর্যটার দিকে মুখ করে ছিল, চাঁদ যেভাবে পৃথিবীর দিকে মুখ করে থাকে। পুরো বছরে আপনার দিন-রাত্রির পরিবর্তন ছিল শূন্য।
কিন্তু ওই একই সময়ে আপনি কিন্তু দেয়ালে আঁকা সবগুলো নক্ষত্রকে একবার দেখে ফেলেছেন। প্রশ্ন হচ্ছে, সবগুলো দেয়ালকে আপনি কিভাবে দেখতে পেলেন? কারণ আপনি সবদিকেই মুখ ফিরিয়েছেন। সূর্যের সাপেক্ষে আপনার দিনের কোন পরিবর্তন হয়নি কিন্তু পিছনের ওই তারাগুলো একবার করে উদিত হয়ে অস্ত গেছে, একবার করে আপনার সামনে এসেছে। ওদেরকে ধরে দিনের হিসেব করলে আপনি বছরে একটি দিন পেতেন। ঠিক যেমন চাঁদ সবসময় পৃথিবীর দিকে মুখ করে থাকলেও, ওর সব পৃষ্ঠে সূর্যের আলো লাগে।
পৃথিবীর কথায় ফিরে আসি। আমরা জানি এখানে মোটামুটি ৩৬৫ দিনে এক বছর, তার মানে সূর্যের চারপাশে ৩৬০ ডিগ্রী ঘুরে আসার কালে পৃথিবী ৩৬৫ বার ঘুরে ঘুরে সূর্যকে দেখে, তাইতো। কিন্তু পৃথিবী কি আসলেই মাত্র ৩৬৫ টি চক্কর দিল নিজ অক্ষের উপরে? না। পৃথিবী আসলে ৩৬৫+১=৩৬৬ টি চক্কর দিল। একটি আমরা ধরতে পারিনি সূর্যের দিকে বেশি মনোযোগ দিয়েছি বলে।
কিন্তু পিছনের নক্ষত্রগুলোরে খেয়াল করলে দেখতাম যে, ওরা প্রতিদিন প্রায় ১ ডিগ্রী করে সামনে পশ্চিমে এগিয়ে যাচ্ছে। তারমানে বছরে প্রায় ৩৬০ ডিগ্রী বেশি ঘুরছে। মানে ওদের হিসেবে আমরা ৩৬৫+১ বার ঘুরেছি।
সেকারণে আমরা প্রতি ২৩ ঘণ্টা ৫৬ মিনিট ৪ সেকেন্ডে একবার ৩৬০ ডিগ্রী ঘুরলেও, সূর্যকে তার আগের অবস্থানে পেতে আরো ৩ মিনিট বেশি, মানে ২৪ ঘণ্টা লাগে।
এই ৩ মিনিট বেশি ঘুরতে হচ্ছে কেন? কারণ ২৩ ঘণ্টা ৫৬ মিনিটে আমরা ৩৬০ ডিগ্রী ঘুরছি ঠিকই, কিন্তু একই সময়ে সূর্যের চারপাশে প্রায় ১ ডিগ্রী পথ এগিয়ে যাচ্ছি। ফলে আমাদের সম্মুখ থেকে সূর্য ১ ডিগ্রী পিছিয়ে পড়ছে। এটুকু ঘুরে সূর্যকে একেবারে আগের দিনের অবস্থানে আনতে আমাদের ৩ মিনিট লাগে। আর এই ৩ মিনিটে পৃথিবী আরো একটু এগিয়ে যায়, সেটা পূরণ করতে আরো কয়েক সেকেন্ড লাগে।
তার মানে প্রতি বছরে আমাদের সৌরদিন ৩৬৫.২৫ টি হলেও নক্ষত্রদিন একটা বেশি। কিন্তু বছর তো বছরই। তাই নক্ষত্র দিনের দৈর্ঘ্য ছোট হয়।
কারো বুঝতে অসুবিধা হলে জানাবেন, একটা ছবি এঁকে দেখাতে পারলে আরো পরিস্কার হবে।
ধন্যবাদ।
Answer:
And mnd ka dola jo na naacha vo behen ka loda