History, asked by humaira27, 6 months ago

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ৭ই মার্চের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণে তাৎপর্য বিশ্লেষণ কর।​

Answers

Answered by MITAN19
0

Answer+Explanation:

৭ ই মার্চ ১৯৭১ সালে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান Suhrawardy Udyan) অনুষ্ঠিত জনসভায় শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক প্রদত্ত এক ঐতিহাসিক ভাষণ। ভাষণটি শুরু হয়েছিল ২টা ৪৫ মিনিটে এবং শেষ হয়েছিলো বিকেল ৩টা ৩ মিনিটে। এই ১৮ মিনটের ভাষণই যেন জাগিয়ে তুলেছিল স্বাধীনতার স্বপ্ন। ২০১৭ সালের ৩০ শে অক্টোবর ইউনেস্কো (UNESCO) এই ভাষণকে ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

বাংলাদেশের ইতিহাসে এই ভাষণের তাৎপর্য কতটা তা হয়তো ভাষণটি শুনলেই বুঝা যায়। ভাষণটি শুনলেই যেন শরীরের ভিতর আবারও যুদ্ধের বাসনা জেগে উঠে। ঠিক যেমন ১৯৭১ জেগে উঠে ছিল আমাদের দামাল ছেলেরা। মূলত ৭ ই মার্চের ভাষনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালিদেরকে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান।

মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ৭ই মার্চের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের তাৎপর্য

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ৭ই মার্চের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের তাৎপর্য অনেক গভীর। ভাষণটির প্রেক্ষাপট ছিল, ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ (Awami League) নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। ৭ ডিসেম্বরের নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের ১৬৯ আসনের মধ্যে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ পায় ১৬৭টি আসন। পরবর্তীতে পশ্চিম পাকিস্তানের নেতা জেড এ ভুট্টো আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যাপারে ষড়যন্ত্র শুরু করে। ১৯৭১ সালের পহেলা মার্চ যখন সারাদেশের মানুষ উৎসুক হয়ে অপেক্ষায় ছিল প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের (Yahya Khan)ভাষণ শুনার জন্য কিন্তু ইয়াহিয়া খান জাতীয় পরিষদের অধিবেশন বাতিল করায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তীব্র ক্ষোভে ফেটে পরলেন। এবং একে পাকিস্তানি শাসকদের স্বৈরাচারী মনোভাব বলে আখ্যায়িত করলেন। মানুষ ২ মার্চ ও ৩ মার্চ সারাদেশে হরতাল মিছিল পালন করলো।

এরপর প্রথমবারের মতো স্বাধীনতার ডাক এলো “বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো।" শুরু হলো অসহযোগ আন্দোলন। গঠিত হলো স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ। সারাদেশ ৭ই মার্চের অপেক্ষায় থাকলো। জাতির পিতা এমন একটি সংকটময় মুহূর্তে ভাষণ দেওয়ার জন্য উদ্দত হয়েছিলেন যেই সময়ে পূর্ব পাকিস্তান তাদের সমস্ত শক্তি নিয়ে প্ৰস্তুত ছিল এবং বলেছিলো বিশ্বাসঘাতকদের (বাঙালী) হত্যার জন্য ট্যাঙ্ক, কামান, মেশিনগান সবই প্রস্তুত রাখা হবে। প্রয়োজন হলে ঢাকাকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হবে। শাসন করার জন্য কেউ থাকবে না কিংবা শাসিত হওয়ার জন্যও কিছু থাকবে না।’

বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের সামরিক কর্তৃপক্ষকে চারটি শর্ত দিয়ে ভাষণের শেষাংশে বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ ভাষণটির কিছু অংশের বাখ্যা করা যাক। ভাষণটিতে শুধু যুদ্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়নি বরং সেই সাথে কিভাবে যুদ্ধে জয়ী হওয়া যায় তাও বলা হয়েছে। ভাষণে তিনি বলেছেন ২৮ তারিখে কর্মচারীরা যেন তাদের বেতন নিয়ে আসে। এরপর বলেছেন যদি বেতন না দেয় আর আর যদি একটা গুলি চলে, আর যদি আমার লোককে হত্যা করা হয়, তোমাদের ওপর আমার অনুরোধ রইল প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো। তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে এবং জীবনের তরে রাস্তাঘাট যা যা আছে সবকিছু আমি যদি হুকুম দেবার নাও পারি তোমরা বন্ধ করে দেবে।’ এখানে সুস্পষ্টভাবে বলা যায় বঙ্গবন্ধু বাংলার মানুষের অধিকারের এবং অধিকার আদায়ের জন্য যুদ্ধের ডাক দিয়েছেন। আর সেই অধিকার আসবে পাকিস্তানি গোলামদের শিকল ভেঙে। ওই সময়ে বঙ্গবন্ধুর প্রাণ সংশয় ছিল তাই তিনি বলেছিলেন আমি যদি হুকুম দিতে নাও পারি (জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হলেও) তাও যেন যুদ্ধ না থামে। ভাষণে আরও বলেছিলেন "ভাতে মারব, পানিতে মারব" এখানে তিনি পাকিস্তানী বাহিনীকে গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে উপর্যুদস্ত করার কথাই বলেছিলেন।

১৮ মিনিটের এই ভাষণের প্রভাব আমাদের মুক্তিযুদ্ধের উপর কতটা প্রভাবিত ছিল তা ১৮ দিন পর অর্থাৎ ২৫ মার্চ রাত আমাদের বলে দেয়। ওই দিন রাতে ঢাকা (Dhaka) শহরে শুরু হয় গণহত্যা, ধর্ষণ। তাজা প্রাণ লুটেছে মাটিতে। তারপর বাংলার দামাল ছেলেরা ভয় পায় নি। বরং ৯ মাস নিজের শেষ রক্ত দিয়ে লড়ে গেছে দেশের জন্য একটি সুন্দর লাল সবুজের পতাকার জন্য। এরপর পিছনে যে শক্তিটি কাজ করেছে তা হলো বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণ যা আজ শুনলে গায়ে কাটা দিয়ে উঠে।

Answered by taesha43
3

Answer:

Hey do you wanna be my friend

Aera is my classmate you know

Please do reply me

Similar questions